জন্মদিনে জন্মের ছবি উপহার দিলেন অর্ণব
আজ ২৭ জানুয়ারি (বুধবার) গায়ক, সুরকার ও সংগীত পরিচালক শায়ান চৌধুরী অর্ণবের জন্মদিন। ১৯৭৯ সালের এইদিনে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন আধুনিক বাংলা সংগীতের নন্দিত ও জনপ্রিয় এই গায়ক।
জন্মদিনে সাধারণত উপহার পেয়ে থাকেন উক্ত ব্যক্তি। তবে ‘হোক কলরব’ গায়ক উল্টো উপহার দিলেন তাঁর ভক্ত-শুভাকাঙ্খীদের। সেটা আবার যেনতেন উপহার নয়, নিজের জন্ম নেওয়া দিনের, মুহূর্তের ছবি। বুধবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ছবিটি প্রকাশ করেন গুণী এই শিল্পী। ক্যাপশনে লেখেন, ‘জাস্ট জন্মাইসি’।
বিজ্ঞাপন
পোস্টের সঙ্গে সঙ্গে ছবিটির ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়েন অর্ণবভক্তরা। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে থাকেন প্রিয় গায়ককে। অনেকেই কমেন্ট বক্সে ছবিটি নিয়ে নিজেদের মতামত দেন। কেউ কেউ নিজ টাইমলাইনে শেয়ার করে স্মৃতি হিসেবে সংরক্ষণ করেন। ভক্তদের উচ্ছ্বাস দেখেই বোঝা যাচ্ছে এই উপহারে তারা কতটা খুশি!
অর্ণব শব্দের অর্থ সমুদ্র। বড় হয়ে যেন সেই নামের যথার্থতা প্রমাণ করে গানের এক সমুদ্র হয়ে ওঠলেন এই সুরের যাদুকর। সুরের স্রোতে শ্রোতাদের ভাসিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
অর্ণবের বাবা-মা দু’জনই ছিলেন চিত্রশিল্পী। চাচা তপন চৌধুরী দেশের নন্দিত কণ্ঠশিল্পী। তাই ছোট বেলা থেকেই সাংস্কৃতিক আবহে বেড়ে ওঠা। ঢাকার উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু হয় তাঁর। তবে কিছু দিন পরই তাঁকে কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে তাকে ভর্তি করানো হয় সাউথ পয়েন্ট স্কুলে। অর্ণবের মা তখন শান্তিনিকেতনের কলা ভবনের ছাত্রী। একদিন মায়ের সঙ্গে ঘুরতে যান শান্তিনিকেতনে। ব্যাস, প্রেমে পড়ে যান ওই প্রতিষ্ঠানের। ‘চিত্রকলা’ বিষয়ে পড়তে ভর্তি হয়ে যান সেখানে। ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়েন গানের সঙ্গেও। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই তিনি ক্লাসিক্যাল এস্রাজ শিখতে শুরু করেন। মাত্র সাত দিনে আয়ত্ব করেন গিটার বাজানো।
১৯৯৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে অর্ণবের সংগীত ক্যারিয়ার শুরু। ভারতীয় বন্ধুদের নিয়ে অর্ণব যখন ‘বাংলা’ ব্যান্ড গড়ে তোলেন তখন তার বয়স মাত্র ১৮। বাংলা লোক গানকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার প্রয়াসে গড়া অর্ণবের সেই ব্যান্ডে কিছুদিন পরই যোগ দেন আনুশেহ আনাদিল।
শান্তিনিকেতনে পড়া শেষে অর্ণব দেশে ফিরে এলে ২০০২ সালে প্রকাশিত হয় ‘বাংলা’র প্রথম অ্যালবাম ‘কিংকর্তব্যবিমুঢ’। সে অ্যালবামের ‘মন তোরে পারলাম না বুঝাইতে’ ও ‘তুই গান গা’ এখনো দারুণ জনপ্রিয়।
২০০৫ সালে প্রকাশিত হয় অর্ণবের প্রথম একক ‘চাই না ভাবিস’। পরের বছরই আসে তাঁর তুমুল জনপ্রিয় অ্যালবাম ‘হোক কলরব’। এরপর ২০০৮ সালে ‘ডুব’, ২০১০ সালে ‘রোদ বলেছে হবে’, ২০১২ সালে ‘আধেক ঘুমে’, ২০১৫ সালে ‘খুব ডুব’ এবং ২০১৭ সালে আসে তাঁর ‘অন্ধ শহর’।
‘আহা!, ‘জাগো’, ‘মনপুরা’ ও ‘আয়নাবাজি’ প্রভৃতি সিনেমায় কাজ করেও নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান এই শিল্পী।
শান্তিনিকেতনে থাকতেই সহপাঠী সাহানা বাজপেয়ীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান এই অর্ণব। ২০০১ সালে তারা বিয়ে করেন। কিন্ত সাত বছর পর ২০০৮ সালে তাদের সেই সংসার ভেঙে যায়। এরপর ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর ভারতীয় গায়িকা সুনিধি নায়েককে বিয়ে করেন তিনি।
আরআইজে