কেকে ইস্যুতে রূপঙ্করের পক্ষ নিলেন নচিকেতা
৩১ মে কলকাতার নজরুল মঞ্চে গান করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক কেকে। কোটি ভক্তকে শোকে ভাসিয়ে রাতে মারা যান তিনি। মৃত্যুর আগে কেকে’র গানের সমালোচনা করেছিলেন কলকাতার জনপ্রিয় গায়ক রূপঙ্কর বাগচী। একটি ভিডিওতে কেকে’কে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি।
কেকে’র আকস্মিক মুত্যর পর থেকেই এ নিয়ে রাগ, কুৎসা ও কটাক্ষের শিকার হচ্ছিলেন রূপঙ্কর। সামাজিক মাধ্যমে অনেকে রূপঙ্করকে বয়কটের ডাকও দেন। স্ত্রীসহ খুনের হুমকিও পান তিনি। যার কারণে পুলিশের দ্বারস্থও হয়েছেন। এমন পরিস্থিতি রূপঙ্করের পাশে দাঁড়ালেন কলকাতার আরেক সঙ্গীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী।
বিজ্ঞাপন
রূপঙ্করের পক্ষ নিয়ে আনন্দবাজারে নচিকেতা লেখেন, ‘কেকের কলকাতা সফর নিয়ে রূপঙ্করের মন্তব্যকে বাঙালি তীব্রভাবে আক্রমণ করছে। কিন্তু ওর অভিমানকে যদি আমরা বুঝতে না পারি, তাহলে তো ধরে নিতে হবে, আমাদের অনুভূতি বোধটাই চলে গেছে। আমরা কি গাধা হয়ে গিয়েছি! না না, গাধা নয়, গাম্বাট! একজন বাঙালি শিল্পী তার অভিমানের জায়গা থেকে একটা কথা বলল। আর আমরা সেটাকে ধরতেই পারলাম না। অন্য ব্যাখ্যা করছি! আরে রূপঙ্কর জ্যোতিষী নাকি! ও কী করে জানবে, কেকে মারা যাবে! বিজেপি আর সিপিএম তো ময়দানে নেমে পড়েছে। এমন একটা ভাব যেন, ভিড়ের কারণেই মৃত্যু হয়েছে কেকের।’
এই গায়ক আরও লেখেন, ‘রাজার মতো মৃত্যু হয়েছে কেকের। এমন মৃত্যুই তো সকলে চায়। আমরা শিল্পীরা আসলে জনসমুদ্রে মিশে যেতে চাই। ওই ভিড়ে পিষ্ট হতে চাই। ভিড়ের চাপে মরে যেতে চাই। ওখানেই তো শিল্পীর সার্থকতা। শ্রোতাদের ভিড়ে এক জন শিল্পী মিশে গিয়ে জীবনের শেষ গান শোনাচ্ছেন, এটাই শিল্পীর স্বপ্ন।’
তিনি লেখেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, ও (রূপঙ্কর) কেকেকে কোনও ভাবেই ব্যক্তি আক্রমণ করতে চায়নি। ও শুধু একটা অভিমানের কথা বলতে চেয়েছে। বাঙালি শিল্পী যখন অন্য রাজ্যে যায়, তখন কয় টাকা পারিশ্রমিক পায়! আর বম্বের শিল্পী এখানে এলে কত পায়! সাধারণ মানুষ এসব জানেন না। অভিমানটা আছে, থাকবে। থাকাটাই স্বাভাবিক। রূপঙ্করও আমার থেকে ছোট। ছোটদের অভিমান অনেক বেশি। ওরা বাংলার কথা বলতে চায়। বাংলা সংস্কৃতিকে ওরা আন্তর্জাতিক করতে চায়। কিন্তু কষ্ট লাগে তখন, যখন দেখি, রূপঙ্কর যাদের হয়ে কথাটা বলল, আজ তারাই ওর পাশে নেই! এটা ঠিক হলো না। রাঘব, ইমনদের তো ওর পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল। ’
সবশেষে নচিকেতা লেখেন, ‘একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে। তাতে রূপঙ্কেরের কোনো দোষ নেই। হ্যাঁ, আমি নচিকেতা বলছি। আমি রূপঙ্করের পাশে আছি।’
আরআইজে