ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাত থেকে দেশটির চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার গ্রহণ করেছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। সোমবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দিল্লিতে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে এই পুরস্কার গ্রহণ করেন তিনি। 

রবীন্দ্রসংগীতের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে এ সম্মাননা দিয়েছে ভারত সরকার। এদিন অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উপস্থিত ছিলেন। যেখানে বন্যার সঙ্গে দেখা হয় নরেন্দ্র মোদির। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে বন্যা জানান, অনুষ্ঠানের অনেক ভিড়ের মধ্যে যখন নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আমার দেখা হয়, তখন তিনি আমাকে প্রশ্ন করেন, ‘আপ ক্যায়সে হ্যায়?’ (আপনি কেমন আছেন)।  এ সময় আমাদের মাঝে কুশল বিনিময় হয়। 

পদ্মশ্রীর মতো এত বড় একটি সম্মান পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই আনন্দিত বন্যা। তিনি বলেন, ‘আমি খুবই রোমাঞ্চিত, আনন্দিত এবং সম্মানিত বোধ করছি। বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে পুরস্কারটা আমার কাছে ভীষণ গর্বের মনে হচ্ছে।’

বাংলাদেশের এই বিশিষ্ট গায়িকা আরও বলেন, ‘সব জায়গায় আমাদের পদ্মশ্রী অ্যাওয়ার্ডি, পদ্মশ্রী অ্যাওয়ার্ডি বলা হয়েছে! এত আতিথেয়তা, এত সম্মান— এই সবকিছু আমার জীবনের উজ্জ্বল অনুভূতি হয়ে থাকবে। মনে রাখার মতো অভিজ্ঞতা। রাষ্ট্রপতি ভবনে যাওয়ার ব্যাপারটাও একদম অন্যরকম। এর আগে কোনোদিন এই সুযোগ আসেনি। ভারতের রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কার নেওয়া— সবকিছু মিলিয়ে দারুণ একটা ব্যাপার।

গত ২৫ জানুয়ারি ভারত সরকার ২০২৪ সালের পুরস্কারপ্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করে। সোমবার বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসব সম্মাননা সমাজের নানা ক্ষেত্রে অবদান রাখা ব্যক্তিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ২০১৬ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পদক পান। এছাড়াও তিনি বহু পুরস্কার পেয়েছেন। ‘পদ্মশ্রী’ ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কারগুলোর মধ্যে একটি। প্রতি বছর ‘পদ্মবিভূষণ’, ‘পদ্মভূষণ’ এবং ‘পদ্মশ্রী’ নামে তিনটি বিভাগে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্য বিভাগের অধ্যাপক ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এর আগে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। রবীন্দ্র সঙ্গীতের প্রচার ও প্রসারে বন্যা একজন প্রবর্তকের ভূমিকা পালন করেন। এ লক্ষ্যে ১৯৯২ সালে ঢাকার একটি মর্যাদাপূর্ণ সঙ্গীত বিদ্যালয় ‘সুরের ধারা’ প্রতিষ্ঠা করেন। ২০২২ সালে বাংলাদেশ সরকার আত্মজীবনী ও ফটোগ্রাফ সম্বলিত বন্যার পাঁচ হাজার গান সংরক্ষণ করে একটি ওয়েবসাইট চালু করেছে।

এনএইচ