টলিউড অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক দীর্ঘ পোস্টে দাবি করেছেন, একই অভিজ্ঞতা হয়েছে তার ও টলিপাড়ার অন্য অভিনেত্রীদের।

সম্প্রতি মালয়ালম চলচ্চিত্র জগতে যৌন হেনস্তার ঘটনা নিয়ে ‘হেমা কমিশন’ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ঋতাভরী আবেদন করলেন, যাতে পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্র জগতেও হেনস্তা নিয়ে দ্রুত তদন্ত শুরু হয়।

ঋতাভরী তার পোস্টে লেখেন, ‘মালয়ালম চলচ্চিত্র জগতের যৌন হেনস্তার ঘটনা প্রকাশ্যে এনেছে হেমা কমিশনের রিপোর্ট। আমি ভাবছি, বাংলা চলচ্চিত্র জগতে কেন এ ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে না? প্রায় একই ধরনের ঘটনা আমার সঙ্গে ঘটেছে। জানি আরও কয়েকজন টলিপাড়ার অভিনেত্রীর সঙ্গেও ঘটেছে।’

বাংলা ছবির জগতের নায়ক, পরিচালক ও প্রযোজকেরা ঋতাভরীর পোস্টে অভিযুক্ত। তিনি লিখেছেন, ‘নায়ক, প্রযোজক ও পরিচালকেরা ঘৃণ্য মানসিকতা নিয়েও কাজ করে চলেছেন। তাদের এসব কাজের কোনো শাস্তি বা পরিণতি নেই। আরজি করের ঘটনায় এদের মোমবাতি হাতে হাঁটতে দেখা গেছে, যেন ওরা নিজেদের মহিলাদের মাংসপিণ্ডের থেকে বেশি কিছু ভাবেন।’

হুঁশিয়ারি দিয়ে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘এই হত্যাকারীদের মুখোশ খুলে দিতে হবে। এই দানবদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য আমার সমসাময়িক সব অভিনেত্রীকে ডাক দিচ্ছি। আমি জানি তোমরা কাজ হারানোর ভয় পাচ্ছ। এই পুরুষদের অধিকাংশই প্রভাবশালী বলেই তোমরা ভাবছ, কোনোদিন হয়ত কাজ পাবে না। কিন্তু আর কত দিন আমরা চুপ করে থাকব? নতুন অভিনেত্রীরা স্বপ্ন নিয়ে এ জগতে আসেন। তারা বিশ্বাস করতে বাধ্য হন যে এই জগৎ মিষ্টি কথায় মুড়ে রাখা গণিকালয় ছাড়া আর কিছু নয়। এ অভিনেত্রীদের প্রতি কি আমাদের কোনো দায়িত্ব নেই?’

সেই পোস্টের ক্যাপশনে ঋতাভরী মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখেন, ‘দিদি, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতেও তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে, এখনই। এটাকে গুরুত্ব দেওয়ার আগে আরও একটি ধর্ষণ বা যৌন হেনস্তার ঘটনা ঘটে যাক, আমরা চাই না। রুপোলি দুনিয়ায় রয়েছি বলে পুরুষরা আমাদের পণ্য বা তাদের যৌন তৃষ্ণা মেটানোর মাধ্যম হিসেবে দেখবে এটা হতে পারে না।’

এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ জানিয়ে আদৌ লাভ হবে না বলে আগেই জানিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মহিলা কমিশনের সভাপতি লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। টলিপাড়ায় নারী হেনস্তার ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে এসে অভিযোগ করতে ভয় পান বলে মনে করা হয়।

লীনা বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ করলে জনমত তৈরি হয়। পক্ষে-বিপক্ষে মতামতের আদান-প্রদান শুরু হয়। কিন্তু এভাবে তো তিনি ন্যায়বিচার পাবেন না। তাই নির্দিষ্ট ফোরামে অভিযোগ দায়ের করা উচিত।’

এসএসএইচ