আসিফের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে মুখ খুললেন ন্যান্সি
জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে আরেক সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সির করা মানহানি মামলা ও আসিফের বাড়িতে আদালতের সমন যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে দেশের শোবিজ জগতে আলোচনা চলছে। কেন আসিফের বিরুদ্ধে ন্যান্সির এই মানহানি মামলা? এর উত্তর মিলল সেই মামলার বিবরণীতে।
গত বছরের ১০ জুলাই ময়মনসিংহের কোতোয়ালী মডেল থানায় আসিফের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগে ন্যান্সি উল্লেখ করেন, আমি জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী। আমি দীর্ঘদিন ধরে গানের সঙ্গে জড়িত থেকে সুনামের সঙ্গে জীবিকা নির্বাহ করছি। আমার সফলতায় হিংসাত্মক মনোভাব পোষণ করে এবং আমার গাওয়া কিছু গানের অনুমতিবিহীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে স্বত্ব বিক্রির বিষয়ে আমি আপত্তি জানালে আমার প্রতি জেদ পোষণ করে আসিফ আকবর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মিডিয়ায় আমাকে মিথ্যুক, মানসিক ভারসাম্যহীনসহ আমাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। যা আমার জন্য মানহানিকর।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে কথা বলতে শুক্রবার (১ জানুয়ারি) রাতে ময়মনসিংহ নগরীর খাগডহর তালতলা এলাকায় ন্যান্সির বাসায় গেলে এনিয়ে মুখ খোলেন তিনি। ন্যান্সি জানান, বিভিন্ন সময়ে আসিফের দেয়া মানহানিকর বক্তব্যের ফলে তাকে ও তার পরিবারকে হেয় প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে। আর এ কারণেই আদালতের দ্বারস্ত হয়েছেন তিনি।
নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি বলেন, আসিফ ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগটা আমি নিতান্ত নিরুপায় হয়েই করেছি। অভিযোগ করার কোনো ইচ্ছেই ছিল না। কিন্তু পেছাতে পেছাতে যখন কারও দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় তখন করার কিছু থাকে না। এখন মনে হচ্ছে এটা আমার কাছে বাঁচা মরার মত একটা অবস্থা। একটা মানুষের যদি মান-সম্মানটা না থাকে, আমি মনে করি সেই মানুষটার আর অবশিষ্ট কিছু থাকে না। টাকা গেলে টাকা আসে কিন্তু মান-সম্মান গেলে সেটা আসে না।
তিনি আরও বলেন, আমি কারও মা, কারও স্ত্রী, কারও সন্তান। আমার সন্তানরাও এখন বেশ বড় হয়ে গেছে। তাদেরও একটি নিজস্ব পরিমন্ডল তৈরি হয়েছে। সেখানে তারা যখন তাদের মাকে নিয়ে এ ধরণের কথা শুনে সেটা তাদের জন্য খুবই বিব্রতকর। সেই সঙ্গে আমার আত্মীয়-স্বজনও এসব ফেস করছেন। যা আমার জন্য এটা যন্ত্রণাদায়ক।
এদিকে পুলিশ বলছে, বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় দীর্ঘ সময় নিয়ে তদন্ত করার পর অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (অপারেশন) ওয়াজেদ আলী বলেন, বিজ্ঞ আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মুশাহেদ খান সরেজমিনে তদন্ত করেন। সেই তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। সেই প্রেক্ষিতে আদালতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন দাখিল করেন।
এ ব্যাপারে ব্যক্তিগত কোনো আলোচনা নয়, আদালতেই এর সুরাহা হবে জানিয়ে ন্যান্সি বলেন, ব্যক্তি পর্যায়ে কথা বলা যে জায়গাটি থাকে সেটি আমাদের মধ্যে আর নেই। আমাদের দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমার যথেষ্ট আস্থা আছে। সেই আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গাটি থেকে আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। এখন আইন যে পথেই যাবে আমিও সেই পথেই যাব। এর বাইরে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই এবং আমি যেতেও চাই না। ব্যক্তিগতভাবে আর কোনো আলোচনার প্রয়োজন নেই। আইনিভাবেই বিষয়টি শেষ হোক। এতে উভয়ের জন্যই মঙ্গল।
এদিকে বছরের শেষ দিনে এ মামলায় সমন পাওয়ার পরই নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে বিষয়টি জানান আসিফ আকবর। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, তার বিরুদ্ধে কোনো রকম অপরাধ প্রমাণ করার কিছু আছে, তা তিনি আপাত দৃষ্টিতে দেখছেন না।
আরএআর