লিভ-ইন পার্টনার অভিনয় শিক্ষক সঞ্জয় দাসের মোবাইলের লকটা সেদিন কিছুক্ষণ খোলা ছিল। ফোনটি ঘেঁটে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন অভিনেত্রী সুস্মিতা দাস। আর তাতেই যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল তরুণীর। 

নিজের অভিনয় গুরুর যাবতীয় কুকীর্তি ভেসে উঠলো চোখের সামনে। যার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন এই উঠতি অভিনেত্রী। 

ফোনের হোয়াটসঅ্যাপে একাধিক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের বার্তা আদান-প্রদান করেছিলেন সঞ্জয়। সেগুলোই নজরে পড়ে যায় সুস্মিতার। যার রেশ ধরে বিবাদে জড়ায় দু’জন। একপর্যায়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন এই অভিনেত্রী। 

অভিনেত্রীর মৃত্যুর পর শিক্ষক সঞ্জয়কে (৫৭) জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাথমিকভাবে এই তথ্যই জানতে পেরেছেন পুলিশ। 

জানা গেছে, বহু উঠতি মডেলের সঙ্গে সঞ্জয়ের সম্পর্ক। সুস্মিতার মৃত্যুর পর শনিবার অভিযুক্তকে আলিপুর আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক ২৪ মে পর্যন্ত ওই শিক্ষককে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। 

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে হরিদেবপুর থানা এলাকার বনমালী ব্যানার্জী রোডের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে সুস্মিতা দেবীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার হয়। গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন ওই অভিনেত্রী। 

তার ঘর থেকে উদ্ধার হয় একটি খাতা। যেখানে লেখা, দুই পৃষ্ঠার একটি সুইসাইড নোট। সেখানে আত্মহত্যার কারণ হিসেবে সরাসরি সঞ্জয়কে দায়ী করা হয়েছে। 

সুইসাইড নোট থেকে পুলিশ জানতে পারে, অভিনয়ে সুযোগ করে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে অনেকের সঙ্গেই সম্পর্ক তৈরি করতেন সঞ্জয়। যাদের অধিকাংশই ছিলেন উঠতি মডেল ও অভিনেত্রী। 

অভিযুক্তের কল ডিটেলস রেকর্ড চেক করেন তদন্তকারীরা। সেখানেও সুস্মিতার অভিযোগের সত্যতা মেলে। বহু মহিলার সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন এই শিক্ষক। ঘটনার দিনেও অনেকগুলো নম্বরে কথা বলেছেন তিনি। 

পুলিশ জানিয়েছে, বছর দু’য়েক আগে হলদিয়া থেকে অভিনয়ের স্বপ্ন নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন সুস্মিতা দেবী। তখন সঞ্জয়ের সঙ্গে আলাপ হয়। লিভ-ইন সম্পর্কে থাকতে শুরু করেন দুজন।

কয়েকমাস আগে তার পার্টনারের একাধিক সম্পর্কের কথা জানতে পারেন সুস্মিতা। এরপর দু’জনের সম্পর্কের অবনতি হয়। সেখান থেকেই একটা সময় আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন এই অভিনেত্রী। 

এনএইচ