দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ থাকার পর বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিকেল ৪ টা ২০ মিনিটে রাজধানীর গ্রিন রোডের নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা মাসুদ আলী খান।

অভিনেতার মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে মিডিয়া পাড়া। বিভিন্নজনের স্মৃতিচারণায় উঠে আসে মাসুদ আলী খানকে নিয়ে নানা গল্প। 

তেমনই এক আলোচনায় অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম জানালেন, অভিনেতার পরিচয়ের বাইরে আরও একটি পরিচয় ছিল মাসুদ ভাইয়ের। একসময় ভালো বক্সার ছিলেন তিনি। 

শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, একটা মানুষের এত বর্ণাঢ্য জীবন। চাকরি থেকে অভিনয়, সব জায়গাতেই একজন হিরো ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, বক্সার হিসেবেও সুনাম ছিল বরণ্য এই অভিনেতার। 

তিনি আরও বলেন, পাঁচ বছর আগে আমার নির্মিত একটি নাটকে বক্সিং নিয়ে কিছু একটা করার পরিকল্পনা করি। সে জন্য বক্সিংয়ের বিভিন্ন সরঞ্জাম কিনেছিলাম। নাটকটি কমেডি ঘরানার হলেও খুশি হয়েছিলেন মাসুদ ভাই।

জানা গেছে, শোবিজে শহীদুজ্জামান সেলিম নামে পরিচিতি পেলেও সার্টিফিকেটে নাম শহীদুজ্জামান খান। তবে অভিনয়ে নামের শেষে খান ছেঁটে ফেলেন তিনি। এ কারণে অভিমান করেছিলেন মাসুদ আলী খান। নামের শেষে খান ছেঁটে ফেলার বিষয়ে মাঝে মধ্যেই মাসুদ আলী খানের নানান প্রশ্নের সম্মুখীন হতেন শহীদুজ্জামান সেলিম।

এ প্রসঙ্গে অভিনেতা বলেন, আমার সার্টিফিকেট নাম শহীদুজ্জামান খান। পর্দায় খান বাদ দিয়ে শুধু শহীদুজ্জামান সেলিম ব্যবহার করি। আর এতেই অভিমান করেছিলেন মাসুদ ভাই। প্রায়ই আমাকে বলতেন, ‘এই তুই খান বাদ দিলি কেন?’

শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, আমার বাসাতেও আসা-যাওয়া ছিল মাসুদ ভাইয়ের। শুটিংয়ের বাইরেও আড্ডায় একসঙ্গে অনেক দিন-রাত কেটেছে আমাদের। আমার পরিবারের সঙ্গেও বেশ হৃদ্যতা ছিল তার।

প্রসঙ্গত, মাসুদ আলী খানের জন্ম ১৯২৯ সালে ৬ অক্টোবর মানিকগঞ্জের পারিল নওধা গ্রামে। বাবা আরশাদ আলী খান ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। মাসুদ আলী খান ১৯৫৫ সালে বিয়ে করেন তাহমিনা খানকে। ব্যক্তিজীবনে এই অভিনেতার এক ছেলে ও এক মেয়ে। চাকরিজীবনে সরকারের নানা দফতরে কাজ করেছেন। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের সচিব হিসেবে চাকরি থেকে অবসর নেন। পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে একের পর এক বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাসুদ আলী খান।

এনএইচ