নেই কোনো রক্তের সম্পর্ক, না আছে চেনাজানা। পর্দায় তার অভিনয় দেখে ভক্ত বনে যান। ভালোবেসে প্রিয় অভিনেতাকে ‘মামা’ বলেও সম্বোধন করেন। বলা হচ্ছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ফার্নিচার ব্যবসায়ী দুলাল মিয়ার কথা। তিনি সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের মীরহাটি এলাকার আবদুর সাত্তার মিয়ার ছেলে। ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজলের অন্ধ ভক্ত তিনি।

জানা গেছে, ডিপজল অভিনীত ‘দাদীমা’ ছবিটি দেখার পর তার প্রতি ভালোবাসা জাগে দুলালের। এরপর নিয়মিত ডিপজলের ছবি দেখা শুরু করেন। একসময় নিজের অজান্তেই ডিপজলের একজন ভক্ত হয়ে যান দুলাল। সেই ভালোবাসা থেকেই প্রিয় মামার জন্য নিজ হাতে তৈরি করেছেন বিশাল রাজকীয় খাট। যেটি বানাতে খরচ হয়েছে ২৫ লাখ টাকা। সময় লেগেছে ৩ বছর ৮ মাস।

দুলাল মিয়া বলেন, ‘ডিপজল মামার প্রতি ভালোবাসার কারণে ওনাকে নিজের হাতে বানিয়ে ভিন্ন কিছু উপহার দেওয়ার ইচ্ছা হয়। তাই ধীরে ধীরে দীর্ঘ ৩ বছর ৮ মাসে তাজমহলের ডিজাইনে খাটটি তৈরি করেছি। সাড়ে ৮ ফুট দৈর্ঘ্য এবং সাড়ে ৬ ফুট প্রস্থের খাটটি তৈরি করতে আসল আকাশি কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। এটির নকশায় ব্যবহার করতে হয়েছে ৩৮৭টি গোলাপ ফুলের ডিজাইন ও বিভিন্ন অংশ সংযোগ করতে ব্যবহার হয় ৮০টি ইস্ক্রু । যেহেতু বেশিরভাগ সময়ে ব্যবসার কারণে আমি দোকানে থাকি, তাই খাটটি চোখের সামনে রাখতে দোকানেই রেখেছি।’

ডিপজলের জন্য দুলাল মিয়ার এই রাজকীয় খাট তৈরির খবর ছড়িয়ে পড়তেই প্রতিদিন স্থানীয় ও আশপাশের এলাকার লোকজন ভিড় করছেন তার দোকানে। ছবি তুলছেন, খুঁটিনাটি জানতে প্রশ্ন করছেন তাকে। 

স্থানীয় বাসিন্দা মো. জয়নাল বলেন, ‘দুলাল আমাদের এলাকার ছোট ভাই। অভিনেতা ডিপজলকে মামা বলে ডাকেন। তার প্রতিটি সিনেমা দুলাল দেখেছেন। ডিপজলের কোনো পোস্টার পেলেই দোকানে এনে লাগাতেন। ডিপজলের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এই খাট তৈরি করেছে। দুলালের এই খাটটি ডিপজল গ্রহণ করলে তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে।’

পাপন নামের আরেক যুবক বলেন, যেকোনো জায়গায় ডিপজলের ছবির খবর পেলেই সেখানে চলে যেতেন দুলাল। সে ডিপজলের অন্ধ ভক্ত। কারো সঙ্গে কথা বললেও ডিপজলের শুধু প্রশংসাই করেন। আর এই খাটটি অনেকটা গোপনেই তৈরি করেছে সে, কাউকে সামনে যেতে দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে সবার কৌতূহল ছিল।’

দুলালের বড় ভাই মোহাম্মদ হুমায়ুন বলেন, ‘আমার ছোট ভাই দীর্ঘ তিন বছর ৮ মাসে এ খাট ডিপজলের জন্যে তৈরি করেছেন। খাটটি অনেক শখ করে বানিয়েছে। এ খাটের উছিলায় যেন ডিপজলের সঙ্গে দুলালের দেখা হয় এবং খাটটি যেন তিনি উপহার হিসেবে গ্রহণ করেন, এটাই চাই।’

বাহাদুর আলম/কেএইচটি