সিনেমা, নাটক, টেলিফিল্ম, বিজ্ঞাপনচিত্র অভিনয়ের সব মাধ্যমেই আলো কেড়েছেন জিনাত শানু স্বাগতা। গান গেয়েও জয় করেছেন দর্শক-শ্রোতার মন। তবে গত এক যুগ ধরে বড় পর্দায় দেখা যাচ্ছিল না এই অভিনেত্রীকে। সবশেষ ২০০৯ সালে ‘অশান্ত মন’ সিনেমায় বড় পর্দায় দেখা গেছে তাকে। মাঝে তার অভিনীত ‘ডুব সাঁতার’ এবং ‘ফিরো এসো বেহুলা’ সিনেমা দুটি মুক্তি পেলেও তা দেখা যায় টিভি পর্দায়।

দীর্ঘ এক যুগ পর বড় পর্দায় মুক্তি পেয়েছে স্বাগতা অভিনীত ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’। মুক্তিযুদ্ধের গল্প নিয়ে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন গুণী নির্মাতা নুরুল আলম আতিক। এতে এক বীরাঙ্গনা নারীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন স্বাগতা। পর্দায় ছোট্ট উপস্থিতিতেই বড় কিছু করে দেখিয়েছেন এই অভিনেত্রী। চমকে দিয়েছেন দর্শক-সমালোচককে।

সিনেমায় দেখা যায়, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষন-নির্যাতন করে। আর সেই দৃশ্যে চমৎকার, সাবলীল অভিনয় করে হলভর্তি দর্শকের করতালিতে মুগ্ধ হন অভিনেত্রী। সিনেমার স্বাগতার কণ্ঠে কোনো ডায়লগ ছিল না। ছিল শরীর, চোখ ও মুখের অদ্ভূত এক ভাষা। যে ভাষা ছুঁয়ে গেছে দর্শকের মন। চরিত্রটিকে স্বাগতা এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন অভিনয়কে ছাপিয়ে এটি হয়ে উঠেছিল বাস্তব এক রূপ! চরিত্রটি দর্শককে নিয়ে গেছে ৭১’-এর সেই নির্মমগুলোতে।

আর তাই তো সিনেমা শেষ হতেই সবাই এসে জড়িয়ে ধরে প্রশংসার জোয়ারে ভাসান এই অভিনেত্রীকে। দর্শকের এমন ভালোবাসায় স্বাগতা নিজেও আবেগে ভাসছেন।

স্বাগতা বলেন, ‘এই সিনেমায় আমার চরিত্রটি খুব ছোট্ট, খুব স্বল্প সময়ের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবাই এসে যখন আমাকে বলছে আমি অনেক ভালো অভিনয় করেছি তখন ভালোই লাগছে। মনটাও ভালো হয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে আমি ঠিকঠাক গল্পে সার্চ করতে পেরেছি। সিনেমায় আমার কোনো ডায়লগ নেই, মুভমেন্ট নেই। ফলে আমি একটু নার্ভাস ছিলাম। কিন্তু যখন সবাই এসে ব্যাপারটাই অ্যাপ্রিশিয়েট করেছে আমার ভালো লেগেছে।’

অভিনেত্রীর ভাষ্যে, ‘একজন আমাকে এসে বলেছে বাংলা সিনেমার ইতিহাসেই কেউ এমন চরিত্র করেনি। তখন মনে হয়েছে মানুষ মনোযোগ দিয়ে দেখেছে। এই মন্তব্যগুলোই আমাকে আবেগী করে তুলেছে। পরবর্তী সময়ের জন্য আন্তবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে। আমি আরও মন দিয়ে কাজ করব।’

স্বাগতা আরও বলেন, ‘আমার নিজেকে বড় পর্দায় দেখে মনে হয়েছে এই ব্যাপারটা আমাকে সুট করে। ভালো লাগে। নায়ক মান্না ভাই এই কথাটা আমাকে অনেকবার বলেছিলেন। এই সিনেমা দেখে আমি নিজেও সেটা নতুনভাবে উপলব্দি করেছি। আমার মনে হয়েছে চরিত্র হিসেবে আমি পর্দায় মানানসই। যদি ঠিকমতো সুযোগ পাই নিয়মিতেই বড় পর্দায় কাজ করতে চাই।’

আরআইজে