মৃণাল সেন হচ্ছেন চঞ্চল চৌধুরী
জল্পনা আগেই ছিল। সৃজিতের পরিচালনায় পর্দায় মৃণাল সেন হিসেবে ধরা দেবেন চঞ্চল চৌধুরী। এবার জল্পনায় সিলমোহর দিলেন স্বয়ং পরিচালকই। জানালেন, ‘পদাতিক’-এ মৃণাল সেন হচ্ছেন চঞ্চল। সামাজিকমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নির্মাতা।
ছবিটির প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসান বলেন, মৃণালের প্রয়াণদিবসে তারা এই ছবিটির ঘোষণা করতে চেয়েছিলেন। সে হিসেবে ঘোষণাও আসলো কিংবদন্তি নির্মাতার প্রয়াণ দিবসে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রয়াত হয়েছিলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে ওই ছবির শুটিং শুরু করবেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘বায়োপিক বা ওই ধাঁচের ছবি আগেও করেছি। যেমন শাবাশ মিঠু বা ভাওয়াল সন্ন্যাসীকে নিয়ে। কিন্তু নিঃসন্দেহে এটা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং!’
প্রথমে সৃজিত এই জীবনীচিত্রটি নিয়ে ওয়েব সিরিজ বানাতে চেয়েছিলেন। লকডাউনের সময় সেভাবে তিনি চিত্রনাট্য লিখেও ফেলেছিলেন। তারপরে ছবি বানানোর সিদ্ধান্ত নেন। স্বভাবতই সিরিজের তুলনায় দৈর্ঘ্য কমাতে হয়েছে। সৃজিতকে সাহায্য করেছেন মৃণালের পুত্র কুণাল সেন। কুণাল সৃজিতকে ছবিটি বানানোর অনুমতি দিয়েছেন। সৃজিত-কুণাল নিরন্তর যোগাযোগও আছে।
মৃণালের ভূমিকায় চঞ্চলকে নেওয়া নিঃসন্দেহে বড় পদক্ষেপ। সপ্তাহখানেক আগে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। চঞ্চল কেন? সৃজিতের কথায়, ‘প্রথমত দুজনের মুখের মিল আছে। সেটা কাকতালীয়। কিন্তু মৃণালবাবুর মতোই চঞ্চলের চোখের দৃষ্টি অত্যন্ত ধারালো এবং সজাগ। তাছাড়াও মৃণালবাবুর রাজনীতি চেতনা, তার যাপন এবং দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গেও চঞ্চলের প্রচুর মিল। সেটা কাকতালীয় হতে পারে। কিন্তু মিলটা আছে।’
ছবিতে অবশ্য মৃণালের ব্যক্তিগত এবং পরিচালনার জীবনই বেশি থাকবে। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৩ সময়কালে তার বানানো কলকাতা ট্রিলজি ছবির অনেকটা জুড়ে থাকবে। ছবিতে থাকবেন মনামী ঘোষ এবং সম্রাট চক্রবর্তীও।
মৃণাল জন্মেছিলেন ১৯২৩ সালের ১৪ মে। তিনি ছবি বানিয়েছিন বাংলা, হিন্দি এবং তেলেগুতে। তার নাম পরিচালক হিসেবে বাংলার সর্বকালীন সেরাদের মধ্যে অন্যতম বলে পরিগণিত হয়। ‘পদ্মভূষণ’ থেকে ‘দাদাসাহেব ফালকে’— সবই রয়েছে তার ঝুলিতে। ভুবন সোম, মৃগয়া, আকালের সন্ধানে, খারিজ, পদাতিক, একদিন প্রতিদিন— এ সবই তার অন্যতম সৃষ্টি। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। ১৯৫৫ সালে ‘রাতভোর’ থেকে ২০০২ সালের ‘আমার ভুবন’— মাঝে রয়েছে মৃণালের অসংখ্য সিনেমা।
বর্তমানে বাংলাদেশে আছেন চঞ্চল। গত ২৭ ডিসেম্বর তার বাবা মারা যান। বাবা হারানোর বেদনার মাঝেই সুসংবাদটি পেলেন তিনি। জানা গেছে শুটিং শুরুর আগে কলকাতায় পৌঁছবেন অভিনেতা।
সূত্র : আনন্দবাজার
কেএইচটি