স্বামীর বাড়ি বলব না, ওটা আমারই বাড়ি: মিথিলা
দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী, সমাজকর্মী ও পিএইচডি গবেষক রাফিয়াত রশিদ মিথিলা কিছুদিন আগে স্বামী সৃজিত মুখার্জি এবং কন্যা আইরাসহ কলকাতা থেকে ঢাকায় এসেছিলেন। আজ বুধবার সকালে (৩ মার্চ) আবার কলকাতায় ফিরে গেছেন। যাওয়ার আগে আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে এসেছিলেন ‘ঢাকা পোস্ট’ অফিসে। তার একান্ত সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রবিউল ইসলাম জীবন
আপনি তো এখন রাজনীতিবিদ। ওয়েব সিরিজ ‘কন্ট্রাক্ট’-এ রাজনীতিবিদের ভূমিকায় হাজির হচ্ছেন।
চরিত্রের প্রয়োজনেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রূপে হাজির হতে হয়। এবার হয়েছি রুমানা। চরিত্রটি করতে আমাকে অনেক ভাবতে হয়েছে। একটু কঠিন ছিল, চ্যালেঞ্জিং ছিল। কারণ এখানে আমি এমন একজন রাজনীতিবিদ, যে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে, নিজের ক্ষমতাটাকে সবসময় ভালো কাজে ব্যবহার করে। চরিত্রটির জন্য অনেক প্রস্ততি নিতে হয়েছে, স্টাডি করতে হয়েছে। এটির নির্মাতা তানিম নূর এবং কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়। জিফাইভ বাংলাদেশ প্ল্যাটফর্মে শিগগিরই উন্মুক্ত হবে। এতে আমার শ্বশুর হয়েছেন তারিক আনাম খান। তিনিও রাজনীতিবিদ। এছাড়া আরিফিন শুভ, চঞ্চল চৌধুরী, মমসহ অনেকে অভিনয় করেছেন।
বিজ্ঞাপন
এবার কলকাতা থেকে ফিরে কী কী কাজ করেছেন?
এবার এসে দুটি কাজ করেছি। একটি তানিম রহমান অংশুর শর্টফিল্ম ‘মিয়াও’। যেখানে আমার সঙ্গে একটা বিড়ালের অদ্ভুত ধরনের যোগাযোগ। গল্পটা মজার।
বাস্তবজীবনেও কি প্রাণী পোষেন?
আমার কচ্ছপ আছে। কিন্তু আইরার খুব পছন্দ বিড়াল, কুকুর। গত ১২ বছর ধরে বাসায় দুটি কচ্ছপ পালছি। একটির নাম হাম্পটি, আরেকটি ডাম্পটি। ওরা ঘরে হেঁটে বেড়ায়। কলকাতায় গিয়েও ছোট্ট একটা কচ্ছপ নিয়েছি। সেটার নাম হ্যারি। কচ্ছপ প্রাণীটাই আমার খুব ভালো লাগে। কখনো ভাবিনি ওরা এত বছর আমার সঙ্গে থাকবে। কচ্ছপ কিন্তু ১০০ বছরও বাঁচে! কচ্ছপ শান্ত হয়, ধীরস্থির হয়। তবে আইরার জন্য সামনে হয়তো আমাদের পরিবারে আরও নতুন সদস্য আসতে পারে।
অন্য কাজটির প্রসঙ্গ তো ভুলেই যাচ্ছিলাম!
সেটা ঈদের একটি নাটক। নির্মাতা একজন নারী, প্রীতি দত্ত। অনেক দিন ধরে তার সঙ্গে কথা হচ্ছিল। নাটকটির নাম ‘লাভারস’। আমি আর জোভান জুটি হয়ে কাজটি করেছি। জোভানের বিপরীতে এটাই আমার প্রথম কাজ। এখানে আমার চরিত্র বিমানবালার। এই চরিত্রের কস্টিউম পরে ভালো লেগেছে। প্রীতির নির্মাণ ভাবনাও চমৎকার।
ঈদে কোথায় থাকবেন?
ঈদে তো দেশেই থাকতে চাই। আশা করি থাকব।
আবার কবে যাচ্ছেন কলকাতায়?
৩ মার্চ সকালে। এবার গেলে বেশিদিন থাকা হবে না। কারণ সামনে আমার ঈদের আরও কিছু কাজ আছে। দেশে এসে সেগুলো শেষ করব।
কলকাতা কেমন লাগে?
সুন্দর একটি শহর। ছোটবেলা থেকে বন্ধুদের কাছে গল্প শুনেছি। তবে আগে কখনো যাওয়া হয়নি। এখন তো আমার বাড়িই সেখানে। সবকিছু চিনতে শুরু করেছি। ছোটবেলায় গান, গল্প শুনে শুনে যে শহরটাকে চিনেছি এখন সেখানে থাকছি। কলকাতায় আমি যে বাড়িতে থাকি সেটা পাঁচতলা। সেখানে সেটাই সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং। আবার ঢাকার চিত্র ঠিক উল্টো। দুটি শহরের ভিন্ন দুটি চার্ম আছে। ওই জিনিসটা খুব ভালো লাগে।
স্বামীর বাড়িতে সময় কাটে কীভাবে?
স্বামীর বাড়ি বলব না, ওটা আমারই বাড়ি। সারাক্ষণ বাড়ির কাজ করি। এছাড়া বাসা থেকে অফিসের কাজ করতে হয়। আমার মেয়ের ক্লাস (বর্তমানে অনলাইনে) থাকে। সেটাও দেখতে হয়। বাড়ির ছাদে বাগান করছি। কলকাতায় আমার বাড়ির ছাদে ৬২টা টব আছে, একশর ওপর গাছ আছে। সেগুলোও যত্ন নিই।
সৃজিত মুখার্জির সঙ্গে আপনার সম্পর্কের শুরুটা কীভাবে?
আমাদের পরিচয় ফেসবুকে, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে। প্রথমে সে আমাকে মেসেঞ্জারে ‘হাই’ লিখেছিল। জবাবে আমিও ‘হাই’ লিখি। এরপর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প করতে করতে একটা সময় সম্পর্ক যখন বন্ধুত্বের দিকে যায়, তখন সৃজিত বলে- এটাকে সিরিয়াসলি দেখতে চায়। এরপর বিয়ে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। বলা যায় প্রেম গভীর হওয়ার আগেই বিয়ের কথা শুরু হয়। আলোচনা হতে হতে সেটা অনেক দূর এগোয়। বাড়িতে জানানো হয়। এরমধ্যে তো সব মিডিয়ায় নিউজও চলে আসে।
দুজন দুই দেশের, দুই ধর্মের। সিদ্ধান্তটা নিশ্চয়ই খুব কঠিন ছিল।
কঠিন তো অবশ্যই ছিল। দুই দেশের, দুই ধর্মের। সবচেয়ে বড় কথা ধর্মের বিষয়টাকে আমাদের সমাজ অন্যভাবে দেখে। বাসায় বাবা-মাকে রাজি করানো একটি বড় কাজ ছিল। আমাদের বোঝাপড়া, আইরার সঙ্গে বোঝাপড়া, সব কিছু মিলিয়ে অনেক সময় লেগেছে। এক বছর ধরে দু’জন সারাক্ষণ এটা নিয়েই প্ল্যানিং করেছি। আমার ক্যারিয়ার এখানে, আমার লাইফ এখানে। হঠাৎ করে চলে গেলে তার পরে কী হবে! যাই হোক সবই হয়েছে। আমি ব্র্যাকের কাজটা করতে পারছি, অভিনয়ও করতে পারছি। আইরাকে ওখানে স্কুলে ভর্তি করিয়েছি। সব মিলিয়ে ভালো আছি।
এই ভালো থাকাকে একশতে কত দেবেন?
একশতে একশই দেবো। মানুষ তো জীবনে যা চায় সব পায় না। কিন্তু আমাদের ভালোর পাল্লাটা অনেক ভারী।
স্বামী-স্ত্রী, আইরা সবাই মিলে তো খুব ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
আমার আর আইরার একসাথে ঘুরে বেড়ানোর ইতিহাস আইরার ছোটবেলা থেকেই। কাজের সূত্র ধরে আইরাকে নিয়ে উগান্ডা, তানজানিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ অনেক দেশে গেছি। ইন্ডিয়াতে যাওয়ার পর সৃজিত যখন বিভিন্ন শুটিংয়ে যায় আমাদের সঙ্গে করে নিয়ে যায়। ফলে আমাদের আরও বেশি ঘোরা হচ্ছে।
মা-মেয়ের ভ্রমণ নিয়ে তো বইও লিখছেন।
আমার আর আইরার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটা সিরিজ বই লিখছি। সেটার নাম ‘আইরা আর মায়ের অভিযান’। সিরিজের প্রথম গল্প ‘তানজানিয়ার দ্বীপে’ এবারের বইমেলায় প্রকাশিত হবে। প্রকাশ করবে ‘লাইট অব হোপ’ নামে একটি সংস্থা। এটা আমার অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল। আমার আর আইরার তো অনেক মজার মজার অভিজ্ঞতা। মনে হতো সেটা যদি অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারতাম। যাতে তারাও সেম জার্নিটার ভেতর দিয়ে যেতে পারে। বইটা কথা বলার মতো করেই লিখেছি। গল্পে আমি আর আইরা দুটি চরিত্র। আমি শিওর যখন বইটা মেলায় প্রকাশিত হবে সব বাবা-মা এবং বাচ্চারা কানেক্ট করতে পারবে। প্রথম গল্পটা তানজানিয়ার একটা দ্বীপকে ঘিরে। আফ্রিকার যেসব দেশে আমরা ভ্রমণ করি বা আমার সৌভাগ্য হয়েছে কাজ করার, সেসব জায়গায় তো অনেকেই যেতে পারে না। এখান থেকে অন্তত জিওগ্রাফির একটা নলেজ বাচ্চাদের হবে। সেখানে নতুন নতুন কী জিনিস দেখলাম, কী করলাম। আমাদের মা-মেয়ের বন্ডিংও থাকবে লেখায়।
আপনারা তো মা-মেয়ে ছাপিয়ে বন্ধু হয়ে গেছেন অনেক বেশি।
আমরা তো এখন বন্ধুই। একসঙ্গে ভ্রমণ করলে আসলে আর মা-মেয়ে থাকে না, বন্ধুই হয়ে যায়। কারণ নতুন দেশে, নতুন জায়গায়, নতুন জিনিস যখন আবিষ্কার করছি, তখন দেখা যায় আমরা বন্ধুই হয়ে যাচ্ছি।
আইরা কার কাছে বেশি থাকে? আপনার কাছে নাকি তাহসানের সঙ্গে?
আইরা ছোটবেলা থেকে আমার কাছেই থেকেছে। আমরা যখন আলাদা হয়ে যাই, তখন আইরার বয়স মাত্র দুই বছর। ফলে তখন থেকেই আমার কাছে থেকেছে। এখনো আমার কাছেই থাকে। এখন তো সে ভারতে পড়াশোনা করছে। কিন্তু হ্যাঁ, ওর বাবা যখনই ফ্রি থাকে, আসে, নিয়ে যায়, থাকে। এবারও আমরা আসার পর আইরা কয়েকদিন তার বাবার কাছে গিয়ে থেকেছে। তাহসান শুটিংয়ের ফাঁকে যখনই সময় করতে পেরেছে এসেছে। যদি না থাকতে পারে অ্যাটলিস্ট ঘুরে এসেছে বা আমাদের বাসায় বসেই খেলাধুলা করেছে। প্ল্যাস তাদের তো নিয়মিত ভিডিও কলে কথা হয়ই।
সর্বশেষ তাহসানের সঙ্গে আপনার কী কথা হয়েছে?
সর্বশেষ কথা হয়েছে সম্ভবত পরশু দিন। আইরাকে ড্রপ করতে বাসায় এসেছিল। ও তো বাসায় আসে প্রায়। আইরাকে নিতে বা ড্রপ করতে। সেদিন রাতে আইরা তাহসানের সঙ্গে তার বাসায় ছিল। আমার একটু ঠাণ্ডা লেগেছিল। শরীর খারাপ। একা একা, আইরাকে খুব মিস করছিলাম। তখনই একটু কথা হয়েছিল। আমাদের তো প্রায়ই কথা হয়।
কী কথা হয়?
মূলত আইরাকে নিয়েই কথা হয়। কালকে কখন পিক করছ বা কখন ড্রপ করছ- এসব কথা।
আইরা কি মার সঙ্গে ঝগড়া করে?
হ্যাঁ। ভীষণ। আইরা আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। বন্ধুর সাথে ঝগড়াঝাটিও হয়। আইরা আমার মতো একটু বেশি ইমোশনাল। কোনো একটা কিছু ওকে করতে দেওয়া হচ্ছে না বা মানা করা হচ্ছে এটা নিয়ে ও খুব অল্পতেই মন খারাপ করে, কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। এসব ছোটখাটো বিষয় নিয়ে আমাদের খুটিনাটি ঝগড়াঝাটি সারাক্ষণ লেগেই থাকে। দুজনকেই অনেক নেগোসিয়েট করতে হয়। ও হয়তো বলল, এখন আমি এটা দেখব। আমি বললাম, না এখন তুমি খাবে, এরপর এক ঘণ্টা হোমওয়ার্ক। তারপর একঘণ্টা টাইম পাবে গেম খেলার জন্য।
গানের মিথিলার খবর কী?
(হা হা হা) গান তো কখনো প্রফেশনালি করিনি। এক সময় শখের বসেই গেয়েছি, লিখেছি। তবে আমার মনে হয় গান অনেক সাধনা ও চর্চার বিষয়। সেই সাধনাটা না থাকলে সেটা করা উচিত না।
শুরুর দিকে আপনার কিছু গান মানুষ ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। সেই জায়গা থেকে কেউ কেউ তো আপনার কাছে গানও আশা করে।
করে জানি। আমাকে অনেকেই বলে। তবে ব্যক্তিগত জায়গা থেকে মনে হয়, যে জিনিসটা আমি চর্চা করি না, যে জিনিসটা নিয়ে আমার সাধনা নেই, সেটা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা না করাই ভালো। শখের বসে টুকটাক হয়তো করতে পারি। কিছুদিন আগে নতুন একটা গানে কণ্ঠ দিয়েছি।
আপনার কণ্ঠে একটি গানের কিছু লাইন কি শুনতে পারি?
(হাসি) আমি তো কোনো প্রস্তুতি নিয়ে আসিনি। না গাইতে গাইতে নিজের গানগুলো আসলে ভুলে গেছি! আচ্ছা দু’লাইন গাই, ‘রোদেলা দুপুরে’ই গাই। এটা এক সময়ের খুব জনপ্রিয় গান। তের-চোদ্দ বছর আগের। বলা যায় আমার ছোটবেলায় লেখা-‘রোদেলা দুপুর ক্লান্ত শরীরে হেঁটে আসা বহুদূর, দুঃখকে ভুলে হাতে হাত ধরে ধরে হেঁটে আসা বহুদূর’। দু’জন মানুষ একসঙ্গে হেঁটে যাওয়ার গান। তখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি।
ফারুকী-তিশা, রাজ-শুভশ্রীকে নিয়ে সিনেমা বানাচ্ছেন। আপনাকে সৃজিতের সিনেমায় কবে দেখা যাবে?
আমার মনে হয় সেটা নির্মাতা বলতে পারবে। আমি বলতে পারব না।
কলকাতার কোনো সিনেমায়?
কলকাতায় সিনেমায় কাজের কথা হচ্ছে। আসলে মাত্রই তো গেলাম। তাও কোভিডের ভেতর। সব মিলে গেলে হয়তো কাজ করব।
আপনার জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন কোনটি?
সুখের দিন অনেক আছে। তবে আমার মনে হয় আইরা আমার জীবনে আসা- এর থেকে সুখের দিন তো আর হতে পারে না।
সবচেয়ে কষ্টের দিন।
মানুষের জীবনে যখন অপ্রত্যাশিতভাবে খারাপ কিছু হয়, সেটাই তো কষ্টের। প্রোফাইল হ্যাক করে আমার পার্সোনাল জীবন নিয়ে, আমার ছবি নিয়ে কিছুদিন আগে যে বিষয়টা হয়েছে। সব গণমাধ্যম ভেঙে পড়েছিল। সেটা অবশ্যই আমার জন্য খুব ভয়াবহ ছিল। আমরা মানুষকে না জেনে, মানুষের কয়েকটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নিয়ে, নিজেরা গল্প বানিয়ে, তার জীবনে ঢুকে যাই। এই প্র্যাকটিসটাই ভালো নয়। এটা আমাদের গণমাধ্যমেও হচ্ছে, আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও হচ্ছে।
নাসির-তামিমা-রাকিবের ঘটনা নিয়েও ট্রল হয়েছে। একজন সমাজকর্মী হিসেবে এগুলোকে কীভাবে দেখেন?
নাসির-তামিমা-রাকিব তাদের কাউকেই আমি পার্সোনালি চিনি না। তাদের গল্পগুলোও পড়ি না। আমি সাধারণত কোনো গসিপ থাকলে তা এড়িয়ে যাই। তবে আমার মনে হয় আমাদের সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে গণমাধ্যমও এখন মানুষের বেডরুমে ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা করছে। সেই নিউজটা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। এটা খুব বাজে চর্চা।
মানুষ কেন এমন করে?
তারাই হয়তো বলতে পারবে। সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে অনেক নোংরা নোংরা কথা বলে। এটা হয় প্রচণ্ড শিক্ষার অভাব, মানবিক মূল্যবোধের অভাবে। তাদের নিজেদের বলার কী যোগ্যতা আছে সেটা বোঝে না। সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে পাবলিক ফিগাররা মানুষের এত বেশি কাছে চলে গেছে যে মানুষ মনে করে কিছু একটা বলে দিতে পারলেই তার অ্যাচিভমেন্ট। এতে আমার কিছু যায় আসে না। কিন্ত খারাপ লাগে যখন বাইরে গেলে এসব নিয়ে প্রশ্ন শুনতে হয়। কলকাতায় গেলে অনেকেই প্রশ্ন করে বাংলাদেশের মানুষ এত আজেবাজে কথা কেনো বলে, ওদের মানসিকতা কেনো এত খারাপ! এগুলো শুনতে খারাপ লাগে।
আপনার কাছে বেঁচে থাকার সংজ্ঞা কী?
জীবনে যা আছে ওইটুকু নিয়েই সামনে এগিয়ে যাওয়া। থেমে না থাকা।
অফিস কীভাবে সামলান?
আমি ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালে শিশুদের নিয়ে কাজ করি। আমি তাদের আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের হেড। আফ্রিকাতে এখন আমার অনেক প্রজেক্ট। এক সময় সেসব জায়গায় আমাকে ছুটে যেতে হতো। এখন করোনার কারণে যেতে পারছি না। ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ আমার লম্বা সময় ধরে করা হবে। কলকাতায় গেলে সেখান থেকেই কাজ করি। ১৩ বছর ধরে ব্র্যাকের সঙ্গে আছি। এটাই আমার প্রধান পেশা।
শিশুদের নিয়ে কাজ করছেন। এখনকার শিশুরা কি ভালো আছে?
শিশুদের বিকাশে আসলে বাবা-মায়ের ভূমিকাটাই সবচেয়ে বেশি। বাবা-মার পরে আরও যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে- পরিবার, স্কুল, সামাজিক, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, সব কিছুই কিন্তু এটা শিশুর বিকাশে খুব গুরুত্বপূর্ণ রোল প্লে করে। তবে বাবা-মার ভূমিকা সবার আগে। সেক্ষেত্রে শিশুর সঙ্গে বাবা-মার সম্পর্কটা, বন্ধনটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাবা-মা সন্তানের রোল মডেল হয়। বাচ্চারা বাবা-মাকে দেখেই বড় হয়। এমন একটা পরিবেশের মধ্যে সন্তানকে বড় করতে হবে যেখানে নেগেটিভিটি কম। এখন তো চারপাশে খারাপের চর্চা হচ্ছে। শিশু নির্যাতন অনেক বেড়ে গেছে। এখনকার পৃথিবী আমাদের শিশুদের জন্য খুব একটা সুরক্ষিত না। সেজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। নিজের সন্তান না থাকলেও পৃথিবীর শিশুদের জন্য কিছু করার আছে।