শেষ জন্মদিনে দেশবাসীর উদ্দেশে যা বলেছিলেন ফারুক
কিংবদন্তি অভিনেতা ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। বেশ কয়েক বছর অসুস্থতার সঙ্গে লড়ে আজ সোমবার না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন মিয়া ভাই খ্যাত এ অভিনেতা।
২০২১ সালের ৪ মার্চ থেকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। বেশ কয়েকবার কিছুটা সেরে উঠলেও পুরোপুরি সুস্থ হননি অভিনেতা।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন <-> নায়ক ফারুক আর নেই
জীবিত অবস্থায় ঢাকাই ছবির এ অভিনেতার শেষ জন্মদিন ছিল গত বছরের ১৮ আগস্ট। ২০২২ সালে নিজের জীবনের বিশেষ দিনটিকে ঘিরে একদিন আগে ১৭ আগস্ট একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছিলেন এ অভিনেতা। কে জানতো এ ভিডিও বার্তায় হবে জন্মদিন উপলক্ষ্যে অভিনেতার শেষ ভিডিও বার্তা!
দেশের একটি টিভি চ্যানেলকে পাঠানো সেই ভিডিওতে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছিলেন ফারুক।
তখন বরেণ্য এই নায়ক বলেন, ‘আমার জন্মদিনকে সামনে রেখে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানাই। সবার কাছে আমার অনুরোধ, গুজবে কান দেবেন না। আমি আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। ইনশাআল্লাহ, আমি খুব শিগগির দেশে ফিরব।’
কথা বলতে বলতে কান্নায় ফারুকের কণ্ঠ জড়িয়ে আসে। সেই জড়ানো কণ্ঠে দোয়া চেয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘দেশের মানুষের ভালোবাসা ফারুক কোনোদিন ভুলবে না। দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে আমি দোয়া চাই, যেন খুব তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে আসতে পারি।’
আরও পড়ুন <-> ফারুকের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছিল বেশ কয়েকবার
ভিডিও বার্তায় ফারুক জাতীয় স্লোগানও দেন, ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এ নায়ক।
সোমবার (১৫ মে) স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ফারুক। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, চিত্রনায়ক ফারুকের মৃত্যু দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্র দেশের সমাজ ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। চলচ্চিত্র অঙ্গনে তার অবদান দেশের মানুষ আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।
১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে ঢাকাই সিনেমার তার অভিষেক হয়। এরপর ‘লাঠিয়াল’, ‘সুজন সখী’, ‘নয়নমনি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সাহেব’, ‘আলোর মিছিল’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘মিয়া ভাই’সহ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
ফারুক ১৯৭৫ সালে ‘লাঠিয়াল’ সিনেমা জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এছাড়া ২০১৬ সালে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হন।
এমজে