সন্তান ধারণের নতুন পন্থা সারোগেসি। এই প্রক্রিয়ায় অন্য কোনো নারীর গর্ভ ভাড়া করে মা হতে পারেন কেউ। সম্প্রতি সারোগেসির মাধ্যমে মা হয়েছেন আন্তর্জাতিক তারকা প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। গত শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি ও তার স্বামী নিক জোনাস সুখবরটি প্রকাশ করেন।

এদিকে প্রিয়াঙ্কার মা হওয়ার বিষয়টি মানতে পারছেন না লেখিকা তসলিমা নাসরিন। কেবল প্রিয়াঙ্কা নয়, সারোগেসি বিষয়টিকেই সমর্থন দিতে নারাজ তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে এ বিষয়ে নিজের অভিমত তুলে ধরেন এই নির্বাসিত লেখিকা।

আরও পড়ুন : ক্যামেরার সামনেই প্রিয়াঙ্কার জামা ঠিক করলেন নিক

তসলিমা লিখেছেন, ‘সারোগেসি বিজ্ঞানের চমৎকার একটা আবিষ্কার বটে। তবে সারোগেসি তত দিন টিকে থাকবে, যত দিন সমাজে দারিদ্র্য টিকে থাকবে। দারিদ্র্য নেই তো সারোগেসি নেই।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘দরিদ্র মেয়েদের জরায়ু টাকার বিনিময়ে নয় মাসের জন্য ভাড়া নেয় ধনীরা। ধনী মেয়েরা কিন্তু তাদের জরায়ু কাউকে ভাড়া দেবে না। কারণ গর্ভাবস্থায় জীবনের নানা ঝুঁকি থাকে, শিশুর জন্মের সময়ও থাকে ঝুঁকি। দরিদ্র না হলে কেউ এই ঝুঁকি নেয় না।’

ওই পোস্টে তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘গৃহহীন স্বজনহীন কোনও শিশুকে দত্তক নেওয়ার চেয়ে সারোগেসির মাধ্যমে ধনী এবং ব্যস্ত সেলিব্রিটিরা নিজের জিনসমেত একখানা রেডিমেড শিশু চায়। মানুষের ভেতরে এই সেলফিস জিনটি, এই নার্সিসিস্টিক ইগোটি বেশ আছে। এ সবের ঊর্ধ্বে উঠতে কেউ যে পারে না তা নয়, অনেকে গর্ভবতী হতে, সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম হলেও সন্তান জন্ম না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।’

আরও পড়ুন : পরীমণির মা হওয়ার খবরে ক্ষুব্ধ তসলিমা নাসরিন?

গর্ভ ভাড়া করে মাওয়ার এই উপায়টি মেনে নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি শর্ত দিয়েছেন তসলিমা নাসরিন। তার ভাষ্য, ‘সারোগেসিকে তখন মেনে নেব যখন শুধু দরিদ্র নয়, ধনী মেয়েরাও সারোগেট মা হবে, টাকার বিনিময়ে নয়, সারোগেসিকে ভালোবেসে হবে। ঠিক যেমন বোরখাকে মেনে নেব, যখন পুরুষেরা ভালবেসে বোরখা পরবে। মেয়েদের পতিতালয়কে মেনে নেব, যখন পুরুষেরা নিজেদের পতিত-আলয় গড়ে তুলবে, মুখে মেকআপ করে রাস্তায় ত্রিভঙ্গ দাঁড়িয়ে কুড়ি- পঁচিশ টাকা পেতে নারী-খদ্দেরের জন্য অপেক্ষা করবে। তা না হলে সারোগেসি, বোরখা, পতিতাবৃত্তি রয়ে যাবে নারী এবং দরিদ্রকে এক্সপ্লয়টেশনের প্রতীক হিসেবে।’

প্রসঙ্গত, প্রিয়াঙ্কা ও নিক জোনাস বিয়ে করেছেন ২০১৮ সালে। সংসার জীবনের তিন বছর পার করে সন্তান গ্রহণ করলেন তারা।

কেআই