অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর মৃত্যুর পর তার ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যান প্রেমিক জিয়াউদ্দিন রুফি। এ ঘটনায় রুফিকে গ্রেফতারের পর তার থেকে মোবাইল ফোন দুটি উদ্ধার করেছে র‌্যাব। 

যেখানে হিমুর সঙ্গে রুফির সম্পর্কের প্রমাণ মিলেছে। সেইসঙ্গে হিমুর সঙ্গে মেসেঞ্জার ও সামাজিক মাধ্যমে কারা যোগাযোগ রাখতেন সেসব বিষয়ও র‌্যাবের নজরে এসেছে। 

এ বিষয়ে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘কিছু ব্যক্তি যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় পপুলার, যারা বিভিন্ন সময়ে নিজেদের গুণী ও ভালো মানুষ দাবি করেন; তাদের সঙ্গে যোগাযোগের বিভিন্ন সূত্র আমরা পেয়েছি। যেহেতু এটা আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা। তাই তাদের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

র‌্যাব আরও জানায়, অভিনেত্রী হিমু বিগো লাইভ নামে একটি অনলাইন জুয়ায় আশক্ত ছিলেন। গত ৪ মাসে প্রায় ২১ লাখ টাকাসহ ২-৩ বছরে অন্তত ৪০ লাখ টাকা খুইয়েছেন। এর আগেও প্রেমিক রুফিকে ৩-৪ বার আত্মহত্যা করার হুমকি দিয়েছিলেন।

জিয়াউদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় জিয়া হিমুর উত্তরার বাসায় যায়। পরে অনলাইন জুয়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভিকটিম হিমু ও জিয়াউদ্দিনের মধ্যে বাগবিতণ্ডার একপর্যায় হিমু ভাঙচুর করে। হিমু বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে রুমের বাইরে থেকে একটি মই এনে রুমে ঢুকে। রুমের সিলিং ফ্যান লাগানোর হুকে আগে থেকেই বেঁধে রাখা প্লাস্টিকের রশিতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করবে বলে তাকে জানায়। 

তবে জিয়াউদ্দিন র‍্যাবকে জানায়, হিমু আগেও ৩/৪ বার আত্মহত্যা করবে বলে জানালেও সে পরে আত্মহত্যা করেনি। এবারও আগের মতো আত্মহত্যা করার ব্যাপারে জানালে সে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু কিছুক্ষণ পর সে দেখতে পারে হিমু সত্যি সত্যি গলায় ফাঁস দিয়েছে। তখন সে হিমুকে নামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এসময় সে পাশের রুমে থাকা হিমুর মেকআপ আর্টিস্ট মিহিরকে ডেকে আনে। পরে মিহির রান্নাঘর থেকে একটি বটি এনে রশি কেটে তাকে নিচে নামায়।

পরে জিয়াউদ্দিন, বাসার দারোয়ান এবং মিহিরের সহায়তায় হিমুকে বাসা থেকে রাজধানীর উত্তরার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় হিমুর প্রেমিক জিয়াউদ্দিন রুফিকে গ্রেফতারের পর কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।

এনএইচ