কয়েক দিন আগে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেল হিন্দি সিনেমা ‘পাঠান’। দর্শক চাহিদা বিবেচনায় রেখে ছবিটি আমদানি করা হয়। এবার বাংলাদেশি সিনেমা দেখবে হিন্দিভাষী দর্শকেরা। মুম্বাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এনফিক্সস প্রাইভেট লিমিটেড এরই মধ্যে বাংলাদেশের ছয়টি ছবির হিন্দি ডাবিং ডিজিটাল স্বত্ব কিনে নিয়েছে।

সংবাদমাধ্যমকে খবরটি নিশ্চিত করেন এনফিক্সস প্রাইভেট লিমিটেডের বাংলাদেশ প্রতিনিধি চলচ্চিত্র পরিচালক ফয়সাল আহমেদ। হিন্দি ডাবিং স্বত্ব কেনা ছবিগুলো হলো ‘ঢাকা অ্যাটাক’, ‘মিশন এক্সট্রিম’, ‘মিশন এক্সট্রিম ২’, ‘শান’, ‘তালাশ’ ও ‘লোকাল’। এছাড়া আরও কিছু ছবি নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান এ প্রতিনিধি।  

‘মিশন এক্সট্রিম’ ছবির ট্রেলার দেখে বাংলাদেশি সিনেমা নিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে এনফিক্সস। ফয়সাল বলেন, “আমাদের ‘মিশন এক্সট্রিম’ ছবিটি দুবাইতে মুক্তি পেয়েছিল। ওই সময় কোনোভাবে তারা ছবিটির ট্রেলার দেখেছিল। এরপর আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা বাংলাদেশে আসে। বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের এখানকার কয়েকজন প্রযোজকের মিটিং হয়। এরপর এখান থেকে ছবি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে তারা।”

ভারতের ‘আলট্রা ইন্ডিয়া’ নামে একটি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে গত মার্চে ‘ঢাকা অ্যাটাক’ হিন্দি ডাবিংয়ে মুক্তি পেয়েছে। ইতোমধ্যে দর্শক ভিউ ৬০ লাখ পার হয়ে গেছে। বাকি ছবিগুলো ডাব করে মুক্তির প্রস্তুতি চলছে, জানালেন বাংলাদেশের এই প্রতিনিধি। তিনি বলেন, ‘শুধু আলট্রা ইন্ডিয়ায় নয়, অ্যামাজন প্রাইমেও আমাদের সিনেমা একই সঙ্গে বাংলা ও হিন্দি ডাবিংয়ে মুক্তির প্রক্রিয়া চলছে।’

এটি দেশীয় সিনেমার নতুন বাজার খুলে দিতে পারে বলে মনে করেন ফয়সাল আহমেদ। তার কথায়, ‘বাংলা সিনেমার জন্য এটি গুড সাইন। বাংলা সিনেমার জন্য সম্পূর্ণ নতুন একটি ক্ষেত্র তৈরি হলো। এতে প্রযোজকের বাড়তি আয়ও হবে। তারা ছবিগুলোর মূল্যও ভালো দিচ্ছে। এমনও দেখলাম, হল থেকে কয়েকটি ছবির যে টাকা এসেছে, এখান থেকে তারচেয়ে বেশি টাকা পেয়েছে ছবিগুলো। ঠিকমতো বিষয়টি ক্যারি করতে পারলে ভারতের মতো বিশাল হিন্দিভাষীর দেশে আমাদের সিনেমার বড় বাজার তৈরি হতে পারে।’

সাধারণত দক্ষিণী সিনেমার হিন্দি ডাবিং স্বত্ব কিনে থাকে এনফিক্সস প্রাইভেট লিমিটেড। হঠাৎ বাংলাদেশি সিনেমার প্রতি আগ্রহী হলেন কেন? প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিতিন কুমার বলেন, ‘বাংলাদেশি সিনেমাকে এখানে (ভারত) এক্সপ্লোর করার জন্য কাজটি করছি আমরা। এ সময়ের কিছু কিছু সিনেমা দেখে মনে হয়েছে বাংলা সিনেমার একটি প্রমিজিং ব্যাপার আছে। তাছাড়া এখানে হিন্দিভাষীর বিশাল দর্শক। যদি বাংলাদেশি সিনেমা হিন্দি ডাবিংয়ে দর্শক ধরতে পারে, তাহলে এখানে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশি সিনেমার ভালো ব্যবসা সম্ভব।’

হিন্দিতে বাংলাদেশি সিনেমা ডাবিং করে চালানোর এ প্রক্রিয়াকে বেশ ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, এতে করে বাংলাদেশি সিনেমার আয় বাড়বে পাশাপাশি দেশের বাইরে আমাদের শিল্পীদের পরিচিতি তৈরি হবে।

কেএইচটি