যেসব গানে বেঁচে থাকবেন ফকির আলমগীর
ষাটের দশক থেকে গণসংগীতের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ফকির আলমগীর। তাকে বিবেচনা করা হয় দেশের গণসংগীতের সবচেয়ে সফল শিল্পী হিসেবে। কেননা তার গান দেশের আনাচে-কানাচে সবখানে, সবার কানে পৌঁছেছে। তবে তিনি কেবল গণসংগীত নয়, গেয়েছেন পপ ও আধুনিক গানও।
দীর্ঘ সংগীত জীবনে ফকির আলমগীর নিষ্ক্রিয় থাকেননি কখনো। প্রতিনিয়ত গান করে গেছেন। গেল বছরও তার গাওয়া নতুন গান প্রকাশ হয়েছিল। যে গানটা ছিল আমেরিকায় পুলিশের নির্যাতনে নিহত হওয়া জর্জ ফ্লয়েডকে নিয়ে।
বিজ্ঞাপন
অন্যায়, অবিচার আর শোষণের বিরুদ্ধে ফকির আলমগীরের কণ্ঠ বরাবরই ছিল সোচ্চার। মানুষ ও মানবতার কথা তিনি দরাজ কণ্ঠে ছড়িয়ে দিয়েছেন চারদিকে। তার গাওয়া গানের সংখ্যা অগণিত। সেই অসংখ্য গানের মধ্য থেকে কিছু গান জয় করে নিয়েছে প্রজন্ম ও কালের সীমানা। যেসব গানে অনন্তকাল বেঁচে থাকবেন তিনি।
ফকির আলমগীরের গাওয়া সবচেয়ে জনপ্রিয় গানটির শিরোনাম ‘ও সখিনা’। গানটির প্রথম লাইন এরকম- ‘ও সখিনা গেছস কিনা ভুইল্যা আমারে, আমি অহন রিশকা চালাই ঢাহা শহরে’। এই গান শোনেনি, এমন শ্রোতা দেশে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
‘সান্তাহার জংশনে দেখা’ গানটির কথা কেউ কি ভুলতে পারবেন? সান্তাহার না হোক, যেকোনো রেল জংশনে গেলেই হয়ত মনের গহীনে বেজে উঠবে ফকির আলমগীরের এই গান।
এছাড়াও ফকির আলমগীরের কণ্ঠনিঃসৃত ‘আহারে কাল্লু মাতব্বর’, ‘ও জুলেখা’ ‘কালো কালো মানুষের দেশে’ গানগুলো শ্রোতারা মনে রাখবেন অনেক দিন। কেবল নিজের গান নয়, ফকির আলমগীর গেয়েছেন প্রচলিত ফোক ও আধ্যাত্মিক গানও। তার কণ্ঠে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে ‘বনমালী তুমি’ ও ‘মন আমার দেহঘড়ি’ গানগুলো।
আরও একটি গানের কথা বিশেষভাবে বলতে হয়। সেটার নাম ‘মায়ের একধার দুধের দাম’। এই গানটি ফকির আলমগীরের কণ্ঠে একেবারে শহর-গঞ্জ-গ্রামে সবখানে ছড়িয়ে গিয়েছিল। এখনো গানটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দনে জায়গা করে আছে।
করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে মৃত্যুর কাছে হেরে গেছেন ফকির আলমগীর। শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তিনি। জীবনের সব আয়োজন সাঙ্গ করে তিনি চলে গেলেও গানের সুরে, গণসংগীতের প্রতিবাদী বাণীতে বেঁচে থাকবেন মানুষের মনে।
কেআই/আরআইজে