থামল তবলার বোল। থামল জাকির হোসেনের আঙুলের তালে তালে সেই রিদমের ঝংকার। তার জীবনের অজানা কিছু গল্প আছে। ৭ বছর বয়সে সকলের সামনে শুরু করেন অনুষ্ঠান করা। মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি আন্তর্জাতিক স্তরে পারফর্ম করেন।

১৯৫১ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন জাকির হোসেন, ছিলেন প্রখ্যাত তবলা বাদক ওস্তাদ আল্লা রাখার ছেলে। সংগীতের প্রতি তার প্রাথমিক আগ্রহ এবং কঠোর প্রশিক্ষণ তাকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ তবলা বাদক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। 

সংগীতের প্রতি তার অসীম ভালোবাসা, সৃজনশীলতা এবং সূক্ষ্মতা তাকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পরিচিত করে তোলে। তিনি কেবল একজন সংগীতশিল্পী ছিলেন না, বরং সাংস্কৃতিক দূত হিসেবেও খ্যাতি লাভ করেন।

জাকির হোসেনের সুর, তাল এবং বাদন নিয়ে তার অসামান্য দক্ষতা এবং সৃষ্টিশীলতা তাকে পৃথিবীজুড়ে শ্রদ্ধার পাত্র করে তোলে। পশ্চিমী ক্লাসিক্যাল সংগীত, জ্যাজ এবং বিশ্ব সংগীতের ক্ষেত্রে তিনি অসংখ্য শিল্পীর সাথে সফলভাবে সহযোগিতা করেছেন, যার মধ্যে জর্জ হ্যারিসন, জন মাকলফলিন এবং রবি শঙ্করের মতো বিশিষ্ট শিল্পী রয়েছেন। তার ‘শক্তি’ নামক যৌথ প্রজেক্ট সংগীতের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে, যা আজও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছে।

একজন শিক্ষক হিসেবে জাকির হোসেন নতুন প্রজন্মের সংগীতশিল্পীদের প্রতি ছিলেন অত্যন্ত নিবেদিত। তার শিক্ষা এবং প্রদর্শনীগুলো ছিল অত্যন্ত প্রাণবন্ত, নির্ভুল এবং গভীর। জাকির হোসেন আন্তর্জাতিক সংগীত উৎসবসহ বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী শিল্পীদের একত্রিত করেছেন, যা সংগীতের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করেছে।

জাকির হোসেন সংগীতের জগতে তার অসাধারণ অবদান রেখে গেছেন, যার জন্য তিনি অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, যার মধ্যে ভারতের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান, পদ্মভূষণ অন্তর্ভুক্ত।

গ্র্যামি পুরস্কারে ভূষিত জাকির হোসেন। তার কোলাবরেশন অ্যালবামের জন্য এই পুরস্কার পান তিনি। এবং গ্র্যামির মঞ্চে দেখা গিয়েছিল সাদা রঙের পোশাকে। শিল্পীকে শুধু যে তবলায় বোল তুলতে দেখা গিয়েছিল এমনটা নয়। বরং, তিনি কিছু ছবিতে মিউজিক কম্পোজার হিসেবে কাজ করেছেন। তার মধ্যে হিট অ্যান্ড ডাস্ট এবং ইন কাস্টডি উল্লেখযোগ্য।

এমআইকে