নিষিদ্ধ নয়, সংশোধনের সুযোগ দিতে হবে শিল্পীদের
ছোট পর্দার তরুণ অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমককে নিয়ে টানাপোড়েন চলছে নাটকপাড়ার তিন অভিভাবক সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ড, অভিনয়শিল্পী সংঘ ও টেলিপ্যাবের মধ্যে। মূলত চমককে নিষিদ্ধ করা নিয়ে দ্বন্দ্বের শুরু। ডিরেক্টরস গিল্ড চাইলেও এর সঙ্গে একমত নয় বাকি দুই সংগঠন।
এ প্রসঙ্গে গত ২১ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ডিরেক্টরস গিল্ড। সেখানে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম কামরুজ্জামান সাগর বলেন, ‘রুকাইয়া জাহান চমকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হলো। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী ৩ মাস টিভি এবং ডিজিটাল মাধ্যমে ডিরেক্টরস গিল্ডের কোনো সদস্য চমককে নিয়ে কোনো ধরনের নির্মাণ কাজ করতে পারবেন না।’
বিজ্ঞাপন
ডিরেক্টরস গিল্ডের এমন সিদ্ধান্তে রীতিমতো বিব্রত বোধ করে অভিনয়শিল্পী সংঘ ও টেলিপ্যাব। গতকাল বুধবার (২৩ আগস্ট) এই দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রেস রিলিজে বলা হয়, ‘সংগঠনকে সদস্যরা ভয় পাবে না, বরং ভালোবাসবে নিরাপদ আশ্রয়স্থল মনে করবে। কেউ কেউ কখনো ভুল করতে পারে অন্যায় করতে পারে। আমরা তাকে সংশোধনের চেষ্টা করব। সঠিক পথ বাতলে দেওয়ার চেষ্টা করব। কিন্তু কখনোই গলা টিপে ধরব না। ভুল শুধরে নেওয়ার, সংশোধন হওয়ার যথেষ্ট সময়, সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও যদি সংশোধন না হয়, তখন হয়তো সংগঠন কঠোর হতে পারে। তার আগে নয়।’
এ বিষয়ে অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আমরা অনেক শিল্পীর বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে তাদের নিষিদ্ধ করেছি। প্রসূন আজাদ, অ্যালেন শুভ্র, সারিকা। তাদের বিরুদ্ধে অনেক কঠোর হওয়ায় তাদের জন্য কিন্তু পথচলা কঠিন হয়ে যায়। আপনারা এই অভিনয়শিল্পীদের দিকে তাকান, তাদের এখন কী অবস্থা। কিন্তু তুলনামূলক চিত্র দেখলে দেখা যাবে, অন্য সংগঠন কিন্তু এতটা কঠোর হয়নি তাদের সদস্য নিয়ে। এখন যে কারণেই হোক ডিরেক্টরস গিল্ড চায় যে চমককে বহিষ্কার করে দিই। সেটা না মানায় তারা নিজেরাই এই অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন এটা পারে না। চাইলে তারা নিজেদের সংগঠনের সদস্যদের সতর্ক করতে পারে। তাকে নিয়ে কাজ করা যাবে না। যেটা আমরা আমাদের প্রেস রিলিজেও বলেছি।’
বিষয়টি নিয়ে টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টেলিপ্যাব) সভাপতি মনোয়ার পাঠান বলেন, ‘মিডিয়া অঙ্গনের সবাই মিলে একটি পরিবার। এই পরিবারে যেকোনো সমস্যা হলে সেটা নিজেরাই আলোচনা করে সমাধান করা উচিত। এর লক্ষ্য হওয়া উচিত, সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখা।’
প্রসঙ্গত, নাটকে এর আগে বিভিন্ন সময়ে নিষিদ্ধ করা হয় আনিকা কবির শখ, প্রসূন আজাদ, অ্যালেন শুভ্র, সারিকা সাবরিন ও জেবা জান্নাতকে। এতে করে হিতে বিপরীত হয়েছে। এদের কেউই পরবর্তীতে ক্যারিয়ার খুব বেশি দূর এগিয়ে নিতে পারেননি। তাই অতীত পর্যালোচনা করে ওই পথে হাঁটতে চাচ্ছে না শিল্পী সংঘ ও টেলিপ্যাব। আপাতত চমক ইস্যু নিয়ে তিন সংগঠনের বিরোধ মীমাংসা হবে অভিভাবক সংঘ ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন (এফটিপিও)-তে।
কেএইচটি