বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামিসহ ২৬ জনের ফাঁসির দড়ি টানা আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান মারা গেছেন। 

সোমবার (২৪ জুন) সকাল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর অভিনেতা ফারুক আহমেদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি আবেগঘন পোস্ট করেন। 

সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া। এবছর বই মেলায় কিংবদন্তী পাবলিকেশন'স থেকে তার লেখা একটা বই প্রকাশ হয়েছিল। বইটির নাম ‘কেমন ছিল জল্লাদ জীবন’। মেলার কিংবদন্তী প্রকাশনীতে আমার লেখাও একটি বই ছিল। বই মেলার প্রায় ১৫ দিন আমি কিংবদন্তী স্টলে বসেছি।’ 

‘জল্লাদ শাজাহানের সাথে আমার কিংবদন্তীর স্টলেই পরিচয়। তার দীর্ঘ জেল জীবন, জল্লাদ হওয়ার গল্প, ফাঁসি দেওয়ার সময় তার মনের অবস্থা, ফাঁসির সময় আসামীর ক্রিয়া এসব বিষয় তার কাছে জানতে চেয়েছি। সে খোলামেলা ভাবে আমার কথার উত্তর দিয়েছে। একদিন আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, মুক্ত জীবন কেমন লাগছে? সে মাথা নীচু করে বললো, ভালো না। আমার কেউ নাই। কিচ্ছু নাই। ভালো লাগে না।’ 

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি বোকার মত তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। আহারে জীবন! জীবনের ৪০ বছরেরও বেশি সময় জেলের চার দেয়ালের ভিতর কাটিয়ে মুক্ত জীবন পেয়েও বলে ভালো লাগেনা! আমি তাকে আবার জিজ্ঞেস করলাম, কি করলে আপনার ভালো লাগবে? সে সাথে সাথে উত্তর দিলো, মরে গেলে। জল্লাদ শাজাহান আজ দুপুরে মরে গেছে। তার চাওয়া পূরণ হয়েছে। ওপারে ভালো থাকবেন জল্লাদ শাজাহান।’

উল্লেখ্য, সাভারের হেমায়েতপুরে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন জল্লাদ শাহজাহান। সেখানে সোমবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে তার বুকে ব্যথা ওঠে। পরে ভোর ৪টার দিকে বাড়ির মালিক রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে সকাল সাড়ে ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এমআইকে/