গত দুইদিন ধরে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে কথার লড়াইয়ে জড়িয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন ও অভিনেত্রী এলিনা শাম্মী। যার শুরুটা শাম্মীর হাত ধরে। 

এই অভিনেত্রী দাবি করেন, ভারতে ‘দরদ’ সিনেমায় ১৯ দিন শ্যুটিং করিয়ে মামুন তাকে মাত্র ১৬ হাজার টাকা দিয়েছেন। চুক্তি অনুযায়ী বাকি টাকা এখনও দেননি। নির্মাতর কাছ থেকেও কোনো সহযোগীতা পাননি। 

অভিনেত্রীর এমন অভিযোগের জবাবে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে মামুন বলেন, এলিনা প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা করে নেওয়ার চুক্তি করেন। কিন্তু একপর্যায়ে অভিনেত্রী তার কাছে দাবি করেন, সম্ভব হলে তিনি যতটুকু পারেন, মামুন যেন তাকে সেই পারিশ্রমিক দেন। 

সেই ঘটনার ব্যাখ্যায় মামুন লেখেন, ‘কালও যখন আমার সাথে কথা হল, তখনও বলল আপনারা ইচ্ছামতো দিয়েন। আমি সেটার ছবিসহ প্রমাণ দিলাম।’

এলিনার দাবি করেছিলেন যে তিনি ১৯ দিন দরদে কাজ করেছিলেন। সে ব্যাখ্যায় মামুন উল্লেখ করেন, ‘উনি ৫ দিন কাজ করেছেন। যেহেতু শ্যুটিং ভারতে হয়েছে আমি উনাকে বলি আপনার শ্যুটিং কিন্তু ৫ দিন। উনি বললেন না মামুন ভাই পুরো শ্যুটিং টাই আমি থাকতে চাই। নতুন কিছু শিখব। এক শিল্পীকে হোটেল ভাড়া দিয়ে ১৯ দিন রাখতে কত টাকা খরচ হয় সেটা আপনারা জানেন।’

অভিনেত্রী এলিনাকে কোন সিনেমায় টাকা দেওয়া হয়নি, এমন অভিযোগের ব্যাখ্যায় মামুন লেখেন, ‘উনার কাছে কি কোন চুক্তিপত্র আছে যে উনি আমার কাছে টাকা পাবেন। আর টাকা পেলেও সেটা প্রোডাকশন হাউজের কাছে পাবে। পরিচালক ও শিল্পীদের মত চুক্তিবদ্ধ কারিগর।’

সবশেষ এলিনার উদ্দেশ্যে এই নির্মাতা বলেন, ‘বলতে চাই আপনার যদি এতই অভিযোগ থাকে তাহলে সেটা ২০২৩ নভেম্বরের শ্যুটিং শেষ হওয়ার পর বলা উচিত ছিল। এত দিন পরে কেন? উত্তর টা হল এখন সবাইকে জানাতে হবে আপনি দরদ সিনেমায় কাজ করেছেন। এবার চরম সত্য একটা কথা বলি এর আগেও আপনি একজন পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন, আর তখন আমরা মিডিয়ার মানুষ জানতে পারি এলিনা শাম্মী বলে আমাদের একজন শিল্পী আছে। আমার শিক্ষা হল আমি অনুরোধে কোন শিল্পীকে আর কাজে নিব না। চুক্তিপত্র ছাড়া কোন কাজ করব না। জানি, এই লেখার পরে আপনি হয়তো আরও অনেক অভিযোগ করবেন। আমি আপনাকে সম্মান করে সব অভিযোগ মেনে নিব।’

মামুনের এই স্ট্যাটাসের নিচেই আবার পাল্টা মন্তব্য করেন শাম্মী। যেখানে অভিনেত্রী লেখেন, ‘খুব ভালো করেছেন এই পোস্ট দিয়ে। এখানে আমার অন্যায় কোথায়? কি দিয়ে কি ঢাকতে চান? ধন্যবাদ, এটা আরও ভালো হলো। আরও অনেক স্ক্রিনশট আছে যেগুলো আমি দিয়ে দিচ্ছি। হোয়াটসঅ্যাপে আপনার গার্লফ্রেন্ড যেসব কথা আমাকে বলেছিলো, সেগুলো এবার পোস্ট দেওয়ার সময় এসেছে। আপনি যেগুলো লিখেছিলেন আর ভারতে শুটিংয়ের সময় কি করেছিলেন সব পোস্ট করার সময় এখনই।

অভিনেত্রীর এই মন্তব্যের জবাবে মামুন লেখেন, ‘জ্বি, সম্মানিত শিল্পী। আপনার তো আমাদের অফিসে এসে ২০ তারিখে কথা বলার কথা। তার আগেই আপনি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন। তার চাইতে বড় কথা এই অভিযোগগুলো আমাকেও কোনোদিন জানানি। আমার কথায় কি কোন ভুল আছে সম্মানিত শিল্পী?’

স্ক্রিনশট ফাঁসের জবাবে এই নির্মাতা লেখেন, ‘অবশ্যই আমি সেগুলোর অপেক্ষায় আছি সম্মানিত শিল্পী। সেটা আমি আমার স্ট্যাটাসের শেষ লাইনে লিখেছি। কারণ দশ মেয়েকে দিয়ে এসএমএস করে, সবাইকে আমার প্রেমিকা বানাইতে পারেন। আর দেখলেন তো আপনার আসল চেহারে বেরিয়ে এসেছে।’

প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাতে ফেসবুকে নাম প্রকাশ না করে নির্মাতা মামুনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলেন এলিনা শাম্মী। অভিনেত্রীর সেই অভিযোগের পরই অনন্য মামুন এক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘একজন অদক্ষ অভিনেতা আমার সিনেমায় কাজ না করতে পেরে এখন গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। টিজারে নিজের মুখটা না দেখতে পারাই কি কষ্ট?’

এরপরই পাল্টা জবাবে এলিনা বলেন, ‘সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি আমাকে ন্যায্য পাওনাটুকু দেননি। উলটো ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানান, আমি নাকি অদক্ষ অভিনেতা। অথচ আমি কখনোই লবিং করে কাজ করিনি। আমার যোগ্যতা বলেই তিনি তার কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করিয়েছেন। আর টিজারে দেখা যায়নি বলে আমার কষ্টের কথা বললেন। হ্যাঁ, আমি কষ্ট পেয়েছি। আমি গুরুত্বহীন কোনো চরিত্রে অভিনয় করিনি যে আমাকে রাখা যাবে না। আমি তো নায়িকা নই, চরিত্রাভিনেতা। আমার তো কাজ দিয়েই এগিয়ে যেতে হয়।’

এনএইচ