দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ১০ নভেম্বর উপদেষ্টা হিসেবে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ গ্রহণ করেছেন এই নির্মাতা। 

এরপর থেকেই শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বিশেষ করে ফারুকীর অতীতের বিভিন্ন ফেসবুক স্ট্যাটাস ও আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন একদল মানুষ। 

বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেও আলোচনা বন্ধ করতে পারেননি এই নির্মাতা। এবার ফারুকীর হয়ে বৈঠা ধরলেন ‘মহানগর’ খ্যাত নির্মাতা আশফাক নিপুণ।

রোববার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে নিপুণ লিখেছেন, , ‘মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে আওয়ামী দোসর বলা হাস্যকর’।

এর ব্যাখ্যা দিয়ে নির্মাতা লেখেন, ‘দুঃখজনক না বলে হাস্যকর বললাম কারণ খোদ কট্টর আওয়ামী শিল্পী সমাজ থেকে শুরু করে ক্যাডার বাহিনী পর্যন্ত তাকে নিজেদের দলে দেখতে আগেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন নাই, এখনো করবেন না।’

তবুও ফারুকীকে নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে দেখে নিপুণের ভাষ্য, ‘উনার পুরোনো কিছু স্ট্যাটাস, ছবিই যদি অকাট্য প্রমাণ হয় তাহলে তার বিপরীতে গত ১৫ বছরে, বিশেষ করে জুলাই আন্দোলনে নিরন্তর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারকে সমালোচনা করে উনার ফেসবুক পোস্টও আমলে নেওয়া হোক? যেগুলো নিয়ে আওয়ামী শিল্পী সমাজ থেকে শুরু করে খোদ পলাতক প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত চূড়ান্ত বিরক্ত ছিলেন? অথবা আওয়ামী সরকারের আমলে দুইবার উনার সিনেমা আটকে দেয়া আমলে নেয়া হোক?’

অতীতের ফেসবুক পোস্ট নয়, বরং ফারুকী তার নতুন দায়িত্ব কীভাবে পালন করছেন–আলোচনা-সমালোচনা সেটার ভিত্তিতে হওয়া উচিত বলে করছেন আশফাক নিপুণ। তার কথায়, ‘উনি (ফারুকী) দেশে-বিদেশে সংস্কৃতি অঙ্গনের বিখ্যাত মানুষ, জুলাই আন্দোলনেরও বহুকাল আগে থেকেই ফ্যাসিস্ট সরকারের সমালোচনায় সরব, স্পিরিটে তরুণ তাই হয়ত উনার এই নিয়োগ। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই আন্দোলনের স্পিরিট, ডকুমেন্টস ধারণ করার মত কাজ উনি যদি করে দেখাতে না পারেন তাহলে আমিও উনার সমালোচনা করব। ১০০ বার করব। কিন্তু কাজটা তো করে দেখানোর সুযোগ দিতে হবে আগে।’

নিপুণ প্রশ্ন তোলেন, ‘ছোট মুখে বড় একটা কথা বলি তাহলে, বেয়াদবি মাফ করবেন। এই ছাত্র জনতার আন্দোলনে সম্পৃক্ত অনেককেই আমরা চিনি, জানি যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ দুইভাবেই জীবনের কোনো না কোনো সময়ে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত ছিল। কেউ ইচ্ছাকৃত, কেউ অনিচ্ছাকৃত, কেউ কৌশলে আর কেউ বাধ্য হয়ে ছিল। কিন্তু আন্দোলনের স্পিরিটে ফ্যাসিস্ট তাড়াতে সবাই এক হয়ে গিয়েছিল। এই ঐক্যই ছিল আমাদের শক্তি। এখন এই ডিভাইড এণ্ড রুল পলিসি কেন? কার বা কাদের সুবিধার জন্য?’

সবশেষ উপদেষ্টা ফারুকীর কাছে নিজের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে নিপুণ লিখেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এই মহান আন্দোলনকে ডকুমেন্টেড করার জন্য উনার সেবাবলে সর্বোচ্চটাই ঢেলে দিবেন। সেই সক্ষমতা উনার এবং উনার টিমের আছে। আমি সাগ্রহে তাকিয়ে আছি উনি আমাদের কি কি উপহার দিতে পারেন সেদিকে। না পারলে তখন উনাকে গালমন্দ কইরেন।’

এনএইচ