শিল্পী সমিতির নব-নির্বাচিতদের নিয়ে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের পরেই ‘কলঙ্কিত’ এক অধ্যায় রচিত হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি)। মঙ্গলবার (২৩) এপ্রিল সন্ধ্যায় এফডিসিতে এক সাক্ষাৎকারকে কেন্দ্র করে অভিনয়শিল্পীদের মারধরের শিকার হয়েছেন সাংবাদিকরা।

জানা যায়, এদিন শপথ গ্রহণ শেষে সমিতির অফিসে খবরের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক মিঠুন আল মামুন সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন ময়ূরীর মেয়ের। এসময় অভিনেতা শিবা শানু এই সাংবাদিককে বেরিয়ে যেতে বলেন। না যেতে চাইলে তাকে ধাক্কা দিয়ে অফিসে থেকে বের করে দেন। এসময় কয়েকজন সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত হয়ে শিবা শানুকে থামাতে চান। 

তখনই শিল্পী সমিতির আরেক নেতা চিত্রনায়ক জয় চৌধুরী ‘মার মার’ বলে তেড়ে যান সাংবাদিকদের দিকে। শুরু হয় সাংবাদিক ও শিল্পীদের মধ্যে তুমুল মারামারি। এরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পুরো এফডিসি পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। মারামারিতে রক্তাক্ত হন কয়েকজন সাংবাদিক।  

উপস্থিত সাংবাদিকদের অনেকেই দাবি করেন, এই হামলায় সরাসরি জড়িত ছিলেন চিত্রনায়ক জয় চৌধুরী, অভিনেতা শিবা শানু ও আলেকজান্ডার বো। কেউ কেউ শিল্পী সমিতির সহ-সভাপতি চিত্রনায়ক রুবেলকেও হামলার জন্য দায়ী করেছেন। তাদের দাবি, ঘটনার সময় রুবেলও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। 

এ বিষয়ে রুবেলের সঙ্গে কথা হয়েছে ঢাকা পোস্ট-এর। হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি সরাসরিই অস্বীকার করেছেন এই অভিনেতা। রুবেলের দাবি, হামলায় তিনি জড়িত ছিলেন না। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে অভিনয়শিল্পীদের গণ্ডগোলের কথা শুনে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন। 

রুবেল বলেন, ‘আমি আপনাদেরকে শতভাগ নিশ্চিত করে বলতে পারি, সাংবাদিকদের ওপর হামলায় আমি জড়িত ছিলাম না। শপথগ্রহণ শেষে যখন আমি জানতে পারি, অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে সাংবাদিকদের গণ্ডগোল চলছে, তখন আমি সেখানে ছুটে যাই। ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। তাই বলে, আমি কারো ওপর হামলা চালাইনি।’

এই নায়ক আরও বলেন, ‘এদিন এফডিসিতে কয়েকশত ক্যামেরা ছিল। সকল সাংবাদিক ভাইদের কাছেই মোবাইল বা ক্যামেরা ছিল। কোনো ভিডিও ফুটেজেও দেখাতে পারবেন না যেখানে নায়ক রুবেল কারো ওপর হামলা করছে বা মারধর করেছে।’

এদিকে এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এখনও আহতদের কোনো খোঁজ নেয়নি শিল্পী সমিতি। এ বিষয়ে রুবেলের ভাষ্য, ‘আমরা সাংবাদিকদের বলেছি, যারা আহত হয়েছেন তারা কোন হাসপাতালে ভর্তি আছেন সেসব তথ্য জানাতে। কিন্তু আমাদেরকে এখনও নির্দিষ্ট করে কোনো তথ্য জানানো হয়নি। যদি সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট করে তথ্যগুলো জানানো হয়, তাহলে শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে অবশ্যই খোঁজ নেওয়া হবে, তাদের পাশে দাঁড়ানো হবে।’

সবশেষ এই ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে রুবেল বলেন, ‘পুরো ঘটনার জন্যই আমরা মর্মাহত। দিনশেষে আমরা একটা পরিবারের মতো। পরিবারে যখন এ ধরণের কোনো সমস্যা হয়, তখন আমরা সকলে একসঙ্গে বসেই সমাধান করার চেষ্টা করি। এবারও সেটাই করব।’

এনএইচ