বলিউড ছবিতে ভূতের গল্পে নাকি ভয় নেই। এছাড়াও রয়েছে ভয়ংকর গল্পের অভাব, যার কারণে খুব বেশি দর্শক টানতে পারে না ছবিগুলো। কিন্তু এই বলিউড থেকেই এমন এক হরর ছবি নির্মিত হয়েছিল, যা নিয়ে এখনও রয়েছে নানা রহস্য।

সত্তর-আশির দশকে হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিজে একাধিক হরর ঘরানার ছবি উপহার দিয়েছেন রামসে ব্রাদার্স। এমনই এক ছবি হল 'ভিরানা'। ২০২৪-এ দাঁড়িয়ে এই ছবির কনটেন্ট 'ক্রিঞ্জ' মনে হলেও সে সময় এই ছবি বক্স অফিসে তুমুল আলোড়ন ফেলে।

তবে শুধু যে বক্সঅফিসেই এই ছবি আলোড়ন ফেলেছিল তা নয়। ছবিটিকে ঘিরে এত ঘটনা ঘটে যা রীতিমতো ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল খোদ পরিচালককেই। এমনকি পরিচালক শ্যাম রামসে এও দাবি করেছিলেন, এ নেহাত ছবি নয়, বরং বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে।

এক সাক্ষাৎকারে শ্যাম জানান, ১৯৮৩ সালে ‘পুরানা মন্দির’ ছবির শ্যুটিং শেষ করে মুম্বাই ফিরছিলেন। রাতে সড়কপথে নিজেই গাড়ি ছুটিয়ে রওনা হন। হঠাৎ মাঝরাস্তায় এক মহিলাকে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে চমকে যান শ্যাম। আচমকা ওই নারীকে দেখতে পেয়ে গাড়ি থামিয়ে দেন। তার গাড়ি দেখে শ্যামের দিকে এগিয়ে আসেন ওই নারী। শ্যাম সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, ‘ওই নারী আমার কাছে লিফ্ট চান। অত রাতে কোনও গাড়ি পাচ্ছেন না বলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন তিনি।’

ওই নারীকে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে নিজের গাড়িতে উঠতে বলেন শ্যাম। ওই নারী গাড়ির পেছনের আসনে না বসে শ্যামের পাশে সামনের আসনে এসে বসেন। তবে গাড়িতে বসার পর ওই নারী একদম চুপ করে ছিলেন বলেও দাবি করেন শ্যাম। তা দেখে সন্দেহ হয় তার। বারবার ওই নারীর সঙ্গে কথা চালানোর চেষ্টা করছিলেন। তা সত্ত্বেও কোনও উত্তর দিচ্ছিলেন না ওই নারী। একপর্যায়ে তার পায়ের দিকে লক্ষ করে দেখেন যে ওই নারীর পা বিপরীত দিকে ঘুরে রয়েছে। এই দৃশ্য দেখে ভয় পেয়ে যান শ্যাম। সেই মুহূর্তে পাশে তাকিয়ে দেখেন, সেই নারী আর সামনের আসনে বসে নেই।

শ্যামের দাবি, ‘প্রেতাত্মা’র সঙ্গে সাক্ষাতের ঘটনা ভুলতে পারেননি তিনি। নিজে হরর ঘরানার ছবি বানান শ্যাম। তবে, কোনও দিন সত্যিই ‘ভূত’ দেখতে পাবেন তা কল্পনা করেননি তিনি। পরে শ্যাম সিদ্ধান্ত নেন, এই ঘটনার উপর ভিত্তি করে একটি ছবি বানাবেন।

পাঁচ বছর পর এই ঘটনার উপর ভিত্তি করেই শ্যাম 'ভিরানা' বানানোর সিদ্ধান্ত নেন । ছবিতে অভিনয় করেছিলেন জ্যাসমিন।

কিন্তু এই ছবিকে ঘিরে এখনও রয়েছে রহস্য। কারণ, ছবির ‘হট পিশাচিনি’ খ্যাতি পাওয়া সেই অভিনেত্রী জ্যাসমিন ছবিটিতে কাজ করার পর বাস্তব জীবন থেকে গায়েব হয়ে যান। অনেক দিন তার খোঁজ মেলেনি। পরে যদিও শোনা যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংসারী হয়েছেন তিনি; যদিও এর সুস্পষ্ট প্রমাণ মেলেনি।

শোনা যায়, এই ছবির পর থেকেই মুম্বাইয়ের অন্ধকার জগৎ থেকে নাকি নানা হুমকি আসতো জ্যাসমিনের কাছে। আসত খারাপ প্রস্তাব। সব কিছু এড়াতেই বিদেশে পালিয়ে যান বিদেশে। 

তবে একাধিক মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, আন্ডারওয়ার্ল্ড সংযোগের কারণে তিনি নিজের জীবন শেষ করেছেন জ্যাসমিন। একইসঙ্গে কারও কারও দাবি, দীর্ঘদিন অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয়েছে তার- তবে তারও কোনো প্রমাণ নেই। 

ডিএ