‘এই কয়দিন তোমার খবর ঠিকমতো নেওয়া হয়নি বাবা’
দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। সমানতালে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন দুই দেশে। ঢাকা-কলকাতা আসা-যাওয়ার মধ্যেই সময় কাটছে। ‘পদাতিক’ ছবির শুটিং নিয়ে রাজ্যের ব্যস্ততা অভিনেতার। তারপরও উঁকি দেয় হারানোর ব্যথা। মাঝে মাঝে চিৎকার করে কেঁদে ওঠেন। বাবা হারানোর শোক এখনো ভুলতে পারছেন না চঞ্চল।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) ফেসবুক স্ট্যাটাসে আবারও বাবা রাধা গোবিন্দ চৌধুরীকে নিয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন অভিনেতা। তিনি লেখেন, ‘মাত্র দুই তিন দিন কথা না হলে বাবা টেনশনে পড়ে যেতেন। কত রাগ, কত অভিমান! সেখানে দুই মাস পার হয়ে গেল। কথা নাই, দেখা নাই। নাই কোনো রাগ-অভিমান।’
বিজ্ঞাপন
শোক সামলে ওঠার শক্তি খুঁজে পান বাবার কাছ থেকেই। চঞ্চলের কথায়, ‘বাবা চলে যাওয়ার শোক কাটিয়ে উঠে কীভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরব, সেটা জানা ছিল না। বাবা নিজেই মনে হয় পরপার থেকে সেই সমাধান করে দিয়েছেন। শেষ দুই মাসে কাজ নিয়ে ব্যস্ততা এত বেশি ছিল, যা আমার দুই যুগের অভিনয় অভিজ্ঞতাকে হার মানিয়েছে।’
শুটিং ব্যস্ততার কথা উল্লেখ করে তার সংযোজন, ‘কলকাতা, দিল্লি ,মুম্বাই, পুনে ‘পদাতিক’-এর শুটিং, ঢাকার শুটিং। যে ব্যস্ততা শুরু হয়ে গিয়েছিল বাবা চলে যাবার দুই তিন দিন পর থেকেই। ভেবেছিলাম কাজের ব্যস্ততা আমাকে বাবার শোক কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। কখনো কখনো কাজের চাপে বাবা যে নেই তা ভুলেই গেছি। আবার কলকাতা বা মুম্বাইয়ের হোটেলে গভীর রাতে বাবার কথা মনে করে একা একা চিৎকার করে কেঁদেছি। বাবার কাছ থেকে শক্তি নিয়ে কাজগুলো শেষ করার চেষ্টা করেছি।’
বাবার মৃত্যুর পর প্রথমবার কলকাতা যাবার স্মৃতি রোমান্থন করেন চঞ্চল। তার ভাষায়, “পদাতিক’ সিনেমার শুটিং করতে প্রথমবার যেদিন কলকাতা যাই। ফ্লাই করার পর যখন প্লেনটা মেঘের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছিল, বিশাল আকাশ, মাটি থেকে দূরত্ব বাড়ছে ক্রমাগত। হঠাৎ মনে হলো, বাবা তো মনে হয় এই বিশাল আকাশেই হারিয়ে গেছে। শূন্য আকাশে যতদুর চোখ যায় বাবাকে খুঁজছি। না পেয়ে ঝাপসা চোখে মাথা নিচু করে চোখ বন্ধ করে শুধু কেঁদেছি।
ধীরে ধীরে ব্যস্ততা কমছে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পুরোনো স্মৃতিতে ভেসে বেড়ানোর প্রবণতা। অভিনেতার মূল্যায়ন, “আত্মীয়-পরিজন ছেড়ে এই দুই মাসের ব্যস্ততাগুলো একটু একটু কমতে শুরু করেছে। শরীরটাও ক্লান্ত, অবসন্ন। প্রতিদিনের তুলনায় গতকাল একটু আগেই বাসায় ফিরেছিলাম। ঘর ভর্তি বাবার ছবি বাঁধানো। মন ভরে বাবাকে দেখছিলাম আর বাবাকে বলছিলাম, ‘এই কয়দিন তোমার খবর ঠিকমতো নেওয়া হয়নি বাবা।”
প্রসঙ্গত, গেল বছরের ২৭ ডিসেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর বাবা রাধা গোবিন্দ চৌধুরী। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় তার লেখায় উঠে এসেছে বাবাকে নিয়ে আবেগঘন কথাবার্তা। গতকালও স্মরণ করলেন বাবাকে। বর্তমানে কলকাতার ছবি ‘পদাতিক’-এর শুটিং নিয়ে বেশ ব্যস্ত অভিনেতা। এতে কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা মৃণাল সেনের ভূমিকায় অভিনয় করছেন তিনি।
মাত্র দুই তিন দিন কথা না হলে বাবা টেনশনে পড়ে যেতেন।কত রাগ,কত অভিমান!! সেখানে দুই মাস পার হয়ে গেল… কথা নাই,দেখা...
Posted by Chanchal Chowdhury on Thursday, March 2, 2023
কেএইচটি