আন্দোলনের নামে গুন্ডামি চলছে, গর্জে উঠলেন কাঞ্চনের স্ত্রী
কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিতর্কিত মন্তব্য করে তোপের মুখে পড়েছেন তৃণমূলের বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক।
অপরাধীদের বিচারের দাবিতে পশ্চিমবঙ্গে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে অভিনয়শিল্পীরা রাজপথে নেমে আন্দোলন করছেন। তাদের সেই দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে চিকিৎসকরা বিক্ষোভ করছেন, কর্মবিরতি পালন করছেন।
বিজ্ঞাপন
এমন অবস্থায় স্রোতের বিপরীতে হেঁটে কর্মবিরতিতে থাকা চিকিৎসকদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে কাঞ্চন মল্লিক বলেছেন, ‘কর্মবিরতি পালন করছেন শাসকদলের বিরুদ্ধে, ভালো কথা। সরকারি বেতন-বোনাস নেবেন তো?’
ব্যস, কাঞ্চনের এমন প্রশ্ন শিল্পী সমাজে ক্ষোভের আগুন যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সহকর্মী থেকে শুরু করে ভক্তরা- কেউ ছেড়ে কথা বলেননি তৃণমূলের এই বিধায়ককে।
অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীর সঙ্গে অনেক কাজ করেছেন কাঞ্চন মল্লিক। ব্যক্তিগত জীবনেও তাদের মাঝে বন্ধুত্বের সম্পর্ক। তবে অভিনেতার এমন প্রশ্নের পর তার সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন, যা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। এ অভিনেতা লেখেন, ‘ঘাঁটা মল্লিক, চাটা মল্লিক, ফাটা মল্লিক, টা টা মল্লিক।’ ঋত্বিকের এমন ব্যঙ্গাত্মক পোস্টের সঙ্গে নেটিজেনদের বড় অংশ সহমত পোষণ করেছেন।
কাঞ্চনের সমালোচনায় যখন মেতে উঠেছে নেটদুনিয়া, তখন তার পাশে দাঁড়িয়েছেন অভিনেত্রী স্ত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ। স্বামীর পক্ষ নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আন্দোলনের নামে গুন্ডামি’ চলেছে। পাশাপাশি সুদীপ্তাকেও পাল্টা জবাব দিয়েছেন কাঞ্চনপত্নী।
আরও পড়ুন
অভিনেত্রী দাবি করেন, যে ঘটনাটি ঘটছে, সেটা নারকীয়। তিনি বিচার চান। পাশাপাশি, যারা কাঞ্চনকে কটাক্ষ বিদ্ধ করেছেন, তাদের কাছে জানতে চান, ‘শুধু আরজি কর-এ নয়, আমাদের ইন্ডাস্ট্রির অন্দরেও অনেক আকস্মিক মৃত্যু হয়। তখন কি আন্দোলনে নেমে পড়ি? কাজ থেমে থাকে? শুধু সিরিয়ালের নিচে লেখা হয় অমুক চরিত্রটা বদলে গেলেন। সেখানে চিকিৎসকদের তো দায়িত্বটা আরও বেশি, সেটাই বলতে চেয়েছে কাঞ্চন। আমরা কিন্তু সবাই সুবিচার চাইছি। তদন্তের ভার রাজ্যের হাত থেকে কেন্দ্রে গিয়েছে। বড় বড় মানুষরা বিচার করছেন। এখানে চিৎকার করে রক্তবন্যা বইয়ে দিচ্ছি। আন্দোলনের নামে গুন্ডামি হচ্ছে।’
শ্রীময়ীর কথায়, ‘বহু গরিব মানুষ রয়েছেন, যাদের বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার সামর্থ্য নেই। সে কারণে কাঞ্চন বলেছেন যাতে চিকিৎসকরা কাজে ফেরেন। এখন বলবেন, তৃণমূল বিধায়কের স্ত্রী এটা বলছে। আসলে যারা এসব সামাজিক মাধ্যমে লিখছেন, তাদের কাজ এখানেই লেখা। নিজেদের বুদ্ধিজীবী ভাবেন। তারা দেখাতে চান সব বিষয়ে তাদের জ্ঞান রয়েছে।’
ব্যক্তিগত আক্রমণের বিষয়ে শ্রীময়ী দাবি করেন, ‘যারা আজ কাঞ্চনের বিয়ে নিয়ে কথা বলছেন, তারা নিজেদের দিকে একটু দেখুন। তাদেরও তো অনেক বন্ধু ছিল। আমি অনেককেই দেখেছি সরকারের সুসময়ে হেসে হেসে মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিয়েছেন। সরকার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করছেন। কিন্তু কঠিন সময়ে এলে আবার তাকেই বিঁধছে।’
সুদীপ্তা, ঋত্বিকের করা পোস্ট প্রসঙ্গে শ্রীময়ী সাফ কথা, ‘সুদীপ্তাদি যদি কাঞ্চনকে বন্ধু বলে ভাবতেন, তাহলে একটা ফোন করতে পারতেন। সেটা তো করেননি। তার যা ভাল মনে হয়েছে, লিখেছেন সামাজিক মাধ্যমে। তবে, সুদীপ্তাদি ভালোই করেছেন। এ রকম বন্ধু না থাকাই ভালো। আর যারা চটি চাটা বলেছেন, কাঞ্চন বিধায়ক বলেই এসব বলছেন।’
এনএইচ