কাবিননামার প্রেশারে যুবক বৃদ্ধ হয়ে যায় : আসিফ
সাম্প্রতিক বিষয়াদি নিয়ে বরাবরই সরব থাকেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর। দিন কয়েক আগে বিয়ে করিয়েছেন বড় ছেলে রণকে। এবার তাই আলোচনার বিষয়বস্তু বিবাহ সম্পর্কিত। ছেলেদের বিয়ে ভাবনা, কাবিননামা, নারী নির্যাতন মামলা— সবগুলো বিষয়েই আলাদা করে কথা বলেছেন তিনি। বিস্তারিত উঠে এসেছে তার ফেসবুক পোস্টে।
ছেলের বিয়ে উপলক্ষ্যে তিনি নিজেই এখন আছেন নব যৌবনে। নব যৌবনা আসিফ যেন শুনতে পাচ্ছেন তরুণ প্রজন্মের হৃদয়ধ্বনি। ছেলেদের বিয়ের বেলায় কী কী সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় জানালেন এই শিল্পী। তিনি বলেন, ‘প্রথম প্রশ্ন থাকে ছেলে ইনকাম করে কিনা! ফ্যামিলি স্ট্যাটাসও একটা ফ্যাক্টর। যে মেয়েটা প্রাপ্তবয়স্ক তার মতামতও জড়িয়ে থাকে সেইম ফালতু প্রশ্নে। শরীয়ত মোতাবেক বিয়ের পদ্ধতি আদৌ মানা হয় কিনা জানিনা, তবে কাবিননামার ক্যারিকেচারে উসুলের প্রেশারটা পাত্র নামের বিবাহ উন্মুখ ছেলেটাকে হতাশ করবেই।’
বিজ্ঞাপন
কাবিননামার নিরাপত্তা প্রশ্নে আসিফের কড়া প্রতিক্রিয়া। বিয়ে হয় হৃদয়ের বন্ধনে চিরকালের জন্য। সেখানে শর্ত এলে তো বন্ধন সংযোগ ঘটে না। শিল্পীর ভাষ্য, ‘কাবিননামার সময় সিকিউরিটি বাবদ যে অর্থ ইদানীং চাওয়া হয় সেটা একধরনের ব্ল্যাকমেইলিং। একটা বিয়ের যোগ্য যুবক এই প্রেশারে পুরুষ হওয়ার আগেই বৃদ্ধ হয়ে যায়। ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্ন ওঠা অবশ্যই কিছুটা অবান্তর। বিয়ে মানেই একটা অনন্ত জীবনের হিসাব, সেখানে শর্ত আসলে তো বন্ধনের আসল সংযোগ পিছিয়ে যাবে। এটা অন্যায়, রাষ্ট্রের উচিত ম্যারেজ লোনটাকে সরল সুদের কিস্তিতে ফেলে দেওয়া। নিশ্চিত করতে হবে সংসার করার অধিকার।’
ছেলেদের বিরুদ্ধে আরেকটি মোক্ষম হাতিয়ার ‘নারী নির্যাতন মামলা’। এই সংগীতকারের মতে, ‘আরও একটা ঝামেলা আছে নারী নির্যাতন টাইটেলে। কোনো কারণে ঝামেলা হলেই ছেলেটাকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার লাইন আদালত পর্যন্ত প্রায়ই যায়, জামিনবিহীন ভয়ঙ্কর মামলা। অপরাধ বিবেচনায় প্রমাণের আগেই একটা ছেলে অসহায় হয়ে পড়ে। সব ছেলে ফেরেশতা হবেনা, এটা মেয়েদের ক্ষেত্রেও একই। সমাজের অসম চোখ রাঙানীকে উপেক্ষা করতে হবেই। এত শর্তের বেড়াজালে দীর্ঘ বৈবাহিক জীবন মেইনটেইন করা প্রতিটি পুরুষের জন্য একধরনের মানসিক টর্চার। খরপোশ কিংবা মেয়েদের লাইফের সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে গিয়ে এদেশে আসলে পুরুষ নির্যাতনের অটো শাস্তিযজ্ঞ চলছে।’
শেষদিকে, দাম্পত্য জীবনে নারী-পুরুষ উভয়ের সমঝোতা ও কর্তব্যের কথা উল্লেখ করেন শিল্পী। তার কথায়, ‘নারী পুরুষের সাংসারিক সমঝোতা জরুরি। বিয়ে করতে চাওয়া ছেলেটাকে বাংলাদেশের সংবিধান না বুঝিয়ে স্বস্তি দেয়া প্রয়োজন। কিছু বাই ডিফল্ট পুরুষ ছাড়া সবাই সংসার করে বাবা হতে চায়। মন নরম করুন, অনাগত সুন্দর জীবন নামের ফুলগুলো ফুটতে দিন। আমি শিওর, বিয়ের মাধ্যমে শ্বাশত সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। লেনদেন শুধু ঝামেলাই সৃষ্টি করে, অনন্ত ভালোবাসার জায়গায় হিসেব নিকেশ ঢুকে যায়। চাপ সৃষ্টি আর নয়, ভালোবাসা খুঁজুন। আমার পরিবারের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক বেগম সালমা আসিফ নিজেই একজন অনন্য উদাহরণ। যিনি আমার সারা জীবনের হিস্যা, তার সাথে লেনদেন বড্ড বেমানান।’
উল্লেখ্য, সোমবার (৩ অক্টোবর) রাজধানী অফিসার্স ক্লাবে বিয়ে করেন আসিফ আকবরের বড় ছেলে শাফকাত আসিফ রণ। কনে ইসমত শেহরীন ঈশিতার বাড়ি গোপালগঞ্জে। ১৯৬০ সালের একই দিনে আসিফের বাবা-মা’র বিয়ে হয়েছিল।
কেএইচটি