এবার মৌসুমীকে নিয়ে মুখ খুললেন আজহারী
সম্প্রতি অভিনয়ের ৩০ বছর পূর্ণ করেছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমী। এ উপলক্ষ্যে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের ‘১৩টি প্রশ্ন’ শিরোনামে অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে নিজের কিছু অন্তিম ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেন তিনি। এরপর বিষয়টি ঘিরে চারদিকে চর্চা শুরু হয়।
পরবর্তীতে এ প্রসঙ্গে কথা বলেন ইসলামি বক্তা ও গবেষক শায়খ আহমাদুল্লাহ। এবার মৌসুমীকে নিয়ে মুখ খুললেন আরেক ইসলামি চিন্তাবিদ ও বিশ্লেষক মিজানুর রহমান আজহারী। গত (মঙ্গলবার) রাত ১০টায় ‘লাইট আপন লাইট’ (দ্বিতীয় পর্ব) শিরোনামে ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠানের একটি অংশে অভিনেত্রীকে নিয়ে কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
এ সময় মৌসুমীর নাম উল্লেখ না করে আজহারী বলেন, ‘আমরা সম্প্রতি বাংলাদেশের একজন চিত্রনায়িকার আকুতির কথা শুনেছি। তিনি বলেছেন যে, আমার মৃত্যুর পরে আমার মুভিগুলো, ভিডিও ক্লিপসগুলো সবাই ডিলিট করে দেবেন।’
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘তো সারা জীবন এই পাপের পথে চলে, এ জাতীয় কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকে শেষ জীবনে এটা বললে কি আসলে ডিলিট হয়? এই সোশ্যাল মিডিয়ার জগতে নিরঙ্কুশ স্বাধীনতা বলতে কিছু আছে, আমি চাইলেই কি ভিডিওগুলো ডিলিট করা যাবে? যাবে না, তাই আমরা শেষ সময়ে না বুঝে, শালীনতার পথে, সত্যের পথে, কল্যাণের পথে এখন থেকেই যেন থাকি। সময় চলে যাওয়ার পর যেন আমরা না বুঝি।’
এ বক্তা আরও বলেন, ‘আমাদের চিত্রনায়িকা যে বোন এ আকুতি পেশ করেছেন, আসলে কি তার পক্ষে গোটাবিশ্বে দর্শক-শ্রোতাদের কাছে তার মুভি, ভিডিওগুলোর যে সিন আছে, সেগুলো কি ডিলিট করা সম্ভব? দেখা যাবে, মৃত্যুর পরও সেগুলো চলতে থাকবে।’
মৌসুমীর এই অনুধাবন থেকে অন্য নায়িকাদের জন্য শিক্ষার বিষয় আছে জানিয়ে ইসলামি এ চিন্তাবিদ বলেন, ‘এ বোনের (মৌসুমী) কথা শুনে, রুপালি পর্দার অন্যান্য বোনেরা, আমরাও যেন একটু উপলদ্ধি করি, আমরা কোন পথে হাঁটছি? আমার কাজ, ক্যারিয়ার কি আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে আছে? এটা দিয়ে কি আসলে গণমানুষের কল্যাণ হচ্ছে? নাকি অশ্লীলতার দিকে ধাবিত হচ্ছি? একটু চিন্তা করি আমরা। একটু চিন্তা করি আমাদের লাইফস্টাইল সম্পর্কে।’
এ সময় কোরআনের আলোকে ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “মানুষের হৃদয়ে একটি নুর থাকে আর কুরআন একটি নুর, দুই নুর মিললেই নুরুন আলা নুর (আলোর ওপর আলো)। এটা নিয়েই আমাদের লাইভের নামকরণ ‘লাইট আপন লাইট’। প্রত্যেকের মধ্যে সেই সত্যের অংশ আছে। একটু চিন্তা করলেই বেরিয়ে আসবে। সঠিক উত্তর পেয়ে যাবেন। চলচ্চিত্র জগতের পথটা কেমন। তবে শালীনভাবে কোনো কিছু উপস্থাপন করলে ভিন্নকথা। অশ্লীলতার দিকে ধাবিত করে এমন চলচ্চিত্র, এগুলোর জন্য আমরা শেষ বিচারের দিন কী জবাব রেডি করেছি।”
এ পর্যায়ে আলোচনার শেষ দিকে তিনি বলেন, আমাদের যে বোন সোশ্যাল মিডিয়াতে আকুতি পেশ করেছেন, মৃত্যুর পর তার লাশ যেন কেউ না দেখে। মৃত্যুর পর তার ভিডিওগুলো যেন ডিলিট করে দেওয়া হয়। তার (মৌসুমী) দিকে খেয়াল করে অন্যান্য বোনরা তাদের লাইফস্টাইল নিয়ে একটু ভেবে দেখি। আমাদের দেশের অনেক বোনকে দেখেছি এবং ভারত ও পশ্চিমা বিশ্বের অনেক বোনকে দেখেছি, তারা ইসলামের পথে ফিরে এসেছে। আমরা তাদের স্বাগত জানাই।’
উল্লেখ্য, ঘণ্টাব্যাপী এই লাইভের আলোচনা পর্বে নানান বিষয়ে কথা বলেছেন মিজানুর রহমান আজহারী। সেখানে প্রায় ৩ মিনিটের মতো স্থান পায় চিত্রনায়িকা মৌসুমী বিষয়ক আলোচনা।
কেএইচটি