প্রতীকী ছবি

শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টলিউডে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দেয় উইমেন্স ফোরাম। অভিযোগ, তার ঠিক এক দিন আগে অর্থাৎ শুক্রবার এক মেগা ধারাবাহিকের নায়িকা হেনস্থার শিকার হয়েছেন। 

জানা গেছে, ধারাবাহিকের অভিনেত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট শৌচাগারে বরাদ্দ ছিল। সেখানকার একটি ফাটল দিয়ে নাকি তার ভিডিও তোলার চেষ্টা করেন এক টেকনিশিয়ান।

শনিবার রাতে নায়িকার অভিযোগবার্তা ছড়িয়ে পড়তেই তোলপাড় টলিপাড়া। এ-ও শোনা গেছে, বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার প্রবল চেষ্টা হয়েছে। তাই ছড়িয়ে পড়তে সময় লেগেছে। 

ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, ‘অভিযুক্তের সদস্যপদ কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ প্রযোজক স্নেহাশিস চক্রবর্তীর দাবি, ‘আমি জ্বরে বিছানায়। বিষয়টি জানার পর সঙ্গে সঙ্গে শুটিং বন্ধের নির্দেশ দেই। নায়িকা স্বাভাবিক হওয়ার পর কাজ শুরু হয়েছে।’

স্নেহাশিসের ব্লু’জ প্রযোজনা সংস্থার এই ধারাবাহিকটি প্রায় এক বছর ধরে চলছে। তারও আগে থেকেই নাকি প্রযোজক অভিযুক্ত টেকনিশিয়ানকে চেনেন। কখনো কোনো অন্যায় চোখে পড়েনি।

তবুও তার এমন কাণ্ডের ব্যাখ্যা নেই প্রযোজকের কাছে। তার কথায়, ‘একই প্রশ্ন আমারও। কোনোদিন চোখ তুলে, উঁচু গলায় কারও সঙ্গে কথা বলেননি ওই টেকনিশিয়ান। তার নামে এ রকম কোনও অভিযোগ উঠবে, কোনও দিন ভাবতেই পারিনি।’ 

সেই সঙ্গে তিনি এ-ও জানান, সেটে মেয়েরা যথেষ্ট নিরাপদ। তিনি আলাদা করে তাই নিরাপত্তা রক্ষীও রেখেছেন। তারপরেও কী করে অঘটন ঘটল, বুঝতে পারছেন না। 

প্রযোজকের কথায়, ‘সেটে উত্তেজনা ছড়াতেই সাময়িক শুটিং বন্ধ করার নির্দেশ দেই। নায়িকা স্থির হওয়ার পর যোগাযোগ করি। তার সঙ্গে কথা বলেই রোববার থেকে আবার শুটিং শুরু হয়েছে।’

শনিবার রাতারাতি টলিউডের এক কেশসজ্জা শিল্পীর আ ত্ম হ ন ন চেষ্টার খবর ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে। সংবাদমাধ্যমে সেই খবর শিরোনামে। অথচ তার আগে ঘটে যাওয়া এই অঘটনের কথা প্রকাশ্যে আসতে প্রায় এক দিন লেগে গেল।

কথা তুলতেই আনন্দবাজার অনলাইনকে উত্তর দিয়েছেন ধারাবাহিকের পরিচালক রূপম বাগ। তার কথায়, ‘শুক্রবার শুটিং শেষ হওয়ার পর ঘটনাটি ঘটে। তখন বেশ রাত হয়ে গেছে। ঘটনার পর নায়িকা স্বাভাবিকভাবেই মানসিক দিক থেকে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। কারণ, এখন নানা ধরনের সাইটে এই ধরনের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে।’

পরিচালক জানিয়েছেন, শনিবার সারা দিন উত্তেজনা ছিল সেটে। একটা সময়ের পর বন্ধও হয়ে যায় কাজ। অভিযুক্তকে দফায় দফায় জেরা করেন সেটের বিভিন্নজন। দীর্ঘ টালবাহানার পর তিনি অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন।

ঘটনার সত্যতা জানতে আনন্দবাজার যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল নায়িকার সঙ্গেও। পর্দায় তিনি দাপুটে আইনজীবী। সমস্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে জোর গলায় কথা বলেন। প্রয়োজনে নিজের পরিবারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেও তার বুক কাঁপে না। 

বাস্তবে তিনিই হলেন অন্যায়ের শিকার। কীভাবে সামলাচ্ছেন বিষয়টা? একাধিক ফোনের পরেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

তবে একাধিক অভিনেত্রীর অভিযোগ, পুরো ঘটনা নাকি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনকি, নায়িকাকে নাকি থানায় অভিযোগ দায়ের করতেও দেওয়া হচ্ছে না। কারণ, থানায় গেলে সংবাদমাধ্যমে এই খবর ছড়িয়ে পড়তে পারে। পাশাপাশি, নায়িকাকে নাকি এ-ও বোঝানো হয়েছে, এই অভিজ্ঞতা প্রকাশ্যে এলে তিনিই উল্টো কালিমা লিপ্ত হবেন। 

এদিকে এ ঘটনার পরপরই সেই টেকনিশিয়ানের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। জেরার সময় অভিযুক্তকে নাকি মারধরও করা হয়েছে। তবে থানায় এখনও পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি। 

এনএইচ