নির্যাতনের ঘটনা সামনে আনা সহজ ছিল না: শবনম ফারিয়া
ভালোবেসে হারুনুর রশীদ অপুকে বিয়ে করেছিলেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাদের বিয়ে। কিন্তু ১ বছর ৯ মাস পর গত বছরের নভেম্বরে বিবাহবিচ্ছেদ করেন তারা। ওই সময় ফারিয়া বলেছিলেন, দু’জনের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় পারস্পরিক সম্মতিতে ডিভোর্স নিয়েছেন।
কিন্তু বিবাহবিচ্ছেদের এক বছর পর মুখ খুললেন ফারিয়া। বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি জানালেন, স্বামীর কাছে নির্যাতনের শিকার হয়েই বিচ্ছেদের পথ বেছে নেন। নির্যাতনে তার হাত পর্যন্ত ভেঙে গিয়েছিল বলে দাবি করলেন অভিনেত্রী।
বিজ্ঞাপন
এরপরই চারদিকে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। পুরো বিষয়টি নিয়ে তাই আবারও ব্যাখ্যা দিলেন শবনম ফারিয়া। তিনি বললেন, ‘আমার মনে হয় বিষয়টা পরিষ্কার করা দরকার। কারো ভাবমূর্তি নষ্ট করার কিংবা অ্যাটেনশন পাওয়ার কোনো ইচ্ছে আমার ছিল না (যদিও আমি না চাইলেও বরাবরই অ্যাটেনশন পেয়ে যাই)। আগের পোস্টটি দেয়ার মূল কারণ হলো, আমাদের সমাজের দিকে আঙুল তোলা।’
ফারিয়া নিজেও ডিভোর্সের পক্ষে নন। কেউ তার কাছে এ ব্যাপারে পরামর্শ চাইলে, তিনি সময় নিয়ে ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে বলেন। ফারিয়া বলেন, “বিয়ে একটি অসাধারণ ব্যাপার। সুতরাং আমরা বিচ্ছেদকে নিরুৎসাহিত করি। এমনকি আমার কোনো বন্ধু যদি ডিভোর্সের ব্যাপারে বলে, আমি তাদেরকে প্রথমেই বলি, ‘সময় নাও’। কেউ মারা গেলে সমাজের মানুষ কান্না করে। কিন্তু যখন কারো বিবাহবিচ্ছেদ হয়, পুরো ঘটনা জানার আগেই মানুষ ধরে নেয়, এটা নারীর ব্যর্থতা। তারা নারীর দোষ খুঁজতে চেষ্টা করে, তার চারিত্রিক সনদ অব্দি দিয়ে দেয়, এবং আমরা সবাই হাসি!”
নিজের কাঁধে দোষ নিয়ে ফারিয়া বলেন, ‘আমি নিজের পছন্দে বিয়ে করেছি, এবং আমিই বিষয়টাকে এতদূর আসতে দিয়েছি। প্রত্যেক পরিবারের মতো আমার পরিবারও প্রাথমিকভাবে আমাকে সমর্থন দেয়নি। কারণ আমার বাবা জীবিত নেই, আমার কোনো ভাই নেই, কিংবা কোনো পুরুষ অভিভাবক নেই। কিন্তু পরে যখন আমার বোন আমার বিষাক্ত অবস্থা দেখে, তখন তারা আমাকে রক্ষা করে।’
দুর্বিসহ এই ঘটনা সামনে আনা সহজ ছিল না। সেজন্যই এতোটা সময় লেগেছে বলে জানান ফারিয়া। তার ভাষ্য, “এই ঘটনা সামনে আনা মোটেও সহজ ছিল না। যদি হতো, তাহলে আরও আগেই এটা প্রকাশ্যে আনতাম। আমি দেখেছি, কীভাবে মানুষ পরিস্থিতি উল্টে আমার দিকে আঙুল তুলেছে। ঠিক এই কারণেই আমরা অনেক বেশি পারিবারিক নির্যাতন দেখছি। এই সমাজ পুরুষদেরকে বাহবা দেয়, আর নারীকে লজ্জা দিতে পছন্দ করে। যদি তুমি মরে যাও, মানুষের মন খারাপ হবে। কিন্তু যদি তুমি নিজেকে রক্ষা করতে বিবাহবিচ্ছেদ করো, তাহলে ‘তুমি খারাপ’।”
কেআই