মায়ের হাসিটুকু যেন আমৃত্যু থেকে যায় : চঞ্চল চৌধুরী
কলকাতায় ‘পদাতিক’ সিনেমার শুটিং নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত চঞ্চল চৌধুরী। মাঝে একবার দেশে এসেছিলেন তারপর আবার উড়াল দিয়েছেন পর্দার মৃণাল সেন হতে। কলকাতায় থাকলেও তার মনে পড়ে আছে বাংলাদেশে। শত ব্যস্ততার ভিড়ে মায়ের হাসিটুকু তার সকল ক্লান্তি দূর করে দেয়।
গতকাল (শুক্রবার) মা নমিতা রানীর সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলার ছবি শেয়ার করে ফেসবুকে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন চঞ্চল। তিনি লেখেন, ‘অনেকদিন পর মায়ের মুখে এমন হাসি দেখে প্রাণটা জুড়িয়ে গেল। বাবা চলে যাওয়ার পর আমরা সবাই যখন শোকে ভেঙে পড়ি, উল্টো আমাদের মা-ই আমাদের বুকের কাছে টেনে নিয়ে সান্ত্বনা দেয়।’
বিজ্ঞাপন
মাঝখানে দেশে এলেও বেশিদিন থাকতে পারেননি। নেপথ্যে ‘পদাতিক’-এর শুটিং। তার কথায়, “সৃজিত মুখার্জির ‘পদাতিক’-এর শুটিং এর কারণে মায়ের কাছে বেশিদিন থাকতেও পারিনি। কলকাতা চলে আসতে হয়েছে। মাঝে মাঝে ভিডিও কলে কথা বলি সবার সাথে, মায়ের সাথে। শক্তি আর সান্ত্বনা খুঁজে বেড়াই। কাজ করে চলি।”
কিছুদিন আগে প্রয়াত হয়েছেন বাবা রাধা গোবিন্দ চৌধুরী। কিছুতেই ভুলতে পারছেন তাকে। ছেলে চঞ্চলের অনুভূতি, ‘এমনভাবে কাজের ভেতর ডুবে থাকি যে, মাঝেমধ্যে ঘোর কাটে না। মনে হয় দেশে ফিরলেই তো বাবাকে দেখতে পাব। চোখের কোণায় জল জমে, আবার বাস্তবে ফিরে আসি।’
ভিডিও কলে কথা বলার ক্ষেত্রে বাবার চেয়ে মাকেই এগিয়ে রাখছেন অভিনেতা। তার স্মৃতিচারণায়, ‘মা খুব সুন্দর করে ভিডিও কলে কথা বলতে পারে। মানে ফ্রেমিংটা খুব সুন্দর হয়। আর বাবা ছিল ঠিক বিপরীত, ফ্রেমিং খুব বাজে। ভিডিও কলে বাবার পুরো চেহারাটা কখনও দেখা হয়নি। কেমনভাবে যেন ফোনটা মুখের সামনে ধরত, হয় শুধু কপাল, নাহয় শুধু থুতনি দেখা যেত।’
বাবার মৃত্যুর পর বাসায় মা এখন একা। মাঝেমধ্যে আত্মীয়-স্বজনরা দেখতে আসেন। এদিন যেমন দেখতে এলেন অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি, তার স্বামী নির্মাতা বৃন্দাবন দাস এবং দুই ছেলে দিব্য ও সৌম্য।
চঞ্চলের চাওয়া, ‘আজ সন্ধ্যায় মাকে দেখতে এসেছে খুশি, বৃন্দাবনদা, দিব্য ও সৌম্য। মা সবার সাথে গল্পগুজবে, আনন্দে মেতে উঠেছে। মায়েদের মুখের হাসি মনে হয় সকল সন্তানের অন্তরেই শান্তির পরশ বুলিয়ে দেয়। মায়ের কপাল থেকে লাল টকটকে সিঁদুর মুছে গেছে সত্য তবে হাসিটুকু যেন আমৃত্যু থেকে যায়।’