গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে ‘ইনস্টিটিউট অব পাবলিক পলিসি অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি রিসার্চ’ থেকে একটি পুরস্কার পেয়েছেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়ক জায়েদ খান। 

সম্প্রীতি, শান্তি ও নিজ নিজ স্থানে টেকসই উন্নয়ন নিয়ে কাজ করেন, এমন ব্যক্তিদের ‘দ্য হিউম্যানিটেরিয়ান প্লাটিনাম লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করে প্রতিষ্ঠানটি। বিশ্বের ৪০ জন নাগরিকের মধ্যে সে তালিকায় ছিলেন জায়েদ খান নিজেও।

নিজের এই অর্জনকে জীবনের সেরা অর্জন বলে মত দেন এ চিত্রনায়ক। তিনি বলেন, ‘আমার জীবনের সেরা অর্জন এটি। দেশকেই আমি অর্জনটি উৎসর্গ করলাম। দুই বছরের জন্য আমাদের সবাইকে পিস অ্যাম্বাসেডর হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সমাজের শান্তির জন্য আমরা কাজ করব।’

জায়েদ খানের এই অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তির খবর বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়। জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে বলে অনেক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে এর সত্যতা যাচাই-বাছাই শুরু করে সমসাময়িক আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কাজ করা পোর্টাল ব্লিটজ। বিষয়টি জানতে জাতিসংঘ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন তারা।

ব্লিটজ জানায়, জায়েদ খানকে পুরস্কৃত করা ‘ইনস্টিটিউট অব পাবলিক পলিসি অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি রিসার্চ’ জাতিসংঘের অনুমোদিত কোনো সংস্থা নয়। মূলত জাতিসংঘের একটি হলরুম ভাড়া করে বিভিন্নজনকে পুরস্কৃত করে এ প্রতিষ্ঠান। কিছু পেশাদার ব্যক্তির উদ্যোগে ২০২২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর এই সংগঠনের নামে একটি ডোমেইন কিনে পরে ওয়েবসাইট চালু করা হয়।

এরপরই জায়েদ খানের এই পুরস্কার প্রাপ্তি নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকেই অভিনেতাকে নিয়ে সমালোচনায় মেতে ওঠেন। তার এই অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তিকে কটাক্ষ করেন।

বিষয়টি নজরে এসেছে জায়েদের নিজেরও। তিনি দেশের মানুষের এমন প্রতিক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ মনোভাব প্রকাশ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সঙ্গে ফোনালাপে জায়েদ খান বলেন, ‘মানুষ তো অনেক কিছু বলবে। ইউনূসের অ্যাওয়ার্ডের সময়ও বলেছিল যে, কিনে নিয়ে এসেছে। ওরা যে ওয়েবসাইটে ৪০ জনের নাম প্রকাশ করেছে সেখানে দুই দেশের রানি, রাষ্ট্রদূত, নিইজার্সির পুলিশ প্রধান, এখানের মেয়রের নাম রয়েছে। অনুষ্ঠানে জো বাইডেনের বক্তব্য পড়ে শোনানো হয়েছে। জাতিসংঘের হলরুম ভাড়া নিয়ে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সেখানে লোকদের ঢোকানো হয়েছে। ‘দ্য হিউম্যানিটেরিয়ান প্লাটিনাম লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়েছে। এরা শ্রেষ্ঠ নায়ক না। এখানে বিভিন্ন লেখক, রাষ্ট্রদূতরাও রয়েছে।’

এরপর প্রশ্ন ছুঁড়ে জায়েদ বলেন, ‘আমি কি কোথাও বলেছি যে এটা সরাসরি জাতিসংঘের পুরস্কার? এখানে বিভিন্ন ভালো কাজের জন্য সম্মান প্রদান করা হয়েছে।’ 

দেশের মানুষের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে এই নায়ক বলেন, ‘বাংলাদেশের একটা ছেলে পুরস্কার পেয়েছে, এটাতে দেশের মানুষের গর্ব হওয়ার কথা, খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু সেটাকে নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা, এত নেগেটিভ কথাবার্তা মানুষের...।’

একটু থেমে জায়েদ বললেন, ‘আমি এগুলো গায়ে মাখি না। কিন্তু কতোটা ছোট জাতি, তোরা তো আরও গর্ব করবি যে, ওখানে বলা হয়েছে জায়েদ খান ফিল্ম অ্যাক্টর বাংলাদেশ। আমি তাদের ভিডিও দিলাম। ভিডিওতে দেখা গেল আমাকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হচ্ছে। তারপরও এ ধরনের কথাবার্তা বলার কোনো ভ্যালু আছে?’

এনএইচ