বিসিএসের প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে উত্তাল সারাদেশ। আর এর মধ্যে জড়িয়ে গেলেন সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসান খান!

দেশে এই মুহূর্তে আলোচনা, বিসিএসের প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত রয়েছেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তিন কর্মকর্তা ও সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ ১৭ কর্মকর্তা। ইতোমধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মূল আলোচনায় গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী। সেই আবেদ আলীর সূত্র ধরেই সামাজিক মাধ্যমে পরোক্ষভাবে নাম চলে আসে তাহসানের।

সেখানে তাহসানের নাম জড়াতেই নেটিজেনদের একাংশ সমালোচনা শুরু করেছে। যাচাই না করেই জনপ্রিয় এ গায়ককে নিয়ে আপত্তিজনক মন্তব্য করছেন তারা। এবার বিষয়টি নিয়ে সরব হলেন জনপ্রিয় গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক প্রিন্স মাহমুদ। এমন ঘটনায় পরোক্ষভাবে তাহসানের নাম আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। 

সম্প্রতি তাহসানের নাম জড়ানো নিয়ে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দিয়েছেন প্রিন্স মাহমুদ। প্রথম পোস্টে প্রিন্স বিষয়টিকে একেবারেই মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। প্রিন্সের কথায়, ‘তাহসানের নামে ছড়ানো খবরটি একেবারেই মিথ্যা, সম্পূর্ণ মিথ্যা। এসব খবর নজর অন্য দিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই। তাহসানের বাবা মা দুইজনেই অত্যন্ত সৎ মানুষ। ছোটবেলা থেকে দেখেছি। সাধারণ সরকারি কর্মকর্তাদের বাচ্চাদের মতো বড় হয়েছে তাহসান। কোনোরকম বিলাসিতা দেখিনি। যা তাহসানের অর্জন সমস্তটা গানের জন্যই।’

এর কয়েক ঘণ্টা পর অপর একটি পোস্ট দেন প্রিন্স মাহমুদ। সেখানে এক নেটিজেনের তাহসানের পক্ষ নিয়ে লেখা একটি পোস্ট শেয়ার করতে দেখা যায়। সেই নেটিজেন লিখেছিলেন, ‘মেসির মত খেলোয়ারের ট্রফি জিততে যেমন পেনাল্টি লাগে না, তেমন তাহসানের মত ছাত্রকে ফার্স্ট হতে প্রশ্নপত্র লাগে না।’

সেই পোস্ট শেয়ার করার পর ক্যাপশনে প্রিন্স মাহমুদ লেখেন, ‘তাহসান শুধুমাত্র শিল্প সাহিত্যেই অসাধারণ নন, তিনি শিক্ষা জীবনেও সেরা।’

সেই পোস্টের মন্তব্যঘরে হাজির হতে দেখা যায় খ্যাতিমান অভিনেত্রী সুবর্না মোস্তফাকে। তিনি প্রিন্স মাহমুদের কথার সঙ্গে একমত বলে প্রকাশ করেন।

প্রসঙ্গত, সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা ওঠে, বিসিএসের প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী তাহসানের মা ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম পিএসসির চেয়ারম্যান থাকাকালীন তার গাড়িচালক ছিলেন। সে সময়েও প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে জড়িত ছিলেন আবেদ। ফলে তাহসানের মায়ের নামও উঠে আসে। আর সে থেকেই গুঞ্জন ওঠে মা জিনাতুন নেসার চেয়ারম্যান থাকাকালীন ২৪ তম বিসিএসে পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হয়েছিলেন তাহসান। সেই পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে সেই পরীক্ষা পরবর্তীতে বাতিল করা হয়। এতে ভাইভাতে বাদ পড়েন তাহসান।

কিন্তু ফ্যাক্ট চেক বলেছে অন্য কথা। সামাজিক মাধ্যমে রিউমার স্ক্যানার গ্রুপে উঠে আসে- ২৪তম বিসিএসে ভাইভায় তাহসানের বাদ পড়ার বিষয়টি সত্য নয়। সেখানে বলা হয়েছে, ‘মূলত ২০০৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ২৪তম বিসিএস এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে ৩ মার্চ পরীক্ষাটি বাতিল করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি)। পরবর্তী সময়ে পুনরায় ২৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং লিখিত পরীক্ষা ও ভাইবার মাধ্যমে নিয়োগ কার্যক্রম শেষ হয়। অর্থাৎ, যে বিসিএসে তাহসান পররাষ্ট্র ক্যাডার হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে সেটি প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পর-ই বাতিল হয়, তাই সেই বিসিএসে তাহসানের পররাষ্ট্র ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়ার কোনো সুযোগই নেই।

ডিএ