বহুল আলোচিত ‘হাওয়া’ সিনেমা মুক্তির চতুর্থ সপ্তাহ শুরু হয়েছে। এখনো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন এর সংশ্লিষ্টরা। শুক্রবার (১৯ আগস্ট) খুলনার দর্শক মাতিয়েছেন ‘হাওয়া’র সদস্যরা।

সিনেমাটির প্রমোশনাল পার্টনার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘৩৫ এমএম মুভি ক্লাব’-এর উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নিয়েছেন ‘হাওয়া’র নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিনেমাটির অভিনেত্রী নাজিফা তুষি, অভিনেতা সুমন আনোয়ার, নাসির উদ্দিন খান, মাহমুদ আলম, রিজভী, গায়ক এরফান মৃধা শিবলু প্রমুখ।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত মঞ্চের সামনে ‘হাওয়া’ টিমকে দেখতে হাজির হন শত শত শিক্ষার্থী ও দর্শক। বেলা ১২টা ২০ মিনিটের দিকে যখন সুমন-তুষিদের গাড়ি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে, তখনই দর্শক উচ্চস্বরে গাইতে থাকে- ‘তুমি বন্ধু কালা পাখি, আমি যেন কী’।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শোকের মাস আগস্ট উপলক্ষে ১ মিনিট নীরবতা পালন করেন শিল্পী-কলাকুশলীরা। এরপর উপস্থিত বিভিন্ন দর্শকের প্রশ্নের উত্তর দেন তারা।

অভিনেত্রী নাজিফা তুষি বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে আপনাদের এতো সাড়া পেয়ে। আপনারাই সিনেমাটির প্রচার করেছিলেন। এখন সবাই হলমুখী হচ্ছে, এটা আপনাদেরই ভালোবাসায়। এই ভালোবাসা জারি থাকুক। সিনেমাটি আমরা ছড়িয়ে দিতে চাই মানুষের মধ্যে। তাই দেশের বিভিন্ন স্থানে ছুটে বেড়াচ্ছি।’

‘হাওয়া’র নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন বলেন, ‘সিনেমা যেখানে শেষ হয়, সেখানে আপনার চিন্তায়, মনোজগতে কোনো প্রশ্ন তৈরি হলে, সেটা আমাদের সার্থকতা। আমরা যখন স্ক্রিপ্ট ডেভোলপ করছিলাম, তখন থেকেই ইচ্ছা ছিল, আমরা আপনাদের মনোজগতের মধ্যে ঢুকতে চাই। চিন্তার মধ্যে ঢুকতে চাই। যেন আমার চিন্তা দিয়ে যেন ছবিটা শেষ না হয়। আমার চিন্তা শেষ হওয়ার পর যেন আপনাদের কিছু চিন্তা, ভাবনা থাকে।’

‘হাওয়া’ টিমকে দেখতে উচ্ছ্বসিত দর্শক

সুমন আরও বলেন, ‘এখানে নাচানাচি কিংবা ধুমধাম গান, এরকম কোনো উপাদান নেই। এরপরও সিনেমাটি গণমানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া আমাকে অবাক করেছে। মানুষের সাড়া আমাদেরকে উৎসাহ যুগিয়েছে।’

সুমন জানান, ‘হাওয়া’ নির্মিত হয়েছে খুলনার আঞ্চলিক ভাষায়। সে কারণেই এখানে এসেছেন তিনি। তার ভাষ্য, ‘হাওয়া গভীর সমুদ্রের গল্প। সেন্টমার্টিনে ছবির শুর্টিং হয়েছে। আমরা সেটিকে দুবলার চর মনে করে নিয়েছি। তাছাড়া চট্টগ্রামের ভাষা ব্যবহার করলে সাবটাইটেল ব্যবহার করতে হতো। খুলনার মানুষের আঞ্চলিক ভাষা সুন্দর। ভাষার মাধুর্য আছে। এ ভাষা গণমানুষের কাছে পৌঁছতে পারে। এটাই মূলত খুলনায় আসার উদ্দেশ্যে।’

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান শেষে কুয়েটে গিয়েছিলেন ‘হাওয়া’র সদস্যরা। কুয়েট ফিল্ম সোসাইটির আমন্ত্রণে সেখানে আরেকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই মাত্র ২৪টি হল নিয়ে মুক্তি পায় ‘হাওয়া’। চতুর্থ সপ্তাহে এসে সিনেমাটি এখন দেশের ৫৬টি হলে প্রদর্শিত হচ্ছে। এমন দর্শকপ্রিয়তা দেশের সিনেমার নিকট অতীতে দেখা যায়নি।

‘হাওয়া’ সিনেমার বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, নাসির উদ্দিন খান, সোহেল মণ্ডল, রিজভী রিজু, মাহমুদ হাসান ও বাবলু বোস। সিনেমার চিত্রগ্রহণ করেছেন কামরুল হাসান খসরু, সম্পাদনায় সজল অলক। আবহসংগীত করেছেন রাশিদ শরীফ শোয়েব এবং গানের সংগীতায়োজন করেছেন ইমন চৌধুরী।

মোহাম্মদ মিলন/কেআই