১৯৯৩ সাল থেকে কলকাতার আঁতেল-বুদ্ধিজীবীরা বলে এসেছিলেন যে, নচিকেতা এক-দেড় বছর টিকবে। এসব রিকশাওয়ালাদের গান। তবে তিন দশকে পা দিয়ে আজও তার গানে আগুন জ্বলে! সেই ছবিই ধরা পড়ল শনিবার (১৯ আগস্ট)। রবীন্দ্র সদন কানায় কানায় পূর্ণ তাঁদের ‘আগুন পাখি’কে স্যালুট জানাতে। গান জীবনের ৩০ বছর পার করে আবেগাপ্লুত নচিকেতা চক্রবর্তী।

নচিকেতার ফ্যানক্লাব ‘আগুন পাখি’র তরফে আয়োজন করা হয়েছিল নচিকেতার একক সঙ্গীতানুষ্ঠান। টিকিট সাত দিনেই শেষ। ৩০ বছর পরেও কলকাতার মানুষ পাগলামি ছাড়েনি এই মানুষটাকে ঘিরে। নীলাঞ্জনার প্রেমিকের কণ্ঠে গান শুনবে বলে দূর দূরান্ত থেকে সব কাজ ফেলে ছুটে আসা।

এদিন এক কথায় নচিকেতা এলেন, দেখলেন আর জয় করলেন আরও একবার। ১৮ থেকে ৮০ সব বয়সীদের পছন্দের গায়ক তিনি। সবাই তাকে একবার ছোঁয়ার জন্য আকুল। 

ভারতীয় গণমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এদিন নচিকেতা বলেন, আমি ম্যাজিক জানি না। স্রেফ সৎভাবে গান গাওয়ার চেষ্টা করি। সবটাই ঈশ্বরের আশীর্বাদ। নচিকেতা হওয়া যায় না, নচিকেতার জন্ম হয়। 

১৯৯৩ সালের ১৪ই অগস্ট বাংলা গানের ইতিহাসের এক মাইলস্টোন স্থাপনের দিন। নচিকেতার প্রথম অ্যালবাম ‘এই বেশ ভাল আছি’ মুক্তি পায় ওইদিনে। মাত্র দেড় মাসে এই অ্যালবাম এক লক্ষ ২৫ হাজার কপি বিক্রি হয়েছিল এবং সর্বমোট লাখ বিক্রি হয়, যা বাংলা গানের ইতিহাসের সর্বকালীন রেকর্ড। পরবর্তী সময়ে এই অ্যালবামটি প্ল্যাটিনাম ডিস্কও পায়। এরপর অজস্র সাফল্য, ২৫০-র বেশি গান বেঁধেছেন ‘নগরবাউল’ নচিকেতা। তবুও মাটিতে পা রেখে চলাতেই বিশ্বাসী তিনি।

গায়কের কথায়, অস্থির সময়ের প্রোডাক্ট আমি। ওই সময়টা যদি না তৈরি হয়, তাহলে নচিকেতা হওয়া অসম্ভব। আগামী ৫০ বছরেও আরেকটা নচিকেতা আসবে না, এইটুকু বলতে পারি। 

কথায় কথায় উঠে এল তার স্বাস্থ্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া রটনার কথা। তিনি বলেন, দাপিয়ে শো করে বেড়াচ্ছি, তার মধ্যেই কারা রটিয়ে বেড়াচ্ছে আমার নাকি ক্যানসার হয়েছে। কিছুই হয়নি আমার, বলে বলে অসুস্থ করে দেবেন না। 

ভক্তদের হৃদয়ে থাকতে চান তিনি, তাই ভক্তদের জন্য তার বার্তা- হৃদয়ে রাখিস, আমার কোনও লোভ নেই রে পাগলা। 

কেএ