একুশে পদকপ্রাপ্ত খ্যাতিমান অভিনেতা মাসুদ আলী খানের মৃত্যুতে শোক বইছে দেশের বিনোদন অঙ্গনে। বরেণ্য এই অভিনেতা ছিলেন দেশের অনেক কলা-কুশলীদের সহশিল্পী; কারও কারও কাছে ছিলেন অভিভাবকের মতো।

মাসুদ আলী খানের সঙ্গে কাজ করেছেন দেশের অনেক নামী নির্মাতা, অভিনয়শিল্পীরা। তাদের কাছে এই অভিনেতা রেখে গেছেন বহু স্মৃতি। সামাজিক মাধ্যম এমনকি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সদ্য প্রয়াত এই অভিনেতাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করছেন তারা।

মাসুদ আলী খানের সঙ্গে বহু ধারাবাহিক, নাটক ও ছবিতে কাজ করেছেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ফারুকীর “আমার একান্নবর্তী” ও “৬৯” ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন মাসুদ। আর সেই সহশিল্পীর মৃত্যু সংবাদ পেয়েই শোকস্তব্ধ নির্মাতা। সামাজিক মাধ্যমে ফারুকী লিখেছেন, ‘কিছু স্মৃতি লেখা কঠিন। আমরা অনেক ঘণ্টা, দিন, মাস কাটিয়েছি, একসঙ্গে কাটিয়েছি। স্মৃতি ছুটে আসছে, জানি না কোনটা উল্লেখ করব! বিদায় মাসুদ ভাই।’

মাসুদ আলী খানের মৃত্যুতে স্মৃতিচারণ করেছেন অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। জানান, ফারুকীর সেই ‘৬৯’ সিরিজে মাসুদের সঙ্গে কাজ করেছিলেন অভিনেত্রী। এখন শেষ স্মৃতি হিসেবে মাসুদ রেখে গেছেন সেই হাসিমুখটি।

এক ফেসবুক পোস্টে তিশা লিখেছেন, ‘২০০৩-এ আমার বাবা মারা যাওয়ার পরে আমার ‘৬৯’ সিরিজ শুরু করি। সেখানে মাসুদ আলী খান আমার বাবার চরিত্রে ছিলেন। দেড়-দুই বছর আমাদের ‘৬৯’ এর শ্যুটিং চলে।ধীরে ধীরে উনি আমার বাবার মতোই হয়ে যান।’

তিশা লেখেন, ‘শেষ তার (মাসুদ) সাথে যখন আমার দেখা হয়েছে একটা অ্যাওয়ার্ড শো-তে। তখন উনি হুইল চেয়ারে বসা। আমার হাতটা ধরে বললেন, “মা কি অবস্থা? কেমন আছিস? বাচ্চা কেমন আছে? সরয়ার কেমন আছে?” আমি হাসি মুখে তার হাঁটুর কাছে বসে বললাম, “সবাই ভালো আছে, বাবা। আলহামদুলিল্লাহ!”’

শেষে তিশা লেখেন, ‘তার সাথে আমার শেষ স্মৃতিটি ছিল তার সেই হাসি মুখটি! আজ উনি এই পৃথিবীতে নেই, রেখে গেছেন অনেক স্মৃতি। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।’

গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টা ২০ মিনিটে রাজধানীর গ্রিন রোডের নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন মাসুদ আলী খান। মৃত্যুকালে অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বার্ধ্যক্যজনিত সমস্যায় ঘরে পড়ে যান এই অভিনেতা। চিকিৎসাও চলছিল, কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন মাসুদ।

ডিএ