হঠাৎই ব্রেন স্টোক করে হাসপাতালে লড়ছেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। অসুস্থ হওয়ার পর প্রায় কেটে গেছে ৭২ ঘণ্টা। এখনও তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন নিউরো আইসিইউতে।

ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ঐন্দ্রিলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মঙ্গলবার রাতে। অবশেষে ৩ দিনের মাথায়, শুক্রবার সকালে সবস্যাচী লিখেছেন, 'ঐন্দ্রিলার বিষয়ে অযথা নেতিবাচক খবর ছড়ানো বন্ধ করুন। কিছু নিম্নমানের তথাকথিত মিডিয়ার ভুয়া খবরে নিজেদের বিভ্রান্তি বাড়াবেন না অথবা ওর বাড়ির লোককে বিরক্ত করবেন না। আমি এখনও অবধি কোনো সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ করিনি, সাক্ষাৎকার দিইনি, দেবও না। শুধু জেনে রাখুন, মেয়েটা লড়ে যাচ্ছে, সঙ্গে লড়ছে গোটা হাসপাতাল। নিজের হাতে করে নিয়ে এসেছিলাম, নিজের হাতে ওকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাবো। এর অন্যথা কিছু হবে না।'

সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল, তবে হঠাৎই যেন কেমন সব ওলটপালট হয়ে গেল। ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর এই মুহূর্তে সুস্থ হওয়ার জন্য লড়ছেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। 

হাসপাতাল সূত্রে পাওয়া খবরে, বৃহস্পতিবার সকালেও ভেন্টিলেশনে ছিলেন অভিনেত্রী। কোমাচ্ছন্ন অবস্থায় ছিলেন তিনি। তার শরীরের একপাশ কাজ করছে না বলেও জানা গেছে। মঙ্গলবার রাতে আচমকাই ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন ঐন্দ্রিলা শর্মা। তড়িঘড়ি তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। স্ট্রোকের ফলেই মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে যায় অভিনেত্রীর। মস্তিষ্কে প্রবল রক্তক্ষরণ নিয়ে ভর্তি করার পর মঙ্গলবার রাতেই হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালে ঐন্দ্রিলা শর্মার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়।

একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় ২০১৫-র ৫ ফেব্রুয়ারি জন্মদিনের দিনই তার শরীরে বেড়ে ওঠা মারণরোগের কথা প্রথম জানতে পারেন ঐন্দ্রিলা। তার অস্থি মজ্জায় মারণ রোগ বাসা বেঁধেছিল। তারপরই লড়াই শুরু হয় ঐন্দ্রিলার। তখন তিনি বহরমপুরেই থাকতেন। মেয়েকে নিয়ে দিল্লিতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান বাবা-মা। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন ঐন্দ্রিলার হাতে বেশি সময় নেই। এরপর একের পর এক কেমো, ইঞ্জেকশন শুরু হয়। শরীর যেন ক্রমশ কুঁকড়ে যাচ্ছিল। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ২০১৬ সালে সুস্থ হয়ে ওঠেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। ২০১৬ থেকে ২০২১, টানা পাঁচ বছর বেশ ভালোই কাটছিল ঐন্দ্রিলা শর্মার। ততদিনে ঐন্দ্রিলার অভিনয় জীবন শুরু গিয়েছে। 

কিন্তু ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎই ছন্দপতন। আচমকা ডান কাঁধে যন্ত্রণা শুরু হয়। অভিনেত্রী ভেবেছিলেন শোয়ার দোষে হয়তো ব্যথা। তারপর জানা যায়, ডান ফুসফুসে ১৯ সেন্টিমিটারের একটি টিউমার রয়েছে। আবারও শুরু হয় কেমো, সেই যন্ত্রণা। ঐন্দ্রিলা তার এই লড়াইয়ে সবসময় পাশে পান বন্ধু, প্রেমিক, অভিনেতী সব্যসাচী চৌধুরীকে। সার্বক্ষণিক ঐন্দ্রিলার পাশে পাশে থাকতে দেখা যায় তাকে। বিগত কয়েক মাস ক্যানসারের সঙ্গে কঠিন যুদ্ধ চালিয়েছেন এই অভিনেত্রী। সবসময় তার পাশে ছিলেন তার প্রেমিক অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী। তাদের দীর্ঘ লড়াইয়ের কাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতেন অভিনেতা। 

ঐন্দ্রিলা সুস্থ হওয়ার পর একসঙ্গে ছবিও পোস্ট করেছেন তারা। দুদিন আগেই ছিল সব্যসাচীর জন্মদিন। সেদিন তার সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করে শুভেচ্ছা জানান অভিনেত্রীও। ২০১৭ সালে 'ঝুমুর' ধারাবাহিকের হাত ধরেই টেলিভিশনে কাজ করা শুরু করেন ঐন্দ্রিলা। সেই ধারাবাহিকেই ঐন্দ্রিলার বিপরীতে ছিলেন অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী। সেখান থেকেই তাদের বন্ধুত্বের শুরু। পরে সেই বন্ধুত্ব প্রেমে বদলে যায়।

এসএম