ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মৌসুমী। দীর্ঘ সময়ের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে উপহার দিয়েছেন একের পর এক ব্যবসাসফল ছবি। যদিও বর্তমানে পর্দায় ব্যস্ততা কমেছে এই নায়িকার। পরিবার, স্বামী-সন্তানকেই সময় দিচ্ছেন তিনি। 

ব্যক্তিজীবনে মৌসুমী বিয়ে করেছেন চিত্রনায়ক ওমর সানীকে। তাদের সংসারে রয়েছে একটি কন্যা ও পুত্র সন্তান। তবে দুই সন্তানের কাউকেই সিনেমার জগতে প্রবেশ করতে দেননি এই দম্পতি। 

বড় ছেলে ফারদিন এহসান স্বাধীন ব্যবসা করছেন, ছোট মেয়ে ফাইজা বর্তমানে পড়াশোনা করছেন। অন্যদিকে মৌসুমী-ওমর সানী দুজনেই নিজেদের পরিবার ও ব্যবসার প্রতি মনোযোগী হয়েছেন। 

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনয়শিল্পীদের সন্তানের কেন চলচ্চিত্রে আসছেন না সে বিষয়ে কথা বলেছেন এই অভিনেত্রী। যেখানে তার কণ্ঠে শোনা গেছে আক্ষেপ। মৌসুমী মনে করেন, অভিনয়ের ক্ষেত্রে বাবা ছেলের জন্য রাজি হলেও মেয়েদের ক্ষেত্রে তেমনটা করেন না। বরং মেয়েদের বাধা দেন। 

মৌসুমী বলেন, ‘ছেলেদের অভিনয়ে আসার ব্যাপারে কারও তেমন কোনো সমস্যা নেই। সব নায়ক-নায়িকাদের দেখি তাদের ছেলেরা যদি সিনেমা করতে চায়, তাদেরকে না করে না। কিন্তু মেয়ে কখনো যদি নায়িকা হতে চায়, সেটা নিয়ে সবাই একটু অমত পোষণ করেন।’

ঢাকাই সিনেমার সোনালী সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন ববিতা, সুচরিতা, কবরী, রোজিনা, শাবানা, অঞ্জনা, নূতন, পারভীন সুলতানা দিতি, চম্পা। এই নায়িকাদের মধ্যে কেউ প্রয়াত হয়েছে বাকিরা প্রায় সবাই অভিনয় থেকে দূরে রয়েছেন। তবে তাদের কারো সন্তানদের অভিনয়ে দেখা যায়নি।

অন্যদিকে মান্না, জসীম, ইলিয়াস কাঞ্চন, রাজ্জাক, আলমগীর, জাফর ইকবাল, বুলবুল আহমেদ, রিয়াজ আহমেদ, ফেরদৌস- জনপ্রিয় এই অভিনেতাদের সন্তানদেরও রুপালি জগতের এই পেশাকে বাছাই করতে দেখা যায়নি।

নায়ক আলমগীরের কন্যা আঁখি আলমগীরের প্রসঙ্গ টেনে মৌসুমী বলেন, ‘আঁখি আলমগীর খুব সম্ভাবনাময় ছিল। তাকে কিন্তু ভাইয়া (আলমগীর) কাজ করতে দেননি। ও খুবই সুন্দর মিষ্টি দেখতে ছিল। সে সময় এক ঝাঁক নতুন মুখ আসছিল। কিন্তু আঁখিকে দেওয়া হয়নি। তাকে পেলে আমরা খুব ভালো একজন নায়িকা পেতাম।’

মৌসুমী আরও বলেন, ‘চম্পা আপার মেয়েও অনেক কিউট। চম্পা আপা তাকে কখনো নায়িকা হতে উৎসাহ দেয়নি। দেখা যায় যে, আমাদের অনেকেরই মেয়ে বাচ্চা আছে, যাদের আগ্রহ থাকার পরও সিনেমায় আসতে দেওয়া হয়নি। অন্যভাবে বড় করা হয়েছে, অন্যকাজে যেতে উৎসাহিত করেছে। কেন যেন আর্টিস্ট হওয়ার ব্যাপারে সবার বাঁধা।’

নিজের ছেলে ফারদিন এহসান স্বাধীনকে চলচ্চিত্রে অভিনয়ে উৎসাহিত করেছিলেন বলে জানান মৌসুমী। তবে অভিনয়ের চেয়ে নির্মাণের দিকে বেশি আগ্রহী ফারদিন কয়েকটি টেলিফিল্মও বানিয়েছেন। অন্যদিকে মেয়ে ফাইজার অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল না বলে জানান মৌসুমী।

এনএইচ