সময়টা একেবারেই ভাল যাচ্ছে না বনি কাপুরের। বছর তিনেক আটকে থেকে, নানা ঝামেলা পেরিয়ে চলতি বছর তার প্রযোজনায় মুক্তি পেয়েছিল ‘ময়দান’। বড় বাজেটের সেই ছবির ভরাডুবি হয় বক্স অফিসে। সে রেশ কাটতে না কাটতেই ছবির শুটিংয়ে এক সরবরাহকারী তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

অভিযোগ করেছিল, গত দু’বছর ধরে ‘ময়দান’-এর শুটিংয়ে ওই নানা জিনিসপত্র সরবরাহকারীর ১কোটি টাকা দু’বছর ধরে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন বনি। অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হয়। ৯৬ লক্ষ টাকা দিতে অভিযোগকারীকে, এই মর্মে রায় শোনায় আদালত।

এদিকে বনি কাপুরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বলিউড অভিনেতা আরশাদ ওয়ারসি। তার কথা থেকেই স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে কাজ করিয়ে শিল্পী, কর্মীদের ঠিকঠাক পারিশ্রমিক না দেওয়া বহু পুরোনো স্বভাব এই প্রযোজকের। আরশাদের অভিযোগ, তাকে কাজ করিয়ে পুরো পারিশ্রমিক দেননি বনি।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে আরশাদ বলেন, ‘১৯৯৩ সালে অনিল কাপুর-শ্রীদেবী অভিনীত ‘রূপ কী রানি চোরো কা রাজা’ ছবির একটি গানের কোরিওগ্রাফি করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয় তাকে। সেই সময় নৃত্য পরিচালক হিসাবে কাজ করতেন আরশাদ। ওই ছবি প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন বনি কাপুরের প্রযোজনা সংস্থা।’ 

আরশাদ বনির প্রযোজনা সংস্থাকে জানান, ওই গানের দৃশ্যের শুটিং শেষ করতে মোট চার দিন লাগবে আর পারিশ্রমিক হিসাবে ১লক্ষ টাকা নেবেন তিনি। এরপর বনির প্রযোজনা সংস্থার তরফে অনুরোধ করা হয়, সময় হাতে বেশি নেই তাই আরশাদ যেন চারের বদলে তিন দিনের মধ্যে শুটিং শেষ করেন।। দিন-রাত এক করে, হাড়ভাঙা খাটুনি শেষে তিন দিনের মাথায় অভিনেতা-অভিনেত্রীকে নাচের ভঙ্গি শিখিয়ে, ছবির ওই গোটা গানের দৃশ্য শুট করে ফেলেন আরশাদ।

নির্দিষ্ট দিনে পারিশ্রমিক নিতে বনির প্রযোজনা সংস্থার দফতরে হাজির হন আরশাদ। আরশাদ দেখেন তাকে ১ লক্ষ টাকার বদলে দেওয়া হয়েছে মাত্র ৭৫ হাজার টাকা। এরপর তিনি জিজ্ঞেস করেন যে কেন ২৫ হাজার টাকা কাটা হল। পরে তারা বলে, যেহেতু চার দিনের বদলে তিন দিনে শুটিং শেষ করেছেন আরশাদ, তাই প্রতিদিনের ২৫ হাজারের হিসাবে তাকে দেওয়া হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা। বনির তরফে তাদের ছবির সুবিধার্থে বলা হয়েছিল তিন দিনের শুট শেষ করার জন্য। একটিবারের জন্য তখন পারিশ্রমিক কমানোর এই হিসাব আলোচনা করা হয়নি তার সঙ্গে।

আরশাদ শেষে জানান, যেহেতু সেই সময় ইন্ডাস্ট্রিতে বেশিরভাগ কাজ মৌখিক চুক্তি মেনে নিয়ে হতো তাই অনেকের অনেক টাকা মার গিয়েছে। এরকম চিটিংবাজি হামেশাই চলত। তবে বর্তমানে কাজের পরিসরে, প্রতিটি পদক্ষেপে উকিল, আইনি চুক্তি বিষয়গুলি থাকায় শিল্পীদের লাভ হয়েছে। অন্তত নির্ধারিত পারিশ্রমিক পাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন তারা। 

এমআইকে/