বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে দমিয়ে রাখতে ছাত্রদের ওপর বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনায় মত্ত ছিল হাসিনাপন্থী তারকারা। সরকার পতনের আগ মুহূর্তেই এসব পরিকল্পনার সুতো বাঁধা হচ্ছিল। চাটুকার খ্যাতি পাওয়া সেসব তারকাদের কাজ ছিল, বিনোদন জগতে কারা ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে, আর কারা বিপক্ষে, তা চিহ্নিত করা। বলে রাখা ভাল, ছাত্র আন্দোলন চলাকালে দেশের তারকা অঙ্গন দু ভাগে বিভক্ত হয়।

সম্প্রতি দেশে 'আলো আসবেই' নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অভ্যন্তরীণ কথা ফাঁস হয়ে যায়। সেখান থেকেই পাওয়া যায় এসব ভয়ঙ্কর তথ্য। সেই গ্রুপে অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস শিক্ষার্থীদের গায়ে গরম পানি ঢেলে দিতে বলেছেন। আবার কখনও আন্দোলনের পক্ষে যারা প্রোফাইল লাল করেছিলেন তাদের চিনে রাখা এবং পরবর্তী সময়ে ‘সাইজ করার’ হুমকিও দিয়েছেন।

শুধু এতেই থেমে যাননি অরুণা। নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে ‘হারামজাদা’, বিভিন্ন ব্যক্তিকে ‘রাজাকার’ তকমা দেওয়া, আবার শিল্পীদের স্ট্যাটাস-কর্মকাণ্ডে তুলে ধরে তাদেরকে চিহ্নিত করে রাখতে বলেছেন এই অভিনেত্রী।

এর মধ্যে ছাত্রদের পক্ষ নেওয়ায় সংগীতশিল্পী ও গান বাংলা টেলিভিশনের কর্ণধার কৌশিক হোসেন তাপসকে উদ্দেশ্য করে অরুণা বিশ্বাসের একটি মেসেজ ছিল, ‘এই যে দেখেন সরকারের প্রিয় মানুষ তাপস (গান বাংলা)। বয়স যদি কম থাকত পিটাইতে পিটাইতে বাবা ডাক শিখাইতাম।’

এদিকে অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস গোপনে দেশ ছেড়ে কানাডায় পাড়ি জমিয়েছেন বলে খবর এসেছে। শিল্পীর ঘনিষ্ঠজনের বরাতে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে ঢাকা পোস্ট। শেখ হাসিনার সরকার পতনের পরপরই নিজের কৃতিকর্মের পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরেই দেশত্যাগ করেছেন এই অভিনেত্রী।

উল্লেখ্য, ‘আলো আসবেই’ নামের সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত ও চিত্রনায়ক রিয়াজ। আরও ছিলেন  অভিনেত্রী শামীমা তুষ্টি, তানভীন সুইটি, সোহানা সাবা, অরুণা বিশ্বাস, অভিনেতা সাজু খাদেমসহ আরও অনেকেই।

বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অন্যান্য তারকাদের মাঝে বেশ উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সামাজিক মাধ্যমে অনেক তারকারা সেই অভিযুক্তদের নিয়ে নিন্দাও প্রকাশ করেন, ধিক্কার জানান।

ডিএ