২০১১ সালে ‘ভিট-চ্যানেল আই টপ মডেল’ প্রতিযোগিতার বিজয়ী হন হাসিন রওশন। পরের পাঁচ বছরে নাটক, বিজ্ঞাপনচিত্র, মডেলিং সব মাধ্যমে নিয়মিত কাজ করেন তিনি। বেশ জনপ্রিয়তাও পান। তবে বিয়ের পর ২০১৬ সালে হঠাৎই মিডিয়া থেকে দূরে সরে যান তিনি।

২০১৭ সালে অন্তঃসত্ত্বা হন এই অভিনেত্রী। এরপর থেকে অস্বাভাবিক হারে ওজন বাড়তে থাকে তার। সে বছরের ৩ ডিসেম্বর প্রথম ছেলে সন্তান উজায়ের মাঈনের জন্মের সময় হাসিনের ওজন ছিল ৮৭ কেজি! ২০২০ মার্চে এসেও তার শরীরের ওজন দাঁড়ায় ৮০ কেজি। এ সময় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া ওজন কমানোর জন্য ডাক্তার জাহাঙ্গীর কবিরের ডায়েট ভিডিও ফলো করতে থাকেন হাসিন। মাত্র ছয় মাসে এর সুফলও পান। অক্টোরব মাস অবধি হাসিন ওজন কমিয়ে ফেলেন ২৭ কেজি!

ঢাকা পোস্টকে হাসিন বলেন, ‘অতিরিক্ত পরিমাণে ওজন বেড়ে যাওয়ায় আমি চিন্তায় পড়ে যাই। তারপর ২০২০ সালের মার্চে করোনার লকডাউন শুরু হলে ডাক্তার জাহাঙ্গীর কবিরের ভিডিও দেখে দেখে ডায়েট শুরু করি। মাত্র ছয় মাসে ৮০ কেজি থেকে ৫৩ কেজিতে চলে আসি। এর জন্য আমাকে অনেক কষ্ট ধরতে হয়েছে। ধৈর্য ধারণ করতে হয়েছে।’

অভিনেত্রীর ভাষ্যে, ‘অনেকে বলেন বাসায় এত এত খাবার থাকলে ডায়েট করব কিভাবে? আমি মনে করি এটা হলো একদম মনের ব্যাপার। মনকে নিয়ন্ত্রণে রাখলেই শরীরকে গঠন করা যায়। আমি যখন ডায়েট করি তখন প্রতিদিনই বাসায় আমার স্বামীর জন্য পোলাও, বিরিয়ানি, মোগলাই, সিঙ্গাড়া, চমুচা ইত্যাদি বানাতাম। কিন্তু নিজেকে কন্ট্রোল করে আমি শুধু ডায়েটের খাবারটাই খেতাম।’

হাসিন আরও বলেন, ‘আমাদের একটা ভুল ধারণা আছে। আমরা মনে করি প্রেগন্যান্ট অবস্থায় অনেক খেতে হবে। প্রচুর ভাত খেতে হবে, প্রচুর ডাল খেতে হবে। তবেই বাচ্চা স্বাস্থ্যবান হবে, মোটা হবে। এভাবে ওজন একবার বেড়ে গেলে পরে তা আর কমানো যায় না। এসব বিষয়ে আমাদের আরও স্পষ্ট ধারণ নিতে হবে। সতর্ক থাকবে হবে। প্রয়োজনে যথাযথ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। আর এখন তো অনলাইন থেকেও অনেক কিছু জানা যায়।’

ওজন কমিয়ে সাফল্য পাওয়া হাসিন ভেবেছেন নিজের কাছের মানুষ, বন্ধু, শুভাকাঙক্ষীদের কথাও। আর তাইতো ফেসবুকে খুলেছেন ‘হাসিনস টেল’ নামে ডায়েট গ্রুপ। ডাক্তার জাহাঙ্গীর কবিরকে অনুপ্রেরণায় রেখে গ্রুপটি খুলেছেন হাসিন। সেখানে অনেকেই নিজেদের ডায়েট চার্ট দিচ্ছেন, মতামত নিচ্ছেন বা দিচ্ছেন। গ্রুপটিতে যুক্ত হওয়া সবারই স্বপ্ন অতিরিক্ত স্বাস্থ্য কমিয়ে নিজেকে ফিট রাখার।

অভিনয়ের বাইরে থাকা হাসিন পাঁচ বছর ধরে ইন্টেরিয়র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। নিজের ব্যবসা নিয়ে বেশ ভালো সময় কাটছে বলেও জানান তিনি। অফিস, শো, রুম বাসা বাড়ি সবখানেই সমানতালে ইন্টেরিয়র ডিজাইন করে চলছে হাসিনের কম্পানি ‘পার স্কয়ার ফিট’। স্বামী-সংসার আর ব্যবসা-সব মিলিয়ে দারুণ সুখে আছেন বলেও জানালেন হাসিন।

আরআইজে