গান সরকারি ব্যবস্থাপনায় নেওয়ার পর সেখান থেকে উপার্জিত অর্থ প্রয়াত ব্যান্ডতারকা আইয়ুব বাচ্চুর পরিবারকে দিয়েছে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস। প্রথমবারের মতো সরকারি উদ্যোগে প্রয়াত এই শিল্পীর পরিবারকে ৫ হাজার ডলার (৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা) রয়্যালিটি প্রদান করা হয়েছে।

মঙ্গলবার কপিরাইট অফিস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আইয়ুব বাচ্চুর স্ত্রী ফেরদৌসী চন্দনার হাতে চেক তুলে দিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কপিরাইট বোর্ডের চেয়ারম্যান সাবিহা পারভীন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন কপিরাইট অফিসের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মুহাম্মাদ রায়হানুল হারুন।

সরকারিভাবে কোনও শিল্পীর মেধাস্বত্ব সুরক্ষায় ডিজিটাল আর্কাইভিংয়ের মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ তার পরিবারকে দেওয়ার ঘটনা  বাংলাদেশে এই প্রথম।

অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল মাধ্যমে অর্থ উপার্জিত হতে পারে তা আমাদের দেশে নতুন ধারণা। এখনো দেশের অধিকাংশ মানুষ জানেন না এটা, তা অবিশ্বাস্যও বটে। তবে আমরা কপিরাইট অফিসের মাধ্যমে আরও অনেক শিল্পী, গীতিকার, সুরকার সবার জন্য রয়্যালিটি প্রদান করব।

কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সেখানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যান্ড মিউজিকের নন্দিত শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু। তিনিই ছিলেন ডিজিটাল পদ্ধতিতে কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনের প্রথম আবেদনকারী। এ উদ্যোগের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে সংগীত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ স্ব স্ব স্বার্থ সুরক্ষায় সচেষ্ট হবেন বলে আশা করি। এ জন্য সরকারি উদ্যোগ গ্রহণের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প অনুমোদনের চেষ্টা করছি।

অনুষ্ঠানে আইয়ুব বাচ্চুর স্ত্রী ফেরদৌসী চন্দনা বলেন, ‘আমাদের গানগুলো অনেক জায়গায় অন্যায়ভাবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা কোনও রয়্যালিটি পাইনি। এবার কপিরাইট অফিস আমাদের কপিরাইট করা গানগুলোর ডিজিটালভাবে অর্জিত অর্থ দিলো।

২০১৭ সালে অনলাইনে কপিরাইট নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরুর পর আইয়ুব বাচ্চু নিজের কিছু গান নিবন্ধন করেছিলেন। পাশাপাশি শিল্পীদের মাঝে কপিরাইটের ‍গুরুত্ব তুলে ধরে প্রচারণা চালান তিনি। ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর মারা যান জনপ্রিয় এই ব্যান্ড তারকা।

গত বছরের ১৮ অক্টোবর আইয়ুব বাচ্চুর ২৭২টি গান সরকারি ব্যবস্থাপনায় সংরক্ষরণের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস। কপিরাইট অফিসের সমন্বয়ে এবি কিচেন নামে একটি ওয়েবসাইটে আইয়ুব বাচ্চুর গানগুলো সংরক্ষণ করা হয়। এসব গান তার উত্তরাধিকারীর অনুমতি ছাড়া কেউ ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে যে কেউ নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে ব্যবহার করতে পারবেন।

আরআইজে