মুক্তি পাওয়ার প্রথম দিন থেকেই দর্শকের আগ্রহের শীর্ষে রয়েছে শাকিব খানের ঈদের ছবি ‘তুফান’। সারাদেশে ছবিটি নিয়ে দর্শকের সাড়ায় মুগ্ধ সিনেমা সংশ্লিষ্ট সকল মহলের মানুষ।

ইতোমধ্যে ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্স, ব্লকবাস্টার সিনেমাস, লায়ন সিনেমাস, মধুমিতাসহ দেশজুড়ে ১২০ টির বেশি প্রেক্ষাগৃহে চলছে শাকিব খান অভিনীত এই চলচ্চিত্রটি। মুক্তির দিন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত একের পর এক রেকর্ড গড়ে যাচ্ছে ‘তুফান’।

মধ্যরাতে বিশেষ প্রদর্শনী

ময়মনসিংহের ছায়াবাণী সিনেমা হলে ‘তুফান’ দেখতে ঝাঁকে ঝাঁকে আসতে থাকে দর্শক। এতে সামাল দিতে না পেরে বাধ্য হয়ে মধ্যরাতেও চালানো হয় ‘তুফান’ এর প্রদর্শনী। 

হল সংশ্লিষ্টদের থেকে পাওয়া খবর, ছায়াবাণী সিনেমা হলে ‘তুফান’ এর সন্ধ্যা ও রাতের শো গুলোতে দর্শকের উপচে পড়া ভিড় ছিল। এর মধ্যে অনেক দর্শক ফিরেও গেছেন। অনেকে আবার অপেক্ষাও করছিলেন। এমন অবস্থা হয়েছে যে পুলিশও এসে লোকজন সরাতে পারেনি। পরে দর্শক ও প্রশাসনের অনুরোধে মধ্যরাত ১২ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত ‘তুফান’ এর বিশেষ একটি শোয়ের আয়োজন করা হয়। যা গত দুই দশকের ইতিহাসে এই হলে এমন ঘটনার দেখা মেলেনি।

মধুমিতায় ‘তুফানি তাণ্ডব’

এদিকে ‘তুফান’ এর টিকিট না পেয়ে হলে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টায় রাজধানীর মধুমিতা সিনেমা হলে ভাঙচুর চালিয়েছেন একদল বিক্ষুব্ধ দর্শক। এ সময় হলের পোস্টার ডিসপ্লে, চেয়ার ও দরজার গ্লাস ভাঙচুর করে তাণ্ডব চালানো হয়।

‘তুফান’ দেখতে আসা দর্শকদের অভিযোগ, নির্ধারিত দামে টিকিট বিক্রি না করে হলের বাইরে অতিরিক্ত দামে অবৈধভাবে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। এ সময় টিকিট না পেয়ে দর্শকেরা উত্তেজিত হয়ে ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় বেশ কয়েকজন দর্শক একত্র হয়ে লাথি দিয়ে হলের দরজা ভাঙেন। ঢিল ছুড়ে ভাঙা হয় দরজার গ্লাস। ছিঁড়ে ফেলা হয় দেয়ালে সাঁটানো পোস্টার, ভেঙে ফেলা হয় পোস্টার বোর্ড।

এ সময় ‘তুফান’ দেখতে আসা দর্শকেরা আরও অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার শো দেখার জন্য মধুমিতা হলে দর্শকের চাপ বেড়ে গেলে টিকিটের সংকট সৃষ্টি হয়। হল কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে ব্ল্যাকে ‘তুফান’ এর টিকিট বিক্রি হচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেন দর্শকরা।

স্টার সিনেপ্লেক্সে সবচেয়ে বেশি চলেছে ‘তুফান’

দেশে দুই দশকের ইতিহাসে স্টার সিনেপ্লেক্সে বাংলা চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ শো এর রেকর্ড গড়েছে ‘তুফান’ এর। প্রেক্ষাগৃহের জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন গণমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন। 

জানা গেছে, ঈদের দিন অর্থাৎ সিনেমাটি মুক্তির দিনে স্টার সিনেপ্লেক্সে ২২টি শো দিয়ে শুরু করে ‘তুফান’। এরপর দর্শকের চাপ বাড়তে থাকলে তা ৪৭ টি শোতে পৌঁছে। শো আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ। গণমাধ্যমে তার ভাষ্য, ‘শো বেড়েই চলেছে, কমার কোনো লক্ষণ নেই। অন্যান্য সিনেমার শো কমিয়ে ‘তুফান’ এর শো বাড়ানো হয়েছে।’ 

স্টার সিনেপ্লেক্সে চলা প্রিয়তমা, পরাণ ও হাওয়া সিনেমাকেও ছাড়িয়ে গেছে ‘তুফান’। বর্তমানে সিনেপ্লেক্সে ‘তুফান’ এর শো বাড়িয়ে ৫১টি করা হয়েছে। এর আগে কোনো বাংলা সিনেমার এত শো চালানো হয়নি বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাজধানীর অন্যান্য প্রেক্ষাগৃহেও ‘হাউজফুল’

এদিকে ঢাকার আরেক সিনেপ্লেক্স লায়ন সিনেমাসে ঈদের দিন তুফানের পাঁচটি শো চালানো হয়েছে। দর্শকের চাপ বাড়লে পরে দিনে ১০টি শো চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। লায়ন সিনেমাস এর কর্ণধার মির্জা আবদুল খালেক গণমাধ্যমকে জানান, তুফান সিনেমার প্রায় সব শো হাউজফুল যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, রায়হান রাফি পরিচালিত ‘তুফান’ সিনেমায় শাকিব খানকে দ্বৈত চরিত্রে দেখা গেছে। এ ছাড়াও নায়কের বিপরীতে অভিনয় করেছেন ভারতের মিমি চক্রবর্তী এবং বাংলাদেশের নাবিলা। আরও আছেন চঞ্চল চৌধুরী, ফজলুর রহমান বাবু, গাজী রাকায়েত, সালাহউদ্দিন লাভলু, গাউসুল আলম শাওন প্রমুখ। 

‘তুফান’ ছবিটি প্রযোজনা করেছে আলফা-আই স্টুডিওজ লিমিটেড; ডিজিটাল পার্টনার চরকি এবং ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউটর হিসেবে আছে এসভিএফ।

ডিএ/