মা হতে চলেছেন ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও সাংসদ নুসরাত জাহান। শুক্রবার (৪ জুন) থেকেই এই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে টলিপাড়ার। বিষয়টি নিয়ে অভিনেত্রী নিজে মুখে না খুললেও শুক্রবার তার ইনস্টাগ্রাম স্টোরি দেখে অনেকেই আঁচ করতে পেরেছেন, নুসরাতের মধ্যে এক নতুন প্রাণের সঞ্চার ঘটেছে। 

সাংসদ-অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবনের টানাপোড়েনও এখন সমালোচনার শীর্ষে। নেটিজেনরা প্রশ্ন ছুঁড়েছেন, বাচ্চার বাবা কে? সূত্র বলছে, গত ছয় মাস ধরে নুসরাতের ফ্ল্যাটেই বেশিরভাগ সময় কাটান অভিনেতা যশ দাশগুপ্ত। এদিকে স্বামী নিখিলের সঙ্গে তার আইনি বিচ্ছেদ হয়নি, কিন্তু তাদের মধ্যে কথাবার্তা-যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ। কাজেই এই সন্তান যে অভিনেতার, অনেকেই মনে করছেন সেটা। কারণ, নিখিল ইতোমধ্যেই দাবি করেছেন, এই সন্তান তার নয়। যশ-নুসরাত-নিখিল এই ত্রিকোণ সম্পর্ক নিয়ে এবার বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।

এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘নুসরতের খবর বেশ চোখে পড়ছে। তিনি প্রেগনেন্ট। তার স্বামী নিখিল এই ব্যাপারে কিছুই জানেন না। দুজন আলাদা থাকছেন ছয় মাস হলো। তবে যশ নামে এক অভিনেতার সঙ্গে অভিনেত্রী নুসরাত প্রেম করছেন। সন্তানের পিতা বলে অনুমান করা হচ্ছে, যশকে। নিখিল নন। খবরটি আদৌ সত্যি না গুজব জানি না। তবে, এই যদি পরিস্থিতি হয়, তাহলে নিখিল আর নুসরাতের ডিভোর্স হয়ে যাওয়াই কি ভাল নয়? অচল কোনো সম্পর্ক বাদুড়ের মতো ঝুঁলিয়ে রাখার কোনো মানে হয় না। এতে দুপক্ষেরই অস্বস্তি।’

এরপরই তৃণমূলের সাংসদ-অভিনেত্রীর বিয়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তসলিমার মন্তব্য, ‘যখন নুসরাত আর নিখিল বিয়ে করলেন, বেশ আনন্দ পেয়েছিলাম। ঠিক যেমন আনন্দ পেয়েছিলাম সৃজিত আর মিথিলার যখন বিয়ে হল। অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করি বলেই দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে বিয়ে হলে খুব স্বাভাবিক কারণেই পুলকিত হই। জাত-ধর্ম ইত্যাদি দূর করতে হলে ভিন্ন জাত আর ভিন্ন ধর্মের মানুষকে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। এতেই হিংসে আর হানাহানিকে হটানো যাবে। কিন্তু এত চোখ জুড়োনো জুটি যে বেশিদিন সুখে থাকবে না কে জানত!’

ব্রাত্য বসু পরিচালিত ‘ডিকশনারি’ সিনেমা দেখে অভিনেত্রী নুসরাতের প্রশংসায়ও পঞ্চমুখ তসলিমা। তার সঙ্গে অ্যাঞ্জেলিনা জোলির তুলনা করে তিনি বলেছেন, ‘অভিনয়ও করে বেশ চমৎকার। নিশ্চয়ই নুসরাত স্বনির্ভর। আসলে স্বনির্ভর এবং সচেতন হলে, আত্মবিশ্বাস এবং আত্মসম্মান যথেষ্ট থাকলে নিজের সন্তানের অভিভাবক নিজেই হওয়া যায়। নিজের সন্তানকে নিজের পরিচয়েই বড় করা যায়। পুরুষের মুখাপেক্ষী হতে হয় না। আসলে নিখিল এবং যশের মধ্যে কী এমন আর পার্থক্য! পুরুষ তো শেষ পর্যন্ত পুরুষই। একজনকে ত্যাগ করে আরেকজনকে বিয়ে করলে খুব যে সুখময় হয়ে ওঠে জীবন, তা তো নয়। দ্বিতীয় বিষময় জীবন থেকে বাঁচতে তাহলে কি আবার আরেকটি বিয়ে করতে হবে? তাহলে তো এ রেসের শেষ হবে না, কাঙ্ক্ষিত পুরুষের দেখাও মিলবে না। স্বাধীনচেতা নারীর কাঙ্ক্ষিত পুরুষ কল্পনায় থাকে, বাস্তবে নয়।’

লেখিকা তসলিমা নাসরিন নুসরাতের ত্রিকোণ সম্পর্ক নিয়ে কাটাছেঁড়া করলেও তিনি যে আসলে একজন স্বাধীনচেতা নারী হিসেবে নুসরতের মা হওয়ার সিদ্ধান্তকেই সমর্থন জানিয়েছেন, তা বলাই বাহুল্য।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

এসএসএইচ