সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ যুক্তরাজ্যে ২৫০ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা) খরচ করে ৩৬০টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন। সম্প্রতি এই তথ্য প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

আল জাজিরার অনুসন্ধানী ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে ২৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ৩৬০টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন। নিজের রিয়েল স্টেট ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেছেন ব্রিটেন ছাড়াও দুবাই, নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ায়।

সেই প্রতিবেদনে জাভেদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় আল জাজিরার প্রতিবেদককে। যেখানে নিজের সম্পত্তি ও দেশের বাইরে অবস্থান প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই তার ‘অট্টহাসি’ শোনা যায় জাভেদের কণ্ঠে।

সেই ‘অট্টহাসি’ নিয়েই একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘খ্যা খ্যা খ্যা খ্যা....আওয়ামী মন্ত্রী জাভেদের হাজার হাজার কোটি টাকা মানি লন্ডারিং এবং লন্ডনে ৩৬০টি বাড়ি নিয়ে আল জাজিরার ভয়াবহ ডকুমেন্টারিটা দেখার পরে অনেক কিছু মাথায় ঘুরেছে আমার। কিন্তু সব প্রশ্ন-ক্ষোভ ছাপিয়ে আমার কানে এখনো বাজছে জাভেদের সেই খ্যাকখ্যাকে হাসি।’

এরপর ফারুকী লেখেন, ‘এই খ্যাকখ্যাকে হাসিটা হচ্ছে বাংলাদেশের প্রতি তাদের উপহাস। এই খ্যাকখ্যাকে হাসি জাবেদের একার না। এই খ্যাকখ্যাকে হাসি এস আলম গ্রুপের, শেখ হাসিনার, শেখ রেহানার, বেনজিরের, আজিজের, বেসিক বাচ্চুসহ হাজারে হাজার লুটেরার। এই হাসি, যারা গত ১৭ বছর দেশটাকে ফোকলা বানিয়েছে তাদের সবার। এই হাসি. ওইসব অফিসারের যারা শত শত মানুষকে গুম করেছে, খুন করেছে।’

ফারুকী আরও লেখেন, ‘যারা বাবা হারিয়েছে, যারা সন্তান হারিয়েছে এই খ্যাকখ্যাকে হাসি তাদের কানে বর্শার ফলার মত বিধঁছে। এই খ্যাকখ্যাকে হাসি বিডিআর বিদ্রোহে নিহত অফিসারদের পরিবারের কানে বর্শার ফলার মত বিধঁছে।’

একটি ঘটনার উদাহরণ টেনে এই নির্মাতা লিখেছেন,  ‘আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে কিছুদিন আগে তৃতীয় মাত্রায় ইন্টারভিউতে বিডিআর ঘটনা তদন্তের সমন্বয়ক ক্যাপ্টেন সুবায়েল বলেছিল, তাকে শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছিল তদন্ত রিপোর্ট পরিবর্তন করতে। পরিবর্তন না করাতে সেনাবাহিনীর সেই সারভিং অফিসারকে শেখ হাসিনা ৩৪০ দিন গুম করে রাখে। আপনি ভাবতে পারেন রাষ্ট্র কোন জায়গায় গিয়েছিল? এটাকে কি রাষ্ট্র বলা যেত? নাকি এটা কতিপয় মাফিয়ার লুটপাট,খুন,গুমের সিন্ডিকেটের মহোৎসব হয়ে উঠেছিল।’

এরপর আল জাজিরাকে ধন্যবাদ দিয়ে নতুন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফারুকী লেখেন, ‘আল জাজিরাকে ধন্যবাদ এরকম ডকুমেন্টারি করার জন্য। এই সরকার এবং এরপরে যে সরকার নির্বাচিত হয়ে আসবে দুই সরকারের প্রতি আমার আহ্বান থাকলো, আপনারা এই ১৬ বছরের অপরাধের ফিরিস্তিগুলো তুলে ধরার ব্যবস্থা করেন অডিও ভিজ্যুয়াল মাধ্যমে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বেদনার গল্পগুলো তুলে ধরেন। আমি জানি, এর সংখ্যা প্রচুর হবে, হাজার এপিসোড ফুরিয়ে যাবে তবুও এই ফিরিস্তি শেষ হবে না। কিন্তু আমাদের কাজ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এই ডকুমেন্টেশনগুলা করে যাওয়া। এটা ফিকশন হতে পারে, ফিকশন এবং ডকুমেন্টারীর মিশেল হতে পারে। এটা নানা হাইব্রিড ফরমেটে হতে পারে। এই কাজগুলো আমাদের করে যেতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কোনদিন কোন রাজনৈতিক দল, কোন রাজনৈতিক নেতা, কোনভাবে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার সাহস আর না করে।’

এনএইচ