হঠাৎ নুসরাতকে নিয়ে মত বদলে গেল তসলিমার
টালিউড অভিনেত্রী ও সংসদ সদস্য নুসরাত জাহানকে নিয়ে আবারও ফেসবুকে পোস্ট করলেন নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিন। আগের বার তিনি পোস্টে নুসরাতের প্রশংসা করলেও এবার ভিন্ন মত দেখা গেল। নুসরাতকে একহাত নিয়েছেন নির্বাসিত এ লেখিকা।
বুধবার রাতে নুসরাতের সন্তানের বাবার পরিচয় প্রকাশ্যে এসেছে। নুসরাতের ছেলের নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম নথিভুক্ত হয়েছে কলকাতা পৌরসভার সাইটে। সেখানেই পাওয়া গেছে ঈশানের বার্থ সার্টিফিকেট। এতদিন ধরে তার সন্তানের বাবার পরিচয় নিয়ে যে ধোঁয়াশা তৈরি করেছিলেন নুসরাত, তা কেটে গেল এক নিমেষে। নিজের মুখে স্বীকার না করলেও পৌরসভার সাইটের মাধ্যমে সবই প্রকাশ্যে আনলেন নুসরাত। বাবার নামের পাশে লেখা দেবাশীষ দাশগুপ্ত ওরফে যশ।
বিজ্ঞাপন
অনেকেই ভেবেছিলেন, নুসরাত নিজেকে ‘সিঙ্গেল মাদার’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবেন। জানা গেছে, পৌরসভায় গিয়ে সেই বিষয়ে খোঁজ খবরও নিয়ে এসেছিলেন তিনি। নুসরাতের সন্তান জন্মের পর থেকে তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন কলকাতার একাধিক ‘সিঙ্গেল মাদার’। কঠিন পথে একা লড়াই করছেন বলে বহু মানুষ আগে থেকেই সমর্থন জানিয়েছিলেন তাকে। তাদের মধ্যে অন্যতম একজন তসলিমা নাসরিন। নুসরাতকে এভাবে দেখবেন, এ কথা হয়ত ভাবেননি তিনি। তাই তাকে পুরুষতন্ত্রের ছক ভাঙা নারীদের দলে ফেলতে চাইলেন না আর।
তসলিমা লিখেছেন, ‘প্রচুর লেখালেখি, প্রচুর স্বাগত জানানো, শুভেচ্ছা জানানো, স্যালুট জানানো— এসব বরং এক্সট্রাঅরডিনারি সাহসী এবং পুরুষতন্ত্রের ছক ভাঙা মেয়েদের জন্য তোলা থাকুক। ট্র্যাডিশনাল মেয়েদের পেছনে সময় নষ্ট করা, তাদের বাহবা দেওয়া আপাতত স্থগিত থাকুক।’
নুসরাতকে নিয়ে ঠিক দেড় মাস আগে সম্পূর্ণ ভিন্ন পোস্ট করেছিলেন তসলিমা। লেখিকার মতে, শুধুমাত্র শুক্রাণুর জন্যই সন্তান ধারণের সময় পুরুষের ওপর নির্ভরশীল নারী। এ জায়গা থেকে তিনি আগের পোস্টে লিখেছিলেন, ‘এমনও দিন আসবে যে দিন মেয়েদের স্টেম সেল থেকে স্পার্ম তৈরি হবে। অথবা স্পার্ম তৈরি হবে মেয়েদের বোন ম্যারো থেকে।’ আরও লিখেছিলেন, ‘নুসরাত প্রতিষ্ঠিত মেয়ে। কারওর দাসীবাঁদী নয়। নিজের ইচ্ছের মূল্য দিতে জানে। সে তার সন্তানকে ভালো মানুষ করবে, এ আমার বিশ্বাস।’
তারপর বুধবার রাতের ঘটনা। তসলিমার চোখে বিশেষ জায়গায় থাকা নুসরাত যেন দলে চলে গেলেন সাধারণে। তসলিমা লিখেছেন, ‘কলকাতার অভিনেত্রী নুসরাতকে যতটা না বিল্পবী তার চেয়ে বেশি ভেবে নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম নুসরাত তার সন্তানকে শুধু নিজের সন্তান হিসেবে পরিচয় দেবে। কার স্পার্ম সে নিয়েছে গর্ভবতী হওয়ার জন্য, সেটা মোটেও উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হবে না। কিন্তু না, নুসরাত আসলে অন্য যেকোনো রমণীর মতোই রমণী।’
তসলিমার দাবি, সন্তানের বাবার নাম যদি নিতেই হতো, তা হলে এতদিনের লুকোচুরির কোনো মানে নেই। তসলিমা জানান, তিনি যদি জানতে পারেন যে নুসরাত গোপনে যশকে বিয়ে করেছে, তা হলেও অবাক হবেন না তিনি। তাই তার প্রশ্ন, ‘যেকোনো ট্র্যাডিশনাল মেয়ের চেয়ে নুসরাতের তফাৎটা কোথায়?’
এসএসএইচ