উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর প্রয়াত হয়েছেন। ২৭ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর মৃত্যুর কাছে হার মানলেন সুরের সরস্বতী। রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

মৃত্যুকালে লতা মঙ্গেশকরের বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। কিন্তু এই দীর্ঘ জীবনে তিনি বিয়ে করেননি। আমৃত্যু কুমারী থেকেছেন। সুরের সাগরে সবাইকে ভাসিয়েছেন, প্রেম-ভালোবাসার সংজ্ঞা শিখিয়েছেন। কিন্তু নিজে কখনোই মালা বদল কিংবা সাত পাকে বাঁধা পড়েননি।

কী কারণে সারাজীবন অবিবাহিত ছিলেন লতা? সেই প্রশ্নের জবাব জীবিত থাকা অবস্থায় দিয়েছিলেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে লতা বলেছিলেন, ‘একমাত্র মা আমার বিয়ে নিয়ে জোরাজুরি করতেন, একসময় তিনিও হাল ছেড়ে দেন। আমার কাছে বিয়ের চেয়ে আমার পরিবার বেশি জরুরি ছিল।’

মধ্যপ্রদেশের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন লতা মঙ্গেশকরে। ছোট থেকেই সংগীতের পরিবেশে বেড়ে ওঠা। যদিও হিন্দি গান শুনতে নিষেধাজ্ঞা ছিল। কৈশোরে বাবাকে হারান লতা। বড় মেয়ে হিসেবে তাই ভাই-বোনসহ পরিবারের দায়িত্ব নিতে হয় তাকে।

দীর্ঘ জীবনে লতা মঙ্গেশকরকেও একাকীত্ব ঘিরে ধরেছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘অস্বীকার করব না যে, আমাকে কোনোদিন একাকীত্ব ঘিরে ধরেনি। তাহলে তো আমি মানুষই হতাম না। বিবাহিত হোন কিংবা সিঙ্গেল, একাকীত্ব সবার জীবনে আছে। কখনো কখনো এই একাকীত্ব ক্ষতিকারক হয়। তবে আমি বলব আমি খুব সৌভাগ্যবান যে ভালোবাসার মানুষরা আমার আশেপাশে সবসময় থেকেছে।’

প্রেমেও পড়েছিলেন লতা। তবে সেটা গানের। তার ভাষ্য ছিল, ‘শুধু নিজের কাজের প্রেমে পড়েছি। আর আমি ভালোবেসেছি আমার আপনজনদের, পরিবারকে, অন্য কাউকে নয়।’

লতার কথাতেই স্পষ্ট, পরিবারের জন্যই সারাজীবন অবিবাহিত থেকেছিলেন তিনি। গানকে সঙ্গী করে পাড়ি দিয়েছিলেন বর্ণাঢ্য এক জীবন। সেই জীবনে ছিল না প্রাপ্তির অভাব। সংগীতশিল্পী হিসেবে প্রায় সব অর্জনই নিজের করে নিয়েছিলেন তিনি।

কেআই/আরআইজে