১৭ বছর বয়সে অভিনয়ে হাতেখড়ি, এখন তিনি কয়েকশো কোটি টাকার মালিক
বলিউডের দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী শিল্পা শেঠি। আজ তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক। তার আজকের এই সাফল্য অর্জনের গল্পটা ততটা সহজ নয়। বি-টাউনে নিজের জমি শক্ত করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল তাকে।
এখন তিনি সফল অভিনেত্রীর তকমা পেয়েছেন। অথচ ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে প্রযোজকদের থেকে তার জুটেছিল শুধুই প্রত্যাখ্যান। প্রচুর অপমানের জ্বালা সহ্য করতে হয়েছিল তাকে। কিন্তু এর পেছনে থাকা কারণ সম্পর্কে কখনওই জানতে পারেননি তিনি। প্রাথমিক পর্যায়ে হতাশার সম্মুখীন হয়েও হাল ছাড়েননি। নিজের স্বপ্ন পূরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আর তাতে সফলও হয়েছেন। অবশেষে নিজের অভিনয়ের ছাপ তিনি ফেলতে পেরেছেন ভক্তদের মনে।
বিজ্ঞাপন
একবার ‘হিউম্যানস অব বম্বে’র কাছে নিজের ক্যারিয়ার এবং ব্যক্তিগত জীবনের অজানা কথা তুলে ধরেছিলেন শিল্পা শেঠি। কর্মজীবনের সূচনা প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, আমি কালো রোগা এবং লম্বা ছিলাম। স্নাতক শেষ করে বাবার সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছিলাম। যদিও আমি আমার মন থেকে নতুন এবং বড় কিছু করতে চেয়েছিলাম। ভাবিনি যে, আমি সেই সুযোগ পাব। কিন্তু মজা করে একটি ফ্যাশন শো-এ যোগ দিতে গিয়েই যেন সবটা বদলে যায়।
শিল্পা বলে চলেন, এক ফটোগ্রাফার আমায় দেখেছিলেন এবং আমার ছবি তুলতে চেয়েছিলেন। আর এভাবেই আমার গ্ল্যামারের দুনিয়ায় প্রবেশ। এর কিছু সময় পরেই প্রথম সিনেমায় কাজের অফার আসে। তারপর অবশ্য পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তবে ক্যারিয়ারে উত্থান-পতন চলতে থাকে। আসলে অর্থপূর্ণ বিষয়গুলো তো আর সহজে আসে না।
তিনি বলেন, আমার যখন মাত্র ১৭ বছর বয়স, তখন এসেছিলাম এই ইন্ডাস্ট্রিতে। তখনও দুনিয়াটাকে জানা হয়নি আর জীবনটা বুঝতাম না।
আরও পড়ুন
শিল্পা বলেন, আমি হিন্দি বলতে পারতাম না। তাই ক্যামেরার সামনে আসতে বেশ নার্ভাস লাগত। কয়েকটি সিনেমা করার পর এমনটা একটা জায়গায় পৌঁছাই যে, মনে হতে থাকে আমার ক্যারিয়ার শেষ। আমি বহুবার চেষ্টা করতাম ঠিকই, কিন্তু কোথাও না কোথাও ঘাটতি থেকে যেত। আমার মনে আছে, কিছু প্রযোজক ছিলেন, যারা কোনও কারণ ছাড়াই আমায় নিজেদের ছবি থেকে রীতিমতো তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
এরপর অভিনেত্রী তার বিগ ব্রাদার শো-এর সফরের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমার মনে আছে, বিগ ব্রাদার শো-এ অন্য প্রতিযোগীরা আমার প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করতেন। আমার জন্মভূমি ও দেশের কারণে আমায় সবার সামনেই হেনস্তা করা হতো। ফলে লড়াইটা একেবারেই সহজ ছিল না। আমি ওই হাউজে একাই ছিলাম। কিন্তু আমি টিকেছিলাম। অনেক দূর আসার পর আমি এক পা-ও পিছিয়ে যেতে চাইনি। সব শেষে জয়ী হওয়ার পরে বহু মানুষ আমার প্রশংসা করেছেন। আসলে সেখানে যে সংকল্প এবং উদ্যম প্রদর্শন করেছিলাম, সেটাই আমায় সাফল্যের শিখরে নিয়ে গিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি শুধু আমার নিজের জন্য রুখে দাঁড়াইনি, যারা বর্ণবিদ্বেষের শিকার হন, তাদের হয়েও রুখে দাঁড়িয়েছি। আমার জীবনটা উত্থান-পতনে ভরা। খুব খারাপ সময় পার করেছি, কিন্তু আবার কখনও কখনও দারুণ জয়ের স্বাদও পেয়েছি। জীবনের প্রতিটা মুহূর্তই উপভোগ করেছি। আর এটাই আমায় আজ বলিষ্ঠ স্বাধীনচেতা মহিলা, গর্বিত অভিনেত্রী, স্ত্রী এবং মা হিসেবে গড়ে তুলেছে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে শিল্পা শেঠি বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম। এছাড়া প্রায় ১০০ কোটি টাকার বাংলোসহ বিলাসবহুল সম্পত্তির মালিক তিনি। এমনকি শিল্পার একটি প্রাইভেট জেটও রয়েছে।
এমএ