বোন নিউইয়র্ক সিটির কাউন্সিলর হওয়ায় গর্বিত পূর্ণিমা
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ইতিহাস গড়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শাহানা হানিফ। মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) নিউইয়র্ক সিটিতে হওয়া এই নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতেছেন তিনি। প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এবং প্রথম মুসলিম নারী কাউন্সিলর হিসেবে এ নির্বাচনে জিতে তিনি রেকর্ড গড়েছেন। শাহানার পৈত্রিক নিবাস চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে। তিনি ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা দিলারা হানিফ পূর্ণিমার ফুফাতো বোন।
আর ছোট বোনের এই বিজয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত পূর্ণিমা। বলেছেন, বোনের এমন সাফল্যে গর্বিত তিনি। আগামীতে বোন আরও বড় সাফল্য নিয়ে আসার জন্য জানিয়েছেন শুভ কামনা। বুধবার (৩ নভেম্বর) এই নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়। এদিন দুপুরে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
পূর্ণিমা বলেন, ‘সম্পূর্ণ নিজের যোগ্যতায় সে এটা অর্জন করেছে। এটা আমাদের পরিবারের জন্য অনেক গর্বের একটি বিষয়। অনেক আগে থেকেই সে এর সঙ্গে জড়িত ছিল। এ জন্য অনেক স্ট্রাগলও করেছে। অবশেষে সে এর ফল পেয়েছে। খুব কম বয়সে সে এটা অর্জন করেছে। যা আমাদের পুরো পরিবারের জন্য গর্বের একটি বিষয়।’
এই নায়িকার ভাষ্য, ‘আগে আমাদের পরিবারের, গ্রামের মানুষ আমাকে নিয়ে গর্ববোধ করত। এখন তার সঙ্গে আরেকজন যোগ হলো। চট্টগ্রামের মেয়ে হিসেবে তাকে নিয়েও সবাই গর্ব করবে এখন। যুক্তরাষ্ট্রে থেকে সে আরও বড় হোক, আরও উন্নত পজিশনে যাক এটাই আমরা আশা করব।’
পূর্ণিমা বলেন, ‘আমার বাবার নাম হানিফ, আবার আমার ফুফার নামও হানিফ। ফলে আমাদের দুজনের নামের সঙ্গেও তা রয়েছে। মজার বিষয় হলো এই হানিফ, ওই হানিফ নিয়ে অনেক ঝামেলাও হয়েছে। একবার ইউএস অ্যাম্বাসিতে তারা ভেবেছিল আমি আমার বাবার কাছে যেতে চাচ্ছি। পরে ওখানে ক্লিয়ার করতে হয়েছে আমার বাবা মারা গেছেন। উনি হচ্ছেন আমার ফুফা।’
পূর্ণিমা আরও জানান, শাহানা হানিফের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা যুক্তরাষ্ট্রেই। সর্বশেষ ২০১৬ সালে শাহানা বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার এই আসা ছিল মূলত বাংলা শিখতেই। আদর্শলিপি কিনে শিক্ষক রেখে প্রায় ৮-৯ মাস ধরে তিনি বাংলা শেখেন।
পূর্ণিমা নিজেও বোনকে বিভিন্ন সময় শুটিংয়ে নিয়ে যান। সেখানে গিয়েও বই-খাতা নিয়ে বাংলা বর্ণমালা লিখতেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ইতিহাস গড়া এই তরুণী। বাংলার শেখার জন্য দু’একবার নায়ক ফেরদৌসেরও সহায়তা নিয়েছেন তিনি। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের বাঙালি কমিউনিটির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতেই দেশ এসে এত পরিশ্রম করে বাংলা শিখে যান তিনি। এবার তারই ফল পেলেন। সম্মান বয়ে এনেছেন নিজের পরিবার এবং দেশের জন্য।
উল্লেখ্য, শাহানা হানিফ ব্রুকলিনের নির্বাচনী এলাকা ডিস্ট্রিক্ট-৩৯ থেকে ২৮ হাজার ২৫২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, যা মোট ভোটের ৮৯.৩ শতাংশ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ দলের প্রার্থী ব্রেট ওয়েনকফ পেয়েছেন মাত্র ২ হাজার ৫২২ ভোট। যা মোট ভোটের ৮ শতাংশ।
আরআইজে