নোবেলের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ বান্দরবানবাসী
ভারতীয় টিভি চ্যানেল জি বাংলার ‘সারেগামাপা’ রিয়্যালিটি শোয়ের মাধ্যমে পরিচিতি পান মাইনুল আহসান নোবেল। তার দরাজ কণ্ঠের গায়কী মুগ্ধ করে বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের। কিন্তু সেই মুগ্ধতা ধরে রাখতে পারেননি তিনি। বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্য করে এবং উদ্ভট সব কাণ্ড ঘটিয়ে কেবল নিন্দাই কুড়িয়েছেন।
এবার তার লাগামহীন কাণ্ডের সাক্ষী হলো বান্দরবানবাসী। দেশের সুন্দরতম এই অঞ্চলে গিয়ে আপত্তিকর এবং অশালীন আচরণ করছেন নোবেল। স্থানীয়রা তার এমন আচরণে রীতিমতো ক্ষুব্ধ।
বিজ্ঞাপন
গত ২৫ আগস্ট বান্দরবানে যান নোবেল। তার সঙ্গে রয়েছেন এক তরুণী। ওই তরুণীকে নিজের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বান্দরবান সদরের রুমা বাসস্টেশন এলাকার গার্ডেন সিটি নামের একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন তিনি। পরে ২৭ আগস্ট সকালে হোটেল থেকে বের হয়ে বিভিন্ন এলাকায় নেশাজাতীয় দ্রব্য খেয়ে ঘুরতে থাকেন এবং উদ্ভট আচরণ করতে থাকেন।
ভ্রমণে এসে প্রকাশ্যে নেশাদ্রব্য পান ও এলাকার পরিবেশ নষ্ট করার কারণে এলাকার মানুষ নোবেলের ওপর ক্ষিপ্ত। শুধু বাইরেই নয়, রাতের বেলা হোটেলেও তিনি মদপান করেন এবং চিৎকার-চেঁচামেচি করেন। হোটেল কর্তৃপক্ষ তাকে শান্ত করতে চাইলেও ব্যর্থ হয়। উল্টো হোটেলের এক অতিথির ওপর চড়াও হয়ে তার গায়েও হাত তোলেন নোবেল।
এরপর হোটেলের মালিক মো. জাফর পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে নোবেলকে রাত ৩টা পর্যন্ত বুঝিয়ে শান্ত করেন এবং ভোরে তিনি নিজের কক্ষে ঘুমাতে যান। এ বিষয়ে হোটেলের মালিক মো. জাফর বলেন, ‘একজন সংগীতশিল্পীর এমন অসভ্য আচরণ খুবই খারাপ। শিল্পী হিসেবে তাকে আমি একটি রুম দিয়েছি, রুম ভাড়া নেওয়ার সময় তার সঙ্গে এক নারী ছিল। সে তাকে প্রথমে স্ত্রী পরিচয় দেয়। পরে সে আবার তাকে বোন হিসেবে পরিচয় দিতে থাকে।’
বিষয়টি নিয়ে বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘নোবেলের বিষয়ে আমরা হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। এরপর বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। বে-আইনি কিছু করলে অবশ্যই তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
এদিকে পর নারীকে নিয়ে ভ্রমণে যাওয়ায় নোবেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তার স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ। সেই সঙ্গে নেশাগ্রস্ত নোবেলের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টিও আকর্ষণ করেছেন তিনি।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সালসাবিল মাহমুদ বলেন, ‘যে মেয়ের সঙ্গে নোবেল বান্দরবানে গিয়েছে, সেই মেয়েটির নাম জেবা। তিনি একজন এয়ার হোস্টেস। চাকরির আড়ালে বিভিন্ন স্থানে মাদক আনা-নেওয়া করে। নোবেল-জেবা দুজনেই মাদকাসক্ত।’
সালসাবিল মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমরা বিবাহিত কিন্তু একসঙ্গে থাকি না। মাদক সেবন, নারীঘটিত কারণেই মূলত নোবেলের সঙ্গে থাকি না। একের পর এক এরকম ঘটনা হলে একজন মানুষের সঙ্গে থাকা যায় না। মাদক বা নারীর প্রতি নোবেলের আসক্তি যে পর্যায়ে গেছে, তা এখন আর কারো অজানা নয়। সবকিছু সবার সামনেই ঘটছে।’
উল্লেখ্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয়ের সূত্রে সালসাবিলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান নোবেল। এরপর ২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর তারা বিয়ে করেন।
রিজভী রাহাত/কেআই/আরআইজে