তিনি যখন একটা ছবি আপলোড করতেন, সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ত অনুসারীরা। আবার কমেন্ট বক্সে উঠত নানারকম মন্তব্যের ঝড়। প্রশংসা আর নিন্দা তার দিকে ছুটে আসত বানের জলের মতোই। কিন্তু কোনো কিছুই গায়ে মাখতেন না তিনি। বরং নিজের মতো করেই জীবন ধারণ করতেন।

বলছি ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণির কথা। যিনি বর্তমানে রয়েছেন পুলিশি রিমান্ডে। মাদক মামলায় গ্রেফতারের পর তার রিমান্ড চলছে। তার মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি।

পরীমণিকে গ্রেফতার করা হয় গত ৪ আগস্ট। ওই দিন বিকালে তার বনানীর বাসায় অভিযান চালায় র‍্যাব। কিন্তু র‍্যাব সদস্যরা তার বাসার দরজায় হাজির হলেও সঙ্গে সঙ্গে পরী দরজা খোলেননি। তিনি তখন ফেসবুক লাইভে আসেন। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দাবি করে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

পরী জানান, তার বাসার দরজায় কারা যেন এসেছে। ভেতরে ঢোকার জন্য জোরাজুরি করছে। কিন্তু পরিচয় দিচ্ছে না। ওই অবস্থায় তিনি থানায় যোগাযোগ করেন, কিন্তু কোনো সাড়া পাননি। পাশাপাশি সাংবাদিকসহ শোবিজ অঙ্গনের সহকর্মীদেরও সহযোগিতা কামনা করেন।

টানা ৩১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ড লাইভে ছিলেন পরীমণি। প্রতিবেদনটি লেখার আগ পর্যন্ত সেই ভিডিও কেবল তার পেজ থেকেই ৩ কোটি ৯০ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে। এতে রিঅ্যাকশন পড়েছে ১ কোটি ৯ লাখের বেশি। আর মন্তব্য রয়েছে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ! ১ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি মানুষ ভিডিওটি শেয়ার করেছে। এছাড়া আরও বহু পেজ ও গ্রুপ থেকে ভিডিওটি আপলোড করা হয়েছে। সেগুলো হিসাব করলে ভিউ ছাড়াবে অন্তত ৫ কোটি!

দেশের কোনো তারকার লাইভ কিংবা ভিডিও এর আগে এতো বেশি রেসপন্স পায়নি। প্রশ্ন হলো, কোটি কোটি মানুষ পরীমণির ভিডিওটি দেখেছেন, তার অসহায় চিৎকার শুনেছেন, কিন্তু এগিয়ে এসেছেন কয়জন?

ভিডিওটির কমেন্টবক্সে গিয়ে দেখা যায়, সহযোগিতা কিংবা সহমর্মিতা তো দূরের কথা, উল্টো তাকে নিয়ে অশ্রাব্য সব মন্তব্যের উল্লাসে মেতেছেন সবাই। আবার অনেকে এই ভিডিও ব্যবহার করে ফেসবুক ও ইউটিউবভিত্তিক বাণিজ্যেও সরব হয়েছেন। দিনশেষে পরী রয়ে গেলেন একাই!

এদিকে গত জুন থেকে এই পর্যন্ত পরীমণির ফেসবুক পেজে অনুসারী বেড়েছে ২০ লাখের বেশি। আগেও তিনিই ছিলেন দেশের সর্বোচ্চ অনুসারীর অধিকারী সিনে তারকা। নায়ক কিংবা নায়িকা, আর কেউই তার ধারেকাছে ছিলেন না। বোট ক্লাবের ঘটনা এবং সম্প্রতি তার গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় নিজেকে আরও ছাড়িয়ে গেলেন এ নায়িকা। বর্তমানে পরীর ফেসবুকে ফলোয়ার রয়েছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি। জুনে এই সংখ্যাটা ছিল ১ কোটি ১৭ লাখের মতো।

কেআই/আরআইজে